ঢাকা     রোববার   ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  ভাদ্র ২৪ ১৪৩১

রেমালের তাণ্ডব

ঐতিহ্যবাহী মাদ্রাসাটির ক্লাস চলছে খোলা আকাশের নিচে

পিরোজপুর সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:২৬, ৮ জুন ২০২৪   আপডেট: ১০:৪২, ৮ জুন ২০২৪
ঐতিহ্যবাহী মাদ্রাসাটির ক্লাস চলছে খোলা আকাশের নিচে

ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে বিধ্বস্ত হয়েছে পিরোজপুরের উপকূলীয় উপজেলা কাউখালীর শিয়ালকাঠী ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী জোলাগাতী ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসার টিনসেড ভবন। তাই মাদ্রাসার লেখাপড়ার কার্যক্রম এখন চালিয়ে নিতে হচ্ছে খোলা আকাশের নিচে।

মাদ্রাসার ওই ভবনটিতে গাছ পড়ে ৬টি শ্রেণিকক্ষ, অধ্যক্ষর কক্ষ, একটি কাঠের ঘরের শ্রেণিকক্ষ, কম্পিউটার কক্ষের সকল আসবাবপত্র বিধ্বস্ত হয়েছে। 

১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসাটিতে নূরানী বা শিশু শ্রেণি থেকে ফাজিল (ডিগ্রি) পর্যন্ত ক্লাস রয়েছে। পার্শ্ববর্তী উপজেলা ভান্ডারিয়া, রাজাপুরসহ শিয়ালকাটি ইউনিয়নের ৯টি গ্রামের ৬০০ ছাত্র-ছাত্রী এখানে পড়াশোনা করছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাদ্রাসায় বহু পুরানো একটি লম্বা  টিনের ঘর, ২ রুম বিশিষ্ট একটি পাকা ঘর, ৫ কক্ষ বিশিষ্ট একটি বহুতল ভবনের কাজ চলছিলো।কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ে কারণে এসব ঘরের টিনের ছাউনি উড়ে গেছে। টিনসেট লম্বা যে শ্রেণিকক্ষটিতে নিয়মিত ক্লাস হতো সেটি গাছ পড়ে সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে মাদ্রাসাটিতে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

মাদ্রাসার ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসা আক্তার বললেন, ঘূর্ণিঝড় আমাদের মাদ্রাসা উড়িয়ে নিয়ে গেছে। সামনে আমাদের পরীক্ষা। ক্লাস না করলে আমরা পিছিয়ে পড়বো। তাই রোদের মধ্যে খোলা আকাশের নিচে আমাদের ক্লাস করানো হচ্ছে। অতিদ্রুত আমরা মাদ্রাসার ভবন চাই।

মো. তানভীর নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করতে অসুবিধা হচ্ছে। রোদ আর গরমে বসে থাকা যায় না। এ বিষয়ে এমপি মহোদয়ের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করছি।

এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক মো. আবুল বাশার বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে পুরো মাদ্রাসাটি লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। সামনে পরীক্ষা। তাই এখন শিক্ষার্থীদের খোলা আকাশের নিচে লেখাপড়া করতে হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের কোনো সিগনাল পেলে গ্রামবাসী গবাদিপশু নিয়ে মাদ্রাসার পাকা বিল্ডিং এসে আশ্রয় নেয়। তাই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করছি এই মাদ্রাসায় একটি সাইক্লোন সেন্টার নির্মাণ করা হোক।

শিয়ালকাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী সিদ্দিকুর রহমান বলেন, এটা এই অঞ্চলের পুরাতন ও ঐতিহ্যবাহী মাদ্রাসা। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করছি বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখার জন্য।

মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. আব্দুর রহিম বলেন, শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ায় যেন পিছিয়ে না পড়ে তাই বাধ্য হয়ে খোলা আকাশের নিচে, ভেঙে পড়া জরাজীর্ণ ভবনে, মসজিদের বারান্দায় ও এতিমখানায় ক্লাস নিতে হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে সহযোগিতা চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। যেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ভালোভাবে পাঠদানে অংশ নিতে পারে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সজল মোল্লা বলেন, শিক্ষা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। ক্ষতিগ্রস্ত মাদ্রাসটি পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিষয়টি দেখা হবে।

তাওহিদুল/টিপু


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়