ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ০৪ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২০ ১৪৩১

লিবিয়ায় অপহরণের শিকার নাটোরের ৪ যুবক

নাটোর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:২৬, ৭ জুন ২০২৪   আপডেট: ১৭:৪৩, ৭ জুন ২০২৪
লিবিয়ায় অপহরণের শিকার নাটোরের ৪ যুবক

নাজিম, সাগর, সোহান ও বিদ্যুৎ

লিবিয়ায় নাটোরের গুরুদাসপুরের ৪ জন প্রবাসী যুবককে জিম্মি করে পরিবারের কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছে।

সংসারে স্বচ্ছলতা ফেরাতে প্রায় দুই বছর যাবৎ লিবিয়ায় বিভিন্ন কাজে শ্রমিক হিসেবে নিয়োজিত আছেন ওই চার যুবক। নিজেদের শেষ সম্বল জমি, গরু-ছাগল বিক্রি করে এমনকি বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে লিবিয়ায় পাঠিয়েছে তাদের পরিবার।

জিম্মি ৪ যুবক হলেন- শাজাহান প্রামাণিকের ছেলে সোহান প্রামাণিক (২০), তয়জাল শেখের ছেলে সাগর হোসেন (২৪), মৃত শুকুর আলীর ছেলে নাজিম আলী (৩২) এবং ইনামুল ইসলামের ছেলে বিদ্যুৎ হোসেন (২৬)।

দুই বছর যেতে না যেতেই যেন সব স্বপ্ন ভেঙে গেল। গত ৬ দিন আগে লিবিয়ায় অপহরণের শিকার হন ওই চার যুবক। জিম্মি যুবকদের শারীরিক নির্যাতনের ভিডিও পাঠানো হচ্ছে পরিবারের কাছে। মুক্তিপণের টাকা না দিলে তাদের হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়েছে। জিম্মি হওয়া যুবকদের বাড়িতে চলছে স্বজনদের আহাজারি।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, দুই বছর আগে নিজ দেশ ছেড়ে লিবিয়ায় পাড়ি দেন তারা। প্রবাসে গিয়ে তারা শ্রমিকের কাজ শুরু করেন। প্রতিমাসে ১৫/২০ হাজার টাকা দেশে পরিবারকে পাঠান। কিন্তু গত ২ জুন লিবিয়া থেকে চার প্রবাসীর পরিবারের কাছে ইমো নম্বরে কল আসে। রিসিভ করতেই বাংলা ভাষায় চার যুবককে অপহরণের কথা জানিয়ে ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। এ মুক্তিপণ না দেওয়া হলে চারজনকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। জিম্মিদের শারীরিক নির্যাতনের ভিডিও পরিবারের ইমো নম্বরে পাঠিয়েছে অপহরণকারীরা। টাকা দিতে না পারলে নির্যাতনের মাত্রা প্রতিদিন বাড়তে থাকবে বলে জানিয়েছে তারা।

জিম্মি হওয়ার কথা স্বীকার করে সোহানের বাবা শাজাহান প্রামাণিক বলেন, কয়েকদিন আগে আমার ইমো নম্বরে লিবিয়া থেকে কল আসে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে সোহান বলে, আমাকে অপহরণ করে নিয়ে আসছে। ১০ লাখ টাকা দিতে হবে, না দিলে মেরে ফেলবে আমাকে। সোহানকে একটি কক্ষে বেঁধে রেখে মারধর করে ভিডিও পাঠায় আমাদের কাছে। ৪ লাখ টাকা খরচ করে লিবিয়ায় পাঠিয়েছিলাম। এখনও সেই ঋণ শোধ করতে পারিনি। মুক্তিপণের টাকা কোথায় থেকে দেব।

জিম্মি আরেক যুবক নাজিমের স্ত্রী নাদিরা বেগম বলেন, সংসারে স্বচ্ছলতা ফেরানোর জন্য স্বামীকে ৪/৫ লাখ টাকা ঋণ করে লিবিয়ায় পাঠিয়েছি। সেই ঋণের টাকাই শোধ করতে পারিনি। এখন কি করে মুক্তিপণের এত টাকা জোগাড় করবো।

বিয়াঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান সুজা বলেন, লিবিয়ায় আমার গ্রামের চার যুবককে অপহরণ করা হয়েছে বলে জেনেছি। যুবকরা যেন সুস্থ অবস্থায় দেশে ফিরতে পারেন সেজন্য সরকারের সহযোগিতা দরকার।

গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. উজ্জ্বল হোসেন বলেন, লিবিয়ায় অপহরণের শিকার চার যুবকের কথা শুনে আমরা তাদের বাড়িতে গিয়েছি। বাড়িতে স্বজনরা আহাজারি করছেন। আমরা বিষয়টি আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।

আরিফুল/ফয়সাল

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়