ঢাকা     শনিবার   ০৬ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২২ ১৪৩১

হালকা বৃষ্টিতেই ডুবলো ঠাকুরগাঁও শহর

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৩৭, ১২ জুন ২০২৪   আপডেট: ১৭:০৫, ১২ জুন ২০২৪
হালকা বৃষ্টিতেই ডুবলো ঠাকুরগাঁও শহর

সামান্য বৃষ্টিতেই ঠাকুরগাঁও পৌরসভার বেশ কয়েকটি এলাকার সড়ক ও বাজারে পানি জমে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন শহরবাসী। মূলত ড্রেনেজ ব্যবস্থার বেহাল দশাই এর কারণ।

বুধবার (১২ জুন) সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, ঠাকুরগাঁও পৌরশহরের বিভিন্ন অলিগলিসহ সড়কগুলোতে পানি থৈ থৈ করছে। কোথাও কোথাও হাঁটু সমান পানি। পানি বের হওয়ার রাস্তা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। এ অবস্থায় শহরের ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা চরম বিপাকে পড়েছেন। ময়লা পানির ভ্যাপসা গন্ধে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকিও।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ড্রেনেজ অব্যবস্থাপনার কারণে পানি নিষ্কাশিত না হওয়ায় অনেক মার্কেটের দোকানপাটের ভেতর ঢুকছে পানি। এতে আসবাবপত্র ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে ড্রেনেজের এমন বেহাল দশা থাকলেও কোনো উদ্যোগ নেই কর্তৃপক্ষের।

শহরের জলাবদ্ধ এলাকায় আটকে পড়া ভুক্তভোগীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, আমরা পানিতে ডুবলেও খোঁজ নিতে আসেন না কোনো কাউন্সিলর, এমনকি মেয়রও। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে এমন ভোগান্তি পোহালেও পৌর কর্তৃপক্ষ জলাবদ্ধতা নিরসনে নিচ্ছে না কোনো ব্যবস্থা।

জানা গেছে, বৃষ্টির পানি জমে শহরের নরেশ চৌহান সড়ক, নর্থ সার্কুলার রোড, গোয়ালপাড়া, কলেজপাড়া, কালিবাড়ি, শাহপাড়া, মুসলিমনগরসহ বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। এমনকি বাসা-বাড়িতে ঢুকেছে পানি।

গোয়ালপাড়া এলাকার বাসিন্দা রনি বলেন, এলাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে যায়। রাস্তাটিও নিচু। ড্রেন অপরিষ্কার থাকে। বৃষ্টি হলে শহরে কোথাও পানি জমুক আর না জমুক, এই এলাকায় পানি জমবেই।

নরেশ চৌহান সড়কের ব্যবসায়ী উজ্জল, মুকুলসহ অনেকে জানান, প্রথম শ্রেণীর পৌরসভার অবস্থা যদি এমন হয় তাহলে আর কি বলার থাকবে। পানি ঢুকে ব্যবসায়িক সামগ্রীর ক্ষতি হচ্ছে এ দায় কে নিবে। পৌর মেয়র আছেন বলে মনে হয় না। আমাদের দাবি দ্রুত কার্যকর করার ব্যবস্থায় উদ্যোগ নিন। না হলে সড়কে আন্দোলন করা ছাড়া উপায় থাকবে না।

কালিবাড়ি এলাকার বাসিন্দা মকসেদ বলেন, কালিবাড়ি রোডের ড্রেনটি পরিষ্কার করতে মেয়র ও কাউন্সিলরকে জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি। সংস্কার না করায় ড্রেনগুলো দিয়ে ঠিকমতো পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। ফলে বৃষ্টি হলেই শহরের রাস্তাঘাটে পানি জমে যাচ্ছে।

হাজিপাড়া এলাকার বাসিন্দা ময়নুল বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়ণ, বেহাল দশার ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও পয়ঃনিষ্কাশনের অভাবে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হলেই বাড়িতে হাঁটু সমান পানি জমে আমাদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। দীর্ঘদিন ধরে জলাবদ্ধতায় শহরবাসী ভোগান্তি পোহালেও পৌর কর্তৃপক্ষ এ সমস্যা সমাধানে কোনো পদক্ষেপই নিচ্ছে না।

সমাজ উন্নয়নকর্মী মনিরুজ্জামান বলেন, বৃষ্টি হলেই পৌরসভার বিভিন্ন অলিগলি পানিতে তলিয়ে যায়। এতে চলাচলে ভোগান্তিসহ সাধারণ মানুষের কষ্ট বাড়ে। অনেক এলাকায় বাড়িঘরেও পানি উঠে যায়। তাই শহরবাসীর জন্য প্রয়োজন আধুনিক ড্রেনেজ ব্যবস্থা।

প্যানেল মেয়র সুদাম সরকার জানান, এই মেয়রের সময়কালে কাউন্সিলররাও রীতিমত বিরক্ত। প্রকল্প বাস্তবায়নে তিনি কোনো ভূমিকা রাখছেন না। সে কারণে রাস্তাঘাট ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনাসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নে বেহাল অবস্থার তৈরি হয়েছে।

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও পৌরসভার মেয়র আঞ্জুমান আরা বেগম বন্যা বলেন, প্রকল্প আসলে প্রতিটি কাজ বাস্তবায়ন করা হবে৷

হিমেল/ফয়সাল

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়