ঢাকা     শনিবার   ০৬ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২২ ১৪৩১

১২০০ কেজির রাজা বাহাদুরের দাম ১৪ লাখ টাকা

শেরপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:২৪, ১০ জুন ২০২৪   আপডেট: ২১:০১, ১০ জুন ২০২৪
১২০০ কেজির রাজা বাহাদুরের দাম ১৪ লাখ টাকা

রাজা বাহাদুরের দেখভাল করছেন শফিকুল ইসলামের ভাবী মোর্শেদা বেগম

এক সপ্তাহ পরই পবিত্র ঈদ উল আজহা। শেরপুর জেলার সবচেয়ে বড় গরু হিসেবে এরইমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে ‘রাজা বাহাদুরের’ নাম। কাঁচা ঘাস, খড়, ভুসি, ভূট্টার গুড়া ও খৈল ছাড়াও প্রাণীটির খাবারের তালিকায় রয়েছে আপেল ও কলা। ১০ ফুট লম্বা ও প্রায় ৬ ফুট উচ্চতার সাদা-কালো রঙের এই গরুর ওজন ১২০০ কেজি। দাম হাঁকা হচ্ছে ১৪ লাখ টাকা।

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার বাগেরভিটা বেপারীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম এই গরুটির মালিক। পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি শফিকুল শখের বসে বাছুর থাকা অবস্থায় গরুটি তার ভাইয়ের কাছ থেকে নেন। গরুটি পালন করেছেন শফিকুলের ভাবী মোর্শোদা বেগম।ওজন, আকৃতি ও সৌন্দর্য চোখ ধাঁধানো হওয়ায় প্রতিদিনই রাজা বাহাদুরকে দেখতে শফিকুলের বাড়িতে ভিড় করছেন আশপাশের বিভিন্ন এলাকার মানুষরা।

জানা যায়, বড় ভাই শামসুল হকের খামার থেকে তিন বছর আগে ফ্রিজিয়ান জাতের বাছুরটি নেন শফিকুল। পরম মমতায় বড় করেন বাছুরটিকে। চলন ও আয়েশী খাবারের জন্য গরুটির নাম রাখেন ‘রাজা বাহাদুর’। ১০ ফুট লম্বা ও প্রায় ৬ ফুট উচ্চতার সাদা-কালো রঙের গরুটির ওজন এখন ১২০০ কেজি। ইতোমধ্যে অনেক ক্রেতা শফিকুলের বাড়িতে এসে গরুটির দরদাম করছেন। শফিকুলের আশা বাজারের সেরা এই গরুটি হয়তো বাড়িতেই বিক্রি হয়ে যাবে।

শফিকুল ইসলামের ভাবী মোর্শেদা বেগম গরুটি লালন-পালনের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘নিজের সন্তানের মতো করে গরুটিকে বড় করেছি। আমার আওয়াজ শুনতে পেলেই মাথা নারায় রাজা বাহাদুর। সবার সঙ্গে রাগের ভাব দেখালেও আমি আসলে শান্ত হয়ে যায়। গরুটি বিক্রি করতে হবে মনে হলেই চোখের পানি চলে আসে আমার। গরুটি বেশি ওজন হওয়ায় বাইরে বের করা অনেক কষ্টের। আমরা গরুটি বাইরে বের করি না। কমপক্ষে ৭ থেকে ৮ জন মানুষ লাগে গরুটি নিয়ন্ত্রণ করতে।’

গরুর মালিক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বড় ভাইয়ের একটি গরুর শাবক ছিল রাজা বাহাদুর। তখনই পরিকল্পনা করি যতদূর সম্ভব গরুটিকে বড় করবো। তিন বছর পালন করার পর এখন রাজা বাহাদুরের ওজন হয়েছে ১২০০ কেজি। গরুটিকে আমরা দেশি খাবার খাইয়েছি। কোনো হাইব্রিড খাবার দেইনি। সবুজ ঘাস ও খড় ছাড়া ভূষি, ভূট্টার গুড়া, খৈল, লবণ ও ফলমূল মিলে প্রায় সাড়ে তিন লাখ থেকে চার লাখ টাকা খরচ হয়েছে গরুটির পেছনে। আগে খাবার খরচ কম হলেও এখন প্রতিদিন কমপক্ষে ২ হাজার টাকার খাবার লাগে রাজা বাহাদুরের। গরুটির দাম চাচ্ছি ১৪ লাখ টাকা। কেউ এখনো সন্তোষজনক দাম বলেননি। ক্রেতার অপেক্ষায় আছি।’

জেলা প্রাণীসম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবার জেলার পাঁচটি উপজেলার ছোট বড় প্রায় ১৩ হাজার ৭৩১ জন খামারি রয়েছেন। এছাড়াও অনেক পরিবার ব্যক্তিগতভাবে গরু-মহিষ ও ছাগল পালনের সঙ্গে জড়িত। এবার কোরবানির জন্য শেরপুর জেলায় ৫১ হাজার ২২৫টি পশুর চাহিদা থাকলেও প্রস্তুত রয়েছে ৮৩ হাজার ৮০২টি পশু। যা চাহিদার তুলনায় প্রায় ৩২ হাজার বেশি। এবার ৪০ হাজার ২৭০টি ষাঁড়, ২ হাজার ৮৬৫টি বলদ, ১৩ হাজার ৭৯৪টি গাভী, ১ হাজার ৩৮৬টি মহিষ, ২২ হাজার ৩৯টি ছাগল, ৩ হাজার ৪৪৮টি ভেড়া প্রস্তুত রয়েছে কোরবানির জন্য। এসব পশু জেলার চাহিদা মিটিয়ে বাইরের হাটেও বিক্রি হবে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার ডা. রেজওয়ানুল হক ভূঁইয়া বলেন, কোরবানির পশুকে অসদুপায়ে মোটা তাজা না করার জন্য আমরা বিভিন্ন এলাকায় সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন চালাচ্ছি। বড় গরু গুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে বিক্রি করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বড় গরু পরিবহনের জন্য কিছু বিশেষ নিয়ম রয়েছে। তাই যাদের বড় গরু রয়েছে তাদের এ ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে।

তারিকুল/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়