দিনাজপুরে হাটে-বাজারে উঠেছে গ্রীষ্মকালীন তালশাঁস
দিনাজপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

দিনাজপুরের বিভিন্ন হাট-বাজারে উঠেছে গ্রীষ্মকালীন তালশাঁস। মৌসুমি এই তালশাঁস বিক্রিতে ব্যস্ত ব্যবসায়ীরা। এটি গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী মৌসুমি ফল। এই ফলের স্বাদ ভিন্ন রকম। তাই এই সুস্বাদু তালশাঁস খেতে বাজারে ভিড় জমাচ্ছেন ক্রেতারা।
গত বছরের চেয়ে এই বছর তালশাঁসের দাম অনেকটা বেশি অভিযোগ ক্রেতাদের। আবার ফলন কম তাই দাম বেশি, বলছেন ব্যবসায়ীরা।
হিলি বাজারে গিয়ে চোখে পড়ে, তালশাঁস ব্যবসায়ীরা তালের খামাল দিয়ে বসে আছেন; আর তাল কেটে শাঁস বের করতে ব্যস্ত তারা। বছরের প্রথম মৌসুমী ফল, এ ফল খেতে তার চারপাশে ভিড় করছেন ক্রেতারা। প্রতিজন ১০ থেকে ১২টি করে অর্ডার দিচ্ছেন। এতে করে কাটতে হিমশিম খাচ্ছেন এসব তালশাঁস ব্যবসায়ীরা।
চলতি মৌসুমে অনাবৃষ্টির কারণে এবার তালের ফলন কম। গেলো বছর ৫ থেকে ৬ টাকা দরে প্রতিটি তাল ক্রয় করতো তাল ব্যবসায়ীরা। এইবার তা কিনতে হচ্ছে ১০ থেকে ১২ টাকা দরে। একটা তালের মধ্যে থাকে ২ থেকে ৩টি শাঁস। এখন প্রতিটি তালশাঁস বিক্রি করছেন ৮ টাকায়।
জ্যৈষ্ঠ মাসের শুরুতে উঠতে শুরু করে এই অঞ্চলে তালের শাঁস। এদিকে যতদিন যাচ্ছে, ততই তালের গাছ হারিয়ে যাচ্ছে। আর তাতে অনেকটাই দুর্লভ হয়ে যাচ্ছে তালের শাঁস। এক সময় গ্রামগঞ্জের মাঠে-ঘাটে আর রাস্তার পাশে দেখা যেত তালের গাছ। এখন আর তেমন চোখে পড়ে না। আগের দিনে মানুষ তালের শাঁস কিনে খেতো কম, কেননা হাতের নাগালেই পাওয়া যেত। এখন সেই তাল টাকার বিনিময়ে কিনে খেতে হচ্ছে।
কথা হয় তালশাঁস কিনতে আসা সোহেল রানার সঙ্গে। তিনি বলেন, তালের শাঁস স্বাদে ভরা। আমারসহ পরিবারের সবার পছন্দ, তাই তালশাঁস কিনতে আসছি। দাম অনেকটা বেশি, তাই পরিবারের জন্য ১০টির অর্ডার দিয়েছি।
আরেকজন ক্রেতা আনিছুর রহমান বলেন, অন্যান্য ফলের চেয়ে তালশাঁসের স্বাদ আলাদা। অন্য ফলের মাঝে এই স্বাদ খুঁজে পাই না। প্রতি বছর তাল উঠলে আমি প্রতিদিন ৫ থেকে ৭টা করে তালশাঁস খেয়ে থাকি। তবে এবার দামটা খুবই বেশি।
তাল ব্যবসায়ী আব্দুল রাজ্জাক রাইজিংবিডিকে বলেন, তাল নিয়ে আসলাম সান্তাহার থেকে। প্রতি বছর হিলির বিভিন্ন স্থানের তালগাছ থেকে তাল কিনতাম। এবার হিলির তেমন কোনো তালগাছে তাল ধরেনি। ফলে দূর থেকে ট্রাকে করে কিনে আনছি। গত বারের চেয়ে এবার দাম বেশি। এবার খরচ দিয়ে প্রতিটি তাল প্রায় ১২ টাকা করে কিনে আনছি। ১২ টাকা দিয়ে কিনে তা বিক্রি করেছি ১৬ থেকে ২৪ টাকায়। মানুষের অর্ডার অনুযায়ী তাল কাটতে হিমশিম খাচ্ছি। আল্লাহ দিলে প্রতিদিন ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা কামাই হচ্ছে।
মোসলেম/ফয়সাল