শ্রমিক লীগ নেতার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে টোল আদায়ের অভিযোগ
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

জাহাঙ্গীর আলম
লক্ষ্মীপুরের একটি বাজারের ইজারাদারের লোকজনকে হটিয়ে অবৈধভাবে টোল আদায়ের অভিযোগ উঠেছে চন্দ্রগঞ্জ থানা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে। গত দুই মাস ধরে এই নেতা টোল আদায় করলেও প্রতিকার পাচ্ছেন না বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন ইজারাদারের বড় ভাই কাজী মিজানুর রহমান ও কাজী লিটন।
মিজানুর রহমান ও লিটন জানান, তাদের ছোট ভাই চন্দ্রগঞ্জ থানা সেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক কাজী বাবলু ১৪৩১ বাংলা সনের চন্দ্রগঞ্জ বাজারের ইজরায় অংশ নেন। তিনি ২ কোটি ৫ লাখ ৬০ হাজার টাকায় সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে বাজারটির ইজারা পান। বাজারের টোল আদায় করতে গেলে জাহাঙ্গীর আলম তার অনুগতদের নিয়ে ইজারাদারের লোকজনদের মারধর করে তাড়িয়ে দেন। পরে তারা নিজেরা অবৈধভাবে টোল আদায় শুরু করেন।
তারা আরও জানান, বাজারের ইজারা না পেয়ে জাহাঙ্গীর আলমরা তাদের ভাই কাজী বাবলুকে ছাত্রলীগ নেতা সজিব হত্যা মামলার জড়িয়ে দেয়। বর্তমানে কাজী বাবুল গ্রেপ্তার এড়াতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। আর এই সুযোগে তার ইজারা নেওয়া বাজারের টোল অবৈধভাবে আদায় করছেন জাহাঙ্গীর আলম। পাশাপাশি বাজারের মেইন রোডে অবস্থিত কাজী বাবলুর মালিকানাধীন কাজী ট্রেডার্স এন্ড দরজা গ্যালারি নামক দোকানের তালা ভেঙে প্রায় ৩০ লাখ টাকার মালামাল ও চন্দ্রগঞ্জ নিউ মার্কেটের ওপরে অবস্থিত ভাড়া বাসার প্রায় ৫ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে।
মিজানুর রহমান ও লিটন জানান, টোল আদায়ের বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানা পুলিশকে অবহিত করা হলেও প্রতিকার পাচ্ছেন না তারা।
নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন চন্দ্রগঞ্জ থানা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম। তিনি জানান, বাজার থেকে তিনি টোল আদায় করছেন এমন প্রমাণ কেউ দিতে পারবে না। তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হচ্ছে।
চন্দ্রগঞ্জ উত্তর বাজারের টোল আদায়ে নিয়োজিত আফাজ উদ্দিন, বাবু ও জয়নাল আবদীনের ভাষ্য, জাহাঙ্গীর আলমের নির্দেশেই তারা বাজারের টোল আদায় করছেন। জাহাঙ্গীর আলম তাদের বেতন দিচ্ছেন। টাকা জমা দেওয়ার রশিদ তাদের কাছে রয়েছে।
চন্দ্রগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আব্দুল কুদ্দুছ জানান, বাজারের টোল জাহাঙ্গীর আলম আদায় করছেন বলে জেনেছেন। কীভাবে আদায় করছেন তা তিনি জানেন না। কাজী বাবলুর দোকান ও বাসা লুটের কথা তিনি পরবর্তীতে জেনেছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, ইজারাদারের লোকজনের বাইরে অন্য কেউ টোল আদায় করছেন বলে তার জানা নেই। লিখিত অভিযোগ পেলে তিনি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন।
চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদুল হক জানান, বাজারের ইজারা কে তুলে নিচ্ছেন তা তার জানা নেই। এটা দেখার দায়িত্ব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার। কাজী বাবলুর দোকান চুরির বিষয়ে তার ম্যানেজার লক্ষণ চন্দ্রকুরী ২ মে থানায় একটি সাধারণ ডায়রি (জিডি) করেছেন। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে। চোরাই মালামাল উদ্ধারে চেষ্টা করা হচ্ছে।
জাহাঙ্গীর/মাসুদ