ঢাকা     সোমবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৭ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

সুনামগঞ্জে সুরমার পানিতে তলিয়েছে রাস্তাঘাট

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৫৪, ৪ জুন ২০২৪  
সুনামগঞ্জে সুরমার পানিতে তলিয়েছে রাস্তাঘাট

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বিশেষ করে জেলার ছাতক উপজেলায় সুরমাসহ কয়েকটি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ডুবে গেছে গ্রামীণ সড়কগুলো। পাশাপাশি বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার শক্তিয়ারখলা এলাকার সুনামগঞ্জ-তাহিরপুর সড়ক পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হওয়ায় ভোগান্তি পোহাচ্ছেন সেখানকার বাসিন্দারা।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, মঙ্গলবার (৪ জুন) দুপুর ৩টার দিকে সুরমা নদী ছাতক উপজেলা পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। একই সময়ে এই নদীর পানি সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ষোলঘর পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৬ সেন্টিমিটার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। 

আরো পড়ুন:

নদ-নদীর পানি সরাসরি হাওরে প্রবেশ করে সুনামগঞ্জ অভ্যন্তরের নিম্নাঞ্চল প্রায় জলমগ্ন হয়ে গেছে। গত এক সপ্তাহ ধরে সুনামগঞ্জের নদ-নদীতে পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিপাতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। সুরমা, কুশিয়ারা, বৌলাই, রক্তি ও যাদুকাটা নদীর পানি বেড়ে জেলার হাওরগুলো ভরে উঠতে দেখে এখন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন সদর উপজেলা, ছাতক, দোয়ারাবাজার, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা। তাদের শঙ্কা, এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বাসিন্দা হাফিজ লুকমান আহমেদ বলেন, পাহাড়ি ঢল নামলেই সড়ক ডুবে যায়। মহাবিপদে পড়তে হয় তাহিরপুরের সবাইকে। এটা আমাদের একমাত্র সড়ক। এই সড়ক ছাড়া সুনামগঞ্জ শহরে যাওয়ার আর পথ নেই।

ছাতক উপজেলার হরিপুর গ্রামের কৃষক জয়নাল আবেদীন বলেন, ‌‘আমাদের জন্য বারো মাসই বিপদ। সারা বছর একটার পরে একটা বিপদ লেগেই থাকে। একবার চিন্তা করতে হয় ধান নিয়া, আরেকবার ঝড়-তুফানের সময় ঘর নিয়া চিন্তা করতে হয়। এখন চিন্তায় আছি, পুকুরের মাছ নিয়া। আমাদের চিন্তার শেষ নাই। প্রতি রাতেই পুকুর পাহারা দিতে হয়। যদি, পানি বাড়ে তাহলে আমার পুকুরের সব মাছ ভাইসা যাবে। আল্লাহ যদি বিপদ থেকে মুক্তি দিলায় তাইলেই শুক্রিয়া বাবা।’

এদিকে, পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলায় চলাচলের রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ৪ ইউনিয়নের যোগাযোগ ব্যবস্থা। বন্ধ রয়েছে ছোট-বড় সব ধরনের পরিবহন চলাচল। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলা সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ এলাকার রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় তার সামনে একটি বেড়িবাঁধ দেওয়া হয়। পাহাড়ি ঢলের আঘাতে প্রথমে বেড়িবাঁধটি ভেঙে যায়। গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটিও ধীরে ধীরে ভেঙে যায়। ফলে এই রাস্তাটি পরিবহন চলাচলের জন্য একেবারে অনুপযোগী হয়ে উঠেছে। উপজেলা সদরের সঙ্গে সুরমা, লক্ষিপুর, বোগলাবাজার ইউনিয়নের মানুষদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে জেলার নদ-নদীর পানি বাড়ছে। এর ফলে এই জেলায় স্বল্প মেয়াদী বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।

মনোয়ার/মাসুদ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়