ঢাকা     বুধবার   ২০ নভেম্বর ২০২৪ ||  অগ্রহায়ণ ৫ ১৪৩১

ব্যাংক হিসাব হ্যাকড করে টাকা স্থানান্তর, যুবকের ১০ বছর কারাদণ্ড

রাজশাহী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:০৪, ১২ জুন ২০২৪   আপডেট: ১৭:২৩, ১২ জুন ২০২৪
ব্যাংক হিসাব হ্যাকড করে টাকা স্থানান্তর, যুবকের ১০ বছর কারাদণ্ড

নাটোরের গুরুদাসপুরের যুবক রাব্বী আহম্মেদ (২১) এক র‌্যাব সদস্যের ব্যাংক হিসাব হ্যাকড করেন। এরপর আলাদা দুটি ব্যাংক হিসাবে সরিয়ে নেন ৬০ হাজার টাকা। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আদালত রাব্বীকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। বুধবার (১২ জুন) সকালে রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জিয়াউর রহমান এ রায় দেন। 

আসামি রাব্বী আহম্মেদের বাড়ি গুরুদাসপুর উপজেলার চাচকৈড় পুরানপাড়া গ্রামে। এ মামলার বাদী ল্যান্স কর্পোরাল শহিদুল ইসলাম। তাঁর ট্রাস্ট ব্যাংকের ওই হিসাব থেকে টাকা সরিয়ে নেওয়া হয় ২০২০ সালের ১৪ মে। শহিদুল ইসলাম তখন সিরাজগঞ্জের র‌্যাব-১২ এ কর্মরত ছিলেন। শহিদুল ইসলামের বাড়ি নওগাঁর পত্মীতলা উপজেলার শিতল গ্রামে। 

আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ইসমত আরা জানান, রায় ঘোষণার সময় আসামি রাব্বী অনুপস্থিত ছিলেন। রায়ে আদালত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দুটি ধারায় পাঁচ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ লাখ টাকা করে জরিমানা করেছেন। জরিমানার অর্থ অনাদায়ে আরও এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। রায়ে আদালত বলেছেন, সাজা একটার পর অন্যটা কার্যকর হবে। অর্থাৎ, আসামির মোট ১০ বছর কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা হয়েছে। 

আরো পড়ুন:

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ল্যান্স কর্পোরাল শহিদুল ইসলাম ২০২০ সালের ১৪ মে ব্যাংকের দুটি খুদেবার্তার মাধ্যমে জানতে পারেন, একটি ব্যাংক হিসাবে তার হিসাব থেকে ৫০ হাজার টাকা ও অপর একটি হিসাবে আরও ১০ হাজার টাকা ট্রান্সফার করা হয়েছে। এ নিয়ে শহিদুল ইসলাম ১৬ মে সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। এছাড়া র‌্যাব-১২ এর অধিনায়কের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। এরপর অনুসন্ধানে নামে র‌্যাব।

ব্যাংকে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, যে দুটি ব্যাংক হিসাবে টাকা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, সেই হিসাব দুটি পরিচালনা করেন কুষ্টিয়ার খোকশাবাড়ির রান্নু আহম্মেদ নামের এক ব্যক্তি। র‌্যাব রান্নুর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারে, তিনি অনলাইনে ডলার কেনাবেচা করেন। হোয়াটসঅ্যাপে এক ব্যক্তি তার সঙ্গে যোগাযোগ করে ডলার কিনতে চান। আর তাকে ডলারের মূল্য হিসাবে টাকা দিতে চান ব্যাংক হিসাবে। রান্নু ওই ব্যক্তিকে তার ব্যাংক হিসাব নম্বর দিলে তিনি ৬০ হাজার টাকা দিয়েছেন। এরপর মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে র‌্যাব রাব্বী আহম্মেদকে শনাক্ত করে।

এরপর ২০২০ সালের ১০ জুন নাটোরের গুরুদাসপুরে অভিযান চালিয়ে র‌্যাব-১২ এর একটি দল রাব্বীকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে রাব্বী জানান, তথ্য-প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে তিনি বিভিন্ন ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব হ্যাক করে এভাবে টাকা সরিয়ে নেন। এ নিয়ে ভুক্তভোগী র‌্যাব সদস্য তার বিরুদ্ধে সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন।

আইনজীবী ইসমত আরা জানান, গ্রেপ্তারের পর বেশকিছু দিন কারাগারে ছিলেন রাব্বী আহম্মেদ। পরে জামিনে মুক্তি পান। রাব্বী আহম্মেদ এখন পলাতক। রায় ঘোষণার দিনও তিনি আদালতে হাজির হননি। তার আইনজীবী আদালতের কাছে সময় প্রার্থনা করেন। তবে আদালত এ আবেদন নামঞ্জুর করে রায় ঘোষণা করেছেন। 

রাব্বীকে গ্রেপ্তার কিংবা আত্মসমর্পণের পর সাজা কার্যকর করা হবে বলে আদালত রায়ে উল্লেখ করেছেন।
 

কেয়া/বকুল 

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়