ঢাকা     শনিবার   ০৬ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২২ ১৪৩১

হোটেলে নিয়ে স্ত্রী-সন্তানকে গলাকেটে হত্যা, স্বামী আটক

বগুড়া প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৩৭, ২ জুন ২০২৪   আপডেট: ১৫:৪৬, ২ জুন ২০২৪
হোটেলে নিয়ে স্ত্রী-সন্তানকে গলাকেটে হত্যা, স্বামী আটক

বগুড়া শহরের বনানী এলাকার শুভেচ্ছা আবাসিক হোটেলে নিয়ে ১১ মাস বয়সী ছেলে আবদুল্লাহ হেল রাফি ও স্ত্রী আশা মনিকে (২২) গলাকেটে হত্যার অভিযোগে স্বামী আজিজুল হককে (২৫) আটক করেছে পুলিশ।

রোববার (২ জুন) বেলা ১২টার দিকে মা-ছেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এর আগে, গতকাল রাতের কোনো এক সময় তাদের হত্যা করা হয়। তার আগে, সন্ধ্যা ৭টার দিকে তমা ও মিরাজ পরিচয়ে ওই হোটেলে উঠেন আশা মনি-আজিজুল। বাড়ি উল্লেখ করা হয় রংপুরের পীরগঞ্জে।

আজিজুল হকের বাড়ি বগুড়ার ধুনট উপজেলায়। আশা মনির বাবার বাড়ি নারুলী এলাকায়। পুলিশ জানায়, হত্যার পর শিশু আবদুল্লাহ হেল রাফির শরীর থেকে মাথা আলাদা করে করতোয়া নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে।

নিহত আশা মনির স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শনিবার সন্ধ্যায় আজিজুল হক তার স্ত্রী আশা মনি ও সন্তান আব্দুল্লাহেল রাফিকে নিয়ে মার্কেটে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর থেকে তাদের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। এ বিষয়ে মুঠোফোনে আজিজুলের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মার্কেট শেষে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার আগে স্ত্রী আশা মনি ও সন্তানকে অটোরিকশায় বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছেন।

রোববার সকালে আজিজুল শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে তার স্ত্রী ও সন্তান কোথায় জানতে চান? এ সময় তিনি শ্বশুরবাড়ির লোকদের বলেন, তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আশা মনির বাবা এবং চাচারা তখন বলেন, তাহলে তো থানায় জিডি ও মাইকিং করতে হবে।

আরও পড়ুন: বগুড়ায় আবাসিক হোটেলে মা-ছেলের মরদেহ

সকাল ৯টা থেকে বগুড়া শহরের বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয় মাইকিং। পরে আজিজুল হককে সঙ্গে নিয়ে থানায় জিডি করার জন্য যেতে চান আশা মনির বাবা আসাদুল ইসলাম। কিন্তু আজিজুল জিডি করতে রাজি হচ্ছিলেন না। একপর্যায়ে কাজের অজুহাতে চলে আসেন।

আশা মনির চাচা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সকাল ৯টা থেকে মাইকিং শুরু করি। পরে জিডি করতে যেতে চাইলে আজিজুল তালবাহানা করতে থাকে। একপর্যায়ে বেলা ১১টার দিকে আশা মনি ও তার সন্তানকে হত্যা করা হয়েছে বলে খবর পাই।

আটকের পর আজিজুল পুলিশকে জানিয়েছেন, শনিবার স্ত্রী আশা মনি ও সন্তানকে রিকশায় বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়ার পর আজিজুল ওই হোটেলে উঠেন। পরে স্ত্রী-সন্তানকে মুঠোফোনে হোটেল ডেকে নেন। হোটেলে যাওয়ার পরপরই তাদের গলাকেটে হত্যা করা হয়। এরপর সন্তানের শরীর থেকে মাথা আলাদা করে একটি ব্যাগে ভরে হোটেল থেকে বের হয়ে পাশের করতোয়া নদীতে ফেলে দেন।

বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরাফত ইসলাম বলেন, আজিজুল একজন সেনা সদস্য। শনিবার রাতের কোনো এক সময় হোটেলের একটি কক্ষে স্ত্রী ও সন্তানকে হত্যা করের তিনি। পরে সন্তানের মাথা একটি ব্যাগে ভরে হোটেল থেকে বের হয়ে করতোয়া নদীতে ফেলে দেন। পুলিশ সেই মাথার সন্ধান করছে। এ ঘটনায় মামলা হবে। সেই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হবে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহের কারণে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

এনাম/কেআই

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়