ঢাকা     সোমবার   ০১ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৭ ১৪৩১

মৃত ভেবে কবর দেওয়ার আগমুহূর্তে কেঁদে উঠলো নবজাতক

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৫৮, ৩ জুন ২০২৪  
মৃত ভেবে কবর দেওয়ার আগমুহূর্তে কেঁদে উঠলো নবজাতক

গর্ভধারণের মাত্র ৫ মাসেই অপরিণত অবস্থায় হাসপাতালে জন্মগ্রহণ করে এক শিশু। শিশুটিকে মৃত ভেবে কবর দিতে নিয়ে গেলে কবরে শোয়ানোর আগমুহূর্তে কেঁদে উঠে এই নবজাতক। পরে এই নবজাতককে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। 

গত শনিবার (১ জুন) গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার মিঠানালা ইউনিয়নে।

জানা যায়, মীরসরাই উপজেলার মিঠানালা ইউনিয়নের পূর্ব মিঠানালা গ্রামের মো. ইউনুস আলীর স্ত্রী জেসমিন আক্তার ৫ মাস ১৯ দিনের গর্ভবতী ছিলেন। শনিবার বিকেলের দিকে তিনি পেটে ব্যথা অনুভব করলে এবং তার রক্তক্ষরণ হলে তাকে মিঠাছরা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এই সময় হাসপাতালের দায়িত্বরত গাইনি চিকিৎসক শারমীন আয়েশা আল্ট্রাসনোগ্রাফি করে জানান গর্ভের শিশু মারা গেছে। পরে রাতে স্বাভাবিকভাবে শিশুটি ভূমিষ্ঠ হয়। 

প্রসূতি জেসমিনের স্বামী ইউনুস আলী অভিযোগ করেন, তার স্ত্রী সন্তান প্রসব করার পর সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক শিশুটি মৃত বলে একটি কার্টনে করে বাড়ি নিয়ে কবর দেওয়ার পরামর্শ দেন। রাতেই বাড়িতে নিয়ে জানাজা শেষে কবর দেওয়ার জন্য কার্টন খুলতেই নবজাতকটি কেঁদে উঠে। পরে দ্রুত আবার একই হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নবজাতককে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। পরে রাত দেড়টার দিকে নবজাতককে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

নবজাতকের বাবা অভিযোগ করে বলেন, আমার স্ত্রী সন্তান প্রসব করার পর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক আমার বাচ্চাকে কোনো পরীক্ষা না করেই মৃত বলে ঘোষণা দেন। তারা জীবিত বাচ্চাকে মৃত বলে কার্টনে করে নিয়ে যেতে বলেন। 

তবে অপরিণত জন্ম নেওয়া শিশুটির শারীরিক অবস্থা ভালো নয় জানান নবজাতকের বাবা। 

এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে মিঠাছরা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক মাসুদ রানা বলেন, রোগীর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে শনিবার রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে নরমাল ডেলিভারি হয়ে যায়। ডেলিভারি হওয়ার পর ১ মিনিট বাচ্চার নড়াচড়া ছিল। ১৫ মিনিট শিশুটিকে অবজারবেশনে রাখা হয়। এরপর রোগীর স্বজনরা তাকে দেখতে আসেন। এক পর্যায়ে তারা হাসপাতালের কাউকে না জানিয়েই হাসপাতাল থেকে নবজাতককে বাড়ি নিয়ে যান। 

পরিচালক বলেন, নবজাতক মারা গেছে, এমনটা স্বজনদের বলা হয়নি। তারা বাড়ি নিয়ে কেনো কবর দিচ্ছেন সেটাও আমরা জানি না। যদি মারা যেতো তাহলে আমরা ডেথ সার্টিফিকেট দিতাম, রেজিস্ট্রারে এন্ট্রি করতাম। কিন্তু এক্ষেত্রে কিছুই হয়নি। নবজাতকটিকে রাতে পুনরায় হাসপাতালে আনলে আমরা তাদের চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে পরামর্শ দিয়েছি।

এ বিষয়ে মীরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মিনহাজ উদ্দিন বলেন, ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

রেজাউল/টিপু

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়