ঢাকা     শনিবার   ০৫ অক্টোবর ২০২৪ ||  আশ্বিন ২০ ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রীর উপহার

রাঙামাটিতে পাহাড়ের ভূমিহীনরা পাচ্ছেন মাচাং ঘর

বিজয় ধর, রাঙামাটি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৩৭, ১১ জুন ২০২৪  
রাঙামাটিতে পাহাড়ের ভূমিহীনরা পাচ্ছেন মাচাং ঘর

প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে পার্বত্য জেলা রাঙামাটির পাহাড়ের ভূমিহীনরা পাচ্ছেন ৪০টি মাচাং ঘর। এই ৪০ টি মাচং ঘর দেওয়া হচ্ছে রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলায়।   

মঙ্গলবার (১১ জুন) দুপুর ১২ টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই ঘরগুলো হস্তান্তর করবেন। রাঙামাটির ৯ উপজেলায় মোট ৬৮০টি ঘর দেওয়া হবে ভূমিহীনদের।

সরকারের আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় মাচাং  ঘরগুলো রাঙামাটির পাহাড়ের ভূমিহীন ও গৃহহীনদের দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে চিৎমরম ইউনিয়নে ১৮টি এবং রাইখালী ইউনিয়নে ২২টি নতুন ঘর পাবেন উপকারভোগীরা। 

ইতোমধ্যে গৃহ নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন কাপ্তাই উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমকর্তা রুহুল আমিন। 

রাঙামাটি জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, দুই শতক জমিসহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের ঘর পাচ্ছেন কাপ্তাই উপজেলার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের  ৪০টি দরিদ্র পরিবার। পাহাড়ের পরিবেশের উপযোগী করে তাদের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের মিশেলে মাচাং ঘরগুলো তৈরি করা হয়েছে। প্রতিটি মাচং ঘর তৈরিতে  খরচ হয়েছে ২ লাখ ৬৫ হাজার ৬৭০ টাকা। এছাড়া  রাঙামাটি সদর উপজেলায় ৪টি, বাঘাইছড়ি উপজেলায় ৪২২টি, নানিয়ারচরে ৪টি, বিলাইছড়িতে ১১টি, বরকল উপজেলায ৩৫টি, লংগদু উপজেলায় ১২৬টি, রাজস্থলীতে ২৫টি ও কাউখালী উপজেলায় ১৩টি সেমিপাকা ঘর হস্তান্তর করা হবে। মোট ৬৮০ টি ঘর দেওয়া হবে।

কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো মহিউদ্দিন বলেন,  পাহাড়ি এলাকার কথা বিবেচনা করে নতুন ঘরগুলো মাচাংঘরের আদলে তৈরি করা হয়েছে। আজ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গণভবন হতে ভার্চুয়ালি উপস্থিত থেকে কাপ্তাইসহ দেশের বিভিন্ন উপজেলায় উপকারভোগীদের হাতে নতুন ঘর  হস্তান্তর করবেন।  কাপ্তাই উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠান শেষে উপকারভোগীদের হাতে ঘরের চাবি এবং দলিল বুঝিয়ে দেওয়া হবে।

স্থানীয়রা  জানিয়েছেন,  বড় আকারের খুঁটির ওপর নির্মিত এ মাচাংঘরগুলো পরিবেশবান্ধব। এগুলো পাহাড়ি-ঢালু  ও যেকোনো জায়গায় নির্মাণ করা সম্ভব এবং নির্মাণে পরিবেশের ক্ষতি করে পাহাড় কাটা লাগে না। তাই দুর্গম এলাকার পাহাড়ী জনগোষ্ঠীর মানুষেরা সেমিপাকা ঘরের পরিবর্তে মাচাং ঘর নির্মাণ করে বসবাস করে থাকেন।  কারণ মাচাংয়ের নিচে পশুপালনসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী সারাবছর সংরক্ষণ করা যায়।আদিকাল থেকে পাহাড়ি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলো বন্য পশু ও জীবজন্তুর আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে মাচাংঘরে বসবাস করতো। মাচাংগুলো সাধারণত মাটি থেকে ৫ থেকে ৬ ফুট উঁচু করে তৈরি হতো। আর মাচাং তৈরির একমাত্র উপকরণ ছিল পাহাড়ি ছন ও বাঁশ।

এদিকে, কাপ্তাইয়ের রাইখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মংক্য মারমা এবং চিৎমরম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওয়েশ্লিমং চৌধুরী জানান, পঞ্চম  পর্যায়ে দ্বিতীয় ধাপে আমাদের ইউনিয়নে ইতোমধ্যে গৃহ নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে।  মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘরগুলো হস্তান্তর করবেন।

রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খাঁন বলেন, পাহাড়ে মাচাং ঘর এখানকার ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অংশ। পাহাড়ের সংস্কৃতি ও পরিবেশ  রক্ষায় মাচাং ঘরগুলো গুরুত্ব বহন করে। এছাড়া দুর্গম এলাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণের জন্য ইট, রড ও বালু পরিবহনের জন্য প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হয়। মাচাং ঘর তৈরিতে অনেক অর্থ সাশ্রয় হয়।

/টিপু/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়