যশোরে পুলিশ হেফাজতে নারীর মৃত্যু, তদন্ত কমিটি গঠন
নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর || রাইজিংবিডি.কম
যশোরের অভয়নগরে পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় আফরোজা বেগম (৪০) নামের এক নারীর মৃত্যুর ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সোমবার (৩ জুন) জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) নূরে আলম সিদ্দিকীর নেতৃত্বে এই কমিটি করা হয়েছে। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অভয়নগর সার্কেল) জাহিদুল ইসলাম ও কোর্ট ইন্সপেক্টর রোকসানা খাতুন।
স্থানীয় সূত্র জানা গেছে, গত শনিবার দিবাগত রাতে অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া নর্থবেঙ্গল রোড এলাকার জলিল মোল্যার স্ত্রী আফরোজা বেগমকে মাদকসহ আটক করে পুলিশ। পরদিন রোববার সকালে তিনি গুরুত্ব অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান আফরোজা।
আফরোজার স্বজনরা দাবি করেন, পুলিশের নির্যাতনে আফরোজার মৃত্যু হয়েছে। এরপর পুলিশের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
মারা যাওয়া আফরোজার ছেলে মুন্না জানান, স্থানীয় একটি মহলের ইন্ধনে অভয়নগর থানার এসআই শিলন ও শামছু গত শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে তাদের বাড়িতে যান। এরপর নিজেদের কাছে থাকা ইয়াবা দিয়ে তার মাকে গ্রেপ্তার করেন। এসময় ওই দুই কর্মকর্তাসহ আরো কয়েকজন পুলিশ সদস্য তার মাকে মারধর করেন। রাত ১টার দিকে মাকে তারা থানায় নিয়ে যান। পরদিন সকালে থানায় গিয়ে দেখতে পারেন, তার মা খুব অসুস্থ। পুলিশকে অনুরোধ করলে তার মাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা কয়েকটি টেস্ট দিলেও পুলিশ সদস্যরা সেগুলো করতে না দিয়ে ফের থানায় নিয়ে যায়। এরপর আবারও অসুস্থ হয়ে পড়লে তার যশোর আসার পথেই তার মা মারা যান।
তদন্ত কমিটির সদস্য অভয়নগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘যেহেতু, পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে, সে কারণে পুলিশ সুপারের নির্দেশে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই নারীর মুত্যুর ঘটনায় পুলিশের কোনো গাফিলতি ছিল কিনা, তা এই কমিটি তদন্ত করে দেখবে। পুলিশের কোনো সদস্যের গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেলে পরবর্তীতে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এদিকে, আফরোজা বেগমের মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল রোববার রাতেই স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। অভয়নগরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে মরদেহের দাফন সম্পন্ন হয়।
রিটন/মাসুদ