ঢাকা     রোববার   ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২৯ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

শিশুটির মৃত্যু শোক ছুঁয়েছে প্রতিবেশীদেরও

সাভার প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:০২, ১১ জুন ২০২৪   আপডেট: ০৯:০৪, ১১ জুন ২০২৪
শিশুটির মৃত্যু শোক ছুঁয়েছে প্রতিবেশীদেরও

মুখে আঁচল ধরে কাঁদছিলেন মমতাজ বেগম। বলছিলেন, ‘কি ফুটফুটে শিশুটাকে এভাবে মারছে, এরা কি মানুষ?’ তার মতো আরও অনেকের গলায় আহাজারি, আফসোস। কাঁদছিলেন অনেকেই। কেউই যেন মেনে নিতে পারছে না সাত বছর বয়সী শিশু জিসান হাসান রাব্বির মৃত্যু। 

রোববার (৯ জুন) বিকেলে নিখোঁজ হওয়া এ শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয় সোমবার (১০ জুন) বিকেলে। পুলিশের ধারণা, গলায় ফাঁস লাগিয়ে তাকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। দুপুরের দিকে যখন মরদেহ উদ্ধার করা হয়, তখন তার মুখে দাহ্য পদার্থ দিয়ে পোড়ার দাগ দেখতে পান পুলিশ কর্মকর্তা।

আরো পড়ুন:

মা-বাবার সঙ্গে ধামরাইয়ের সোমভাগ ইউনিয়নের কালামপুর এলাকায় থাকতো জিসান হাসান রাব্বি। পড়তো পার্শ্ববর্তী কালামপুর বাজারের আসহাবুস সুফ্ফা মাদ্রাসায়। 

পরিবার বলছে, রোববার বিকেলে খেলতে বের হয় রাব্বি। তবে আর ফেরেনি। সন্ধ্যার পরও বাড়ি না ফেরায় তাকে খুঁজতে থাকে পরিবার। কিন্তু খুঁজে না পেয়ে রাতের দিকে ধামরাই থানায় একটি সাধারণ ডাইরি করে তার বাবা জুয়েল মিয়া। সোমবার দুপুরের দিকে আরও খোঁজাখুঁজির সময় বাড়ির অদূরে পাশের একটি বাঁশঝাড়ে তার মরদেহ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ উদ্ধার করে। 

জিসান হাসান রাব্বির মরদেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে বাঁশঝাড়ের পাশে ভিড় করেন স্থানীয়রাও। তার মরদেহ দেখে এমন নৃশংস হত্যার দৃশ্য মানতে পারছেন না কেউই। 

এদিকে ছেলের এমন মৃত্যুতে মা-বাবা যেনো পাগলপ্রায় হয়ে পড়েছেন। বিলাপ করে কাঁদছেন তারা। শোক ছুঁয়েছে আশপাশের প্রতিবেশীদেরও। জিসানের পরিবারের ভাড়া বাসার পাশেই একটি বাসায় থাকেন প্রতিমা সরকার। তিনি বলেন, ‘বাচ্চাটা কি সুন্দর ছিল দেখতে। কোনো দুষ্টামি করতো না। তাকে এভাবে যারা মারতে পারলো তাদের মধ্যে কোনো মনুষ্যত্বই নেই।’ 

আহাজারি করে কাঁদতে কাঁদতে জিসানের খালা মমতাজ বেগম বলেন, ‘এতো আদর করছি। এভাবে তারে মাইরা ফেললো। আমি বিচার চাই।’  

কান্নাজড়িত কণ্ঠে আসলাম হক নামে আরেক প্রতিবেশী বলেন, ‘বাচ্চাটা খুবই শান্তশিষ্ট ছিল। তার এরকম মৃত্যু মেনে নেওয়ার মত নয়।’ 

ধামরাই থানার উপ-পরিদর্শক অসীম বিশ্বাস বলেন, ‘রোববার রাতে জিডি পাওয়ার পর আমি সেখানে যাই। তার বাবাকে নিয়ে আশপাশে খোঁজাখুঁজি করি। বেশ কিছু সিসিটিভি ক্যামেরাও দেখেছি। এরমধ্যে সোমবার দুপুরের দিকে মরদেহ পাওয়ার খবর পাই।’ 

তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পরনের প্যান্টের ফিতা দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে তাকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। মুখে কিছু দাগ দেখা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, কোনো দাহ্য পদার্থ ঢেলে দেওয়ার কারণে নাক, মুখে পোড়ার মতো চিহ্ন দেখা গেছে। বাকিটা ময়নাতদন্তের পরে জানা যাবে।’ 

র‍্যাব-৪ সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট রাকিব মাহমুদ খান বলেন, ‘আমরা অভিযোগ পাওয়ার পরপরই তদন্ত শুরু করি। এরপর ওই শিশুর মৃত্যুর খবর পাই। আমাদের তদন্ত চলছে। আশা করছি দ্রুতই প্রকৃত অপরাধীকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।’

সাব্বির/ইমন

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়