নাটোরে ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়ে ইমামকে বিদায়
নাটোর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
ইমাম মুনছুর রহমানকে সম্মান জানিয়ে ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়ে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়
মাওলানা মো. মুনছুর রহমান ৩৪ বছর বয়সে ১৯৮৩ সালে নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলায় জামে মসজিদের ইমামতির দায়িত্ব নেন। এরপর কেটে গেছে চার দশক। ৭৫ বছর বয়সে এসে আর ইমামতির দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না তিনি। প্রিয় ইমামের বিদায় স্মরণীয় করে রাখতে মুসল্লিরা দিয়েছেন সংবর্ধনা। মুনছুর রহমান ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।
শুক্রবার (৩১ মে) বাদ জুমা উপজেলার সদর ইউনিয়নের জিগরীর ক্ষিদ্রমালঞ্চি এলাকায় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ থেকে ইমামকে বিদায় জানানো হয়। এ সময় এলাকাবাসীসহ কয়েক শত মুসল্লি উপস্থিত ছিলেন। মাওলানা মো. মুনছুর রহমান উপজেলার একই ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামের মৃত খেদমত আলী প্রামাণিকের ছেলে।
১৯০১ সালে জিগরীর ক্ষিদ্রমালঞ্চি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ স্থাপিত হয়। এরপর ১৯৮৩ সাল থেকে মাওলানা মুনছুর রহমান ইমামতির দায়িত্ব পালন শুরু করেন। দীর্ঘ ৪১ বছর ইমামতির দায়িত্বের পর তিনি নিজে থেকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চান। এরপর এলাকাবাসী তাঁর সম্মানে তাকে বিদায় ও সংবর্ধনার আয়োজন করে। এ সময় তাঁর হাতে ক্রেস্ট ও উপহার সামগ্রী দেওয়া হয়। মুসল্লিরা কান্নাভেজা চোখে ইমামকে পৌঁছে দেন তাঁর বাড়িতে।
মসজিদ কমিটির সভাপতি আরশেদ আলী লালচান বলেন, ‘দীর্ঘ ৪১ বছর মাওলানা মুনসুর রহমান মসজিদে ইমামতির দায়িত্ব পালন করেছেন। এখন তিনি বার্ধক্যে পৌঁছেছেন। গ্রামবাসী তাঁর পরামর্শ নিয়ে কাজ করতেন। তিনি ছিলেন আমাদের অভিভাবকের মতো। আমরা এলাকাবাসী মিলে তাঁকে সম্মান জানাতে এ আয়োজন করি।’
তিনি বলেন, ইমাম হচ্ছেন সম্মানী ব্যক্তি। তার সম্মান ও মর্যাদা সবার উপরে। তাই এ আয়োজন করা হয়েছে। যাতে সবাই যেন উদ্বুদ্ধ হয়।
মাওলানা মুনসুর রহমান বলেন, ‘জীবনের দীর্ঘ সময় যাদের ইমামতি করেছি, আজ তাদের এমন আয়োজনে আমি মুগ্ধ।’ বাকি জীবনে সুস্থতার জন্য সবার কাছে দোয়া চান তিনি।
আরিফুল/বকুল