ঢাকা     রোববার   ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  ভাদ্র ২৪ ১৪৩১

মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে শেরপুরে চলছে দর্জি শ্রমিকদের ধর্মঘট

শেরপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:২৬, ১২ জুন ২০২৪  
মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে শেরপুরে চলছে দর্জি শ্রমিকদের ধর্মঘট

আন্দোলনে থাকায় শেরপুরের টেইলার্সগুলোতে দর্জিদের উপস্থিতি নেই

মুজরি বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন করছেন শেরপুর জেলা শহরের টেইলার্সে কর্মরত দর্জি শ্রমিকরা। দাবি আদায়ে গত ৬ দিন ধরে কাজ বন্ধ রেখেছেন তারা। এর ফলে জেলা শহরে ঈদের পোশাক তৈরির অর্ধশতাধিক কারখানার কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

টেইলার্স মালিকদের দাবি, গত ঈদে শ্রমিকদের দাবির মুখে মজুরি বৃদ্ধি করা হয়। এবারও ঈদকে সামনে রেখে তাদের জিম্মি করছেন দর্জিরা। ধর্মঘটের কারণে জেলা শহরের বিভিন্ন মার্কেটে অবস্থিত টেইলার্সগুলোতে নিরবতা নেমে এসেছে। ঈদের সময় শার্ট, পেন্ট ও পাঞ্জাবির গজ কাপড়ের দোকানগুলোতে বেচাকেনা বন্ধ রয়েছে।  চলতি মাসের ৮ তারিখ থেকে দর্জিরা কাজ বন্ধ করে দিলেও সমাধানের উদ্যোগ নেই স্থানীয় প্রশাসনের।

দর্জি শ্রমিকরা জানান, তারা কাজ করেন মালিকের দোকানে। কাজের বিনিময়ে মালিকরা তাদের যে মজুরি দেন তাতে তাদের পোষায় না। গত ১৫ দিন আগে থেকে মৌখিকভাবে মালিক পক্ষকে মজুরি বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে আসছিলেন। কোনো কাজ না হওয়ায় আন্দোলনে যেতে বাধ্য হয়েছেন তারা।

টেইলার্স বন্ধ থাকায় গজ কাপড়ের দোকানগুলোতে বেচাকেনা কমে গেছে

শেরপুর জেলা দর্জি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. আলাল মিয়া বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিকরা ন্যায্য মজুরির দাবি জানিয়ে আসলেও মালিকরা এতে কর্ণপাত করেননি। মালিকরা একটা শার্টের মুজুরি নেন ৪০০ টাকা। আমাদের দেন মাত্র ১২১ টাকা। এই অল্প টাকা দিয়ে আমাদের সংসার চলে না। আমাদের বেশি দাবি নয়। মাত্র ৫টাকা থেকে ১০টাকা বৃদ্ধি করলেই আমরা কাজে ফিরবো।’

গজ কাপড়ের একজন নারী ক্রেতা জানান, প্রতি বছরই কাপড় কিনে ঈদের আগে নকশা অনুযায়ী পোশাক বানিয়ে নেন তাঁরা। এজন্য শহরের লেডিস টেইলার্সগুলোই ভরসা। এবার দর্জিরা ধর্মঘটে থাকায় কোনো টেইলার্স কাপড়ের অর্ডার নিচ্ছে না। ফলে কাপড় কেনা হলেও তা নতুন পোশাক তৈরি করতে পারছেন না তারা।

ধর্মঘট চলায় কেরাম খেলে সময় কাটাচ্ছেন কয়েকজন দর্জি শ্রমিক

মাদ্রাসা শিক্ষক মাওলানা আবুল হোসেন বলেন, ‘প্রতিবছর নতু পায়জামা-পাঞ্জাবি পরে ঈদের নামাজ পড়ি। এবারও প্রস্তুতি নিয়ে পায়জামা-পাঞ্জাবির কাপড় কিনলাম। নতুন কাপড়ের পোশাক তৈরি করতে পারছি না। ঈদে নতুন জামা পরতে পারবো কিনা তা নিয়ে আমি সন্ধিহান।’

শেরপুর দর্জি মালিক বহুমুখি সমবায় সমিতি লিমিটেড-এর সভাপতি নেপাল চন্দ্র সরকার বলেন, ‘শ্রমিকদের ধর্মঘট সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। চলতি বছরের মার্চ মাসের ৯ তারিখে শ্রমিকদের দাবি দাওয়া মেনে নতুন মজুরি নির্ধারন করা হয়েছে। সেই সময় মালিক ও শ্রমিক পক্ষের লিখিত চুক্তি হয়। সেই চুক্তিতে ২০২৬ সালের আগে আর মজুরি বৃদ্ধি হবে না বলে উল্লেখ করা হয়। হঠাৎ করে কোনো ধরনের নোটিস না দিয়ে তারা (দর্জি শ্রমিক) আবার কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। ঈদে মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। এভাবে বার বার মজুরি বৃদ্ধি করলে আমাদের দোকান বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই।’

একই কথা ধরনের কথা বলেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মো. মোছা আলম সরকার।

শেরপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ড্রাষ্ট্রিজ-এর সভাপতি আসাদুজ্জামান রওশন বলেন, বিষয়টি আমরা অবগত হয়েছি। আমরা উভয় পক্ষের সাথে আলোচনা করে দ্রুত শ্রমিকদের কাজে ফেরানোর চেষ্টা করবো।

তারিকুল/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়