ঢাকা     রোববার   ১৭ নভেম্বর ২০২৪ ||  অগ্রহায়ণ ৩ ১৪৩১

আটঘরিয়ার ওসিকে অপসারণের দাবিতে হরতাল ঘোষণা

পাবনা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৫৩, ৯ জুন ২০২৪   আপডেট: ১৬:৫৪, ৯ জুন ২০২৪
আটঘরিয়ার ওসিকে অপসারণের দাবিতে হরতাল ঘোষণা

ওসির অপসারণ চেয়ে রোববার আটঘরিয়ায় মিছিল করে উপজেলা আওয়ামী লীগ

পাবনার আটঘরিয়া উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান তানভীর ইসলামের বিরুদ্ধে মামলার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। তারা নানা অভিযোগ তুলে আটঘরিয়া থানার ওসি হাদিউল ইসলামকে অপসারণের দাবি জানিয়ে আগামী বুধবার (১২ জুন) বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত হরতাল ঘোষণা করেন।

রোববার (৯ জুন) সকাল ১১টার দিকে আটঘরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন নেতাকর্মীরা। মিছিলটি আটঘরিয়া বাজার হয়ে থানার সামনে দিয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার বাজার মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় টায়ার জ্বালিয়ে পাবনা-চাটমোহর সড়ক অবরোধ করেন নেতাকর্মীরা। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা বক্তব্য রাখেন।

সমাবেশে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌরসভার মেয়র শহীদুল ইসলাম রতন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও দেবোত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাইমিন হোসেন চঞ্চল ও নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান তানভীর ইসলাম বক্তব্য দেন।

আরো পড়ুন:

আরও পড়ুন: পাবনায় বিজয়ী প্রার্থীর ৫ সমর্থককে কুপিয়ে জখম

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহীদুল ইসলাম রতন বলেন, ‘আটঘরিয়ার থানার ওসি হাদিউল ইসলাম সন্ত্রাসীদের সঙ্গে ওঠাবসা করেন। তার প্রত্যক্ষ মদদে কিছু সন্ত্রাসী আটঘরিয়ায় যা ইচ্ছে তাই করছে। উনার পছন্দ না হলে উনি কোনো মামলা নিতে চান না। ওসির সঙ্গেই সন্ত্রাসীরা অস্ত্র নিয়ে ঘোরে। তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেন না তিনি। এই ওসিকে আটঘরিয়ার মানুষ চায় না। তার অপসারণের দাবিতে আগামী বুধবার আটঘরিয়ায় দুপুর ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ৬ ঘণ্টা হরতাল পালনের ঘোষণা দিচ্ছি।’

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাইমিন হোসেন চঞ্চল বলেন, ‘হাদিউল ইসলাম ওসি হিসেবে যোগদানের পর থেকেই আটঘরিয়ায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভাঙচুর ও নেতাকর্মীদের কুপিয়ে হত্যা চেষ্টার আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না তিনি। সন্ত্রাসীদের পক্ষ নিয়ে নিরীহ নেতাকর্মীদের হয়রানি করছেন। আমার উপজেলা চেয়ারম্যানের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও ওসি হাদিউল ইসলামের অপসারণ চাই।’

নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান তানভীর ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচনের দিন আমি বিভিন্ন কেন্দ্র নিয়েই ব্যস্ত ছিলাম। কিন্তু আমাকে নির্বাচনের দিন প্রতিপক্ষের অফিস ভাঙচুরের আসামি করা হলো, তাও নির্বাচন পার হয়ে যাওয়ার ১০ দিন পর। আটঘরিয়ার চিহ্নিত সন্ত্রাসী জুয়েলের নেতৃত্বে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভাঙচুর এবং নেতাকর্মীদের কুপিয়ে জখম করা হলো, তারা এখনো হাসপাতালে ভর্তি। সেই জুয়েলের নামে যখন মামলা দেওয়া হলো তাকে গ্রেপ্তার না করে সেই অভিযুক্ত আসামি জুয়েলের অভিযোগের ভিত্তিতে আমার নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হলো। আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভাঙচুর ও নেতাকর্মীদের কুপিয়ে হত্যা চেষ্টার মামলাকে প্রভাবিত করতেই আমার নামে এই মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। তিনি একটি পক্ষের হয়ে কাজ করছেন।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আটঘরিয়ার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাদিউল ইসলাম বলেন, ‘আমার অপসারণের বিষয়টি তাদের রাজনৈতিক বিষয় হতে পারে। কেন তারা আমার অপসারণ চাচ্ছেন তার সুস্পষ্ট কারণ যদি উল্লেখ করতে পারেন, তাহলে আমি আপনাদের সেই বিষয়ে বলতে পারবো। আমি চেইন অফ কমান্ডে কাজ করি। তাই আমি বিশ্বাস করি- আমি যে কাজগুলো করেছি তার যথাযথ আইন দিকগুলো মেনেই করেছি। আমি কারো প্রভাবে প্রভাবিত নয়, আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এবং আইন যেভাবে বলে সেইভাবেই কাজ করি।’

প্রসঙ্গত, গত ৩ জুন পাবনার আটঘরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের হামলায় বিজয়ী চেয়ারম্যান তানভীর ইসলামের ৫ সমর্থক আহত হন বরে অভিযোগ ওঠে। সেসময় উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের আসবাবপত্র ও ৩টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় পরাজিত প্রার্থীর সমর্থক জুয়েলসহ কয়েকজনের নামে মামলা দায়ের হয়। মামলা দায়ের পর শনিবার (৮ জুন) প্রধান অভিযুক্ত জুয়েলের দেওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান তানভীর ইসলামসহ কয়েকজনের নামে নির্বাচনের দিন জুয়েলের কার্যালয় ভাঙচুরের মামলা দায়ের হয়।

শাহীন/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়