ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ০৪ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২০ ১৪৩১

উপজেলা পরিষদ নির্বাচন

বগুড়ায় নির্বাচন পরবর্তী সংঘর্ষে আহত ব্যক্তির মৃত্যু

বগুড়া প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:১৬, ১২ জুন ২০২৪  
বগুড়ায় নির্বাচন পরবর্তী সংঘর্ষে আহত ব্যক্তির মৃত্যু

নিহত সালাউদ্দিন

বগুড়ার শিবগঞ্জে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত সালাউদ্দিন (৪৮) নামে এক ব্যক্তি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

বুধবার (১২ জুন) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে মারা যান তিনি। একই ঘটনায় নিহতের আরও তিন ভাই হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

এদিকে চার ভাইয়ের আহতের খবর সামলাতে না পেরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তোফায়েল আহমেদ (৬০) নামে আরেক ভাই নিজ বাড়িতে স্ট্রোক করে মারা গেছেন বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন।

এর আগে সোমবার (১০ জুন) সন্ধ্যায় শিবগঞ্জ উপজেলার দেউলী ইউনিয়নের মেঘাখোর্দ্দ গ্রামে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। হামলায় আহত তিন জন হলেন- আলম মিয়া (৫৫), শেখ সাদি (৪৫) ও আবু সালেক (৬৫)।

হামলায় নিহতের ভাতিজা বোরহান মণ্ডল শিবগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, মামলায় ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়। সেই মামলায় ইতোমধ্যে দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে সালাউদ্দিন মারা যাওয়ায় এটি হত্যা মামলা হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করা হবে। গ্রেপ্তারকৃত দু’জন হলেন- দেউলী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি শাকিরুল ইসলাম ও মন্টু মিয়া।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে গ্রামের বোরহান মণ্ডল ও শাকিরুল ইসলামের দু’টি পক্ষ দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে বিভক্ত হয়ে কাজ করে। এ নিয়ে দ্বন্দ্ব চরম পর্যায়ে পৌঁছে। পরবর্তীতে মারপিটের ঘটনায় রূপ নেয়। ঘটনার দিন গ্রামের রাস্তার ওপর দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে প্রথমে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি সাকিরুল ইসলাম তার লোকজন নিয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে বোরহান উদ্দিনের পক্ষের লোকজনকে বেধড়ক মারধর করে। এরপর স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মেঘাখর্দ্দ মসজিদ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে দেউলী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি শাকিরুল ইসলাম ও স্থানীয় বাসিন্দা বোরহান উদ্দিনের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিলো। সদ্য সমাপ্ত হওয়া উপজেলা নির্বাচনে এই দুই ব্যক্তি পৃথক দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থনে কাজ করেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছে।

মামলার বাদি বোরহান মণ্ডল বলেন, মসজিদ কমিটির ঝামেলা এখানে কোনো বড় ঘটনা নয়। মূলত ২৯ মে উপজেলা নির্বাচনে সকাল থেকেই ভোট দেওয়া নিয়ে আমার সঙ্গে শাকিরুল রেষারেষি শুরু করেন। তখন থেকেই আমাদের ওপর হামলার চেষ্টা করছিলেন। পরে সোমবার সন্ধ্যায় আমার বাবা-চাচাদের পেয়ে শাকিরুল প্রথমে হামলা চালান। পরে অন্যদের হামলার নির্দেশ দেন।

তিনি আরও বলেন, হামলার পর আমার বাবা ও তিন চাচাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বাড়িতে কেউ ছিল না। চার ভাইয়ের এমন অবস্থা জেনে সইতে না পেরে আমার চাচা তোফায়েল আহমেদ স্ট্রোক করে মারা যান। পরে আজকে সকালে বড় চাচা সালাউদ্দিনও মারা যান। এ ঘটনায় দু’জন গ্রেপ্তার হলেও তার আত্মীয়-স্বজনরা আমাদের ক্রমাগত হুমকি দিচ্ছে। আমরা ভয়ে বাড়িতেও যেতে পারছি না।

নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রউফ বলেন, মারামারির ঘটনায় সালাউদ্দিন নামে একজন আজ সকালে মারা গেছেন। তার লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। মামলাটি এখন হত্যা মামলায় রূপ দেওয়া হবে। এ ঘটনায় দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে পুলিশী অভিযান চলছে।

এনাম/ফয়সাল

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়