ঢাকা     শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ||  অগ্রহায়ণ ৮ ১৪৩১

নিজের লক্ষ্য পূরণ করতে পারাও এভারেস্ট জয়ের সমান: বাবর আলী

ফেনী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২৩:০৯, ১২ জুন ২০২৪  
নিজের লক্ষ্য পূরণ করতে পারাও এভারেস্ট জয়ের সমান: বাবর আলী

পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট বিজয়ী ডা. বাবর আলী বলেছেন, `প্রত্যেক মানুষ নিজ নিজ অবস্থান থেকে নিজের জীবনের লক্ষ্য পূরণ করতে পারাটাও এভারেস্ট জয়ের সমান। স্ব স্ব পেশায় এগিয়ে যাওয়া এভারেস্ট দিকে এগিয়ে যাওয়ার সমান।’

বুধবার (১২ জুন) বিকেলে ফেনীতে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এমন অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন। ডিডি ল্যাব নামক ডায়াগনস্টিক সেন্টারের আয়োজনে চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হয় বাবর আলীকে। এসময় এভারেস্ট জয়ের নানা অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন তিনি।

ডা. যুবায়ের ইবনে খায়ের’র সঞ্চালনায় ডিডি ল্যাবের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ডা.আবদুল কুদ্দুস সোহাগের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে চিকিৎসক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

আরো পড়ুন:

৬ষ্ঠ বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয়ের ম্মৃতি তুলে ধরে বাবর আলী জানান, এভারেস্ট জয়ের নেশা সবার কাছে রোমাঞ্চকর। তবে এর জন্য কঠোর পরিশ্রম ও লক্ষ্যপানে নিরলস ছুটে চলতে হবে। প্রতিটা মানুষের জীবনে নিজের লক্ষ্য পূরণ করতে পারাও এভারেস্ট জয়ের সমান। 
বাবর আলী বলেন, স্কুল জীবন থেকে এভারেস্ট জয় আমার কাছে স্বপ্ন ছিল। সে থেকে পাহাড়ে চড়া শুরু। ছাত্র জীবনে দেশের বিভিন্ন জেলায় অবস্থিত পর্বত জয় শুরু করি। পায়ে হেঁটে সারা বাংলাদেশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা রয়েছে আমার। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ জয় করার  পর পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ এভারেস্ট জয়ের নেশা বাড়তে থাকে। যে কোনো পর্বতারোহীর জন্য এভারেস্ট সর্বোচ্চ স্বপ্নচূড়া। আমার সে স্বপ্ন বাস্তবে ধরা দেয় ২৯ মে।  পৃথিবীর সর্বোচ্চ চূড়ায় বাংলাদেশের পতাকা উড়াতে পারাটা আমার অর্জনকে হাজারগুন বাড়িয়ে দিয়েছে৷

তিনি আরও বলেন, পেশায় একজন চিকিৎসক হলেও আমার মন সবসময় পাহাড়ে পড়ে থাকতো। আয়ের সিংহভাগই আমার ভ্রমণ ও পর্বতারোহনে খরচ হতো। এভারেস্ট মিশনে আমার প্রায় ৪৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে।

এভারেস্টে জয়ের স্মৃতির কথা বলতে গিয়ে বাবর বলেন, এর আগে আমি অসংখ্য পর্বতে আরোহণ করলেও এভারেস্টের অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। ১১ বছর পর বাংলাদেশি হিসেবে এ জয় আমার জীবনের সেরা ঘটনা। প্রায় দুই মাসের এ সফরে আমাদের নানা প্রতিকূলতা ডিঙিয়ে যেতে হয়েছে। এভারেস্ট অভিযানে গিয়ে অনেকে মৃত্যুবরণ করেছেন এমন ৩টি লাশ আমার চোখে পড়েছে। তার মধ্যে মোঙ্গলীয় এক নাগরিকের মৃতদেহ আমাকে সবচেয়ে বেশি কষ্ট দিয়েছে। তার সাথে আমার ৩/৪ দিন আগেও দেখা হয়েছিল। সে এমনভাবে পড়েছিল যেন সে কারও অপেক্ষায় বসে আছে। 

আগামীতে যারা এভারেস্ট জয়ের স্বপ্ন দেখছেন তাদের উদ্দেশে বাবর বলেন, নিজের স্বপ্ন একটু একটু করে এগিয়ে নিতে হবে। শারীরিক মানসিক ও আর্থিকভাবে নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। এর আগে পার্বত্য অঞ্চলের ছোটবড় পাহাড় চড়ার অভিজ্ঞতা নিতে হবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএমএ ফেনী জেলা সভাপতি অধ্যাপক ডা. সাহেদুল ইসলাম কাউছার, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. বিমল চন্দ্র দাশ, সিভিল সার্জন ডা. মো. শিহাবউদ্দিন রানা, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এম এম আর মাসুদ রানাসহ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ।

আরও উপস্থিত ছিলেন, বিডিক্লিন ফেনীর উপদেষ্টা ইমন উল হক, দৈনিক ফেনী’র সম্পাদক আরিফুল আমিন রিজভী। সহায়ের সভাপতি মঞ্জিলা আক্তার মিমি।

ডিডি ল্যাবের পদযাত্রায় শুভেচ্ছা জানাতে উপস্থিত ছিলেন ফেনী জেলা যুব রেড ক্রিসেন্ট, সহায়, পরিবেশ ক্লাব, বাথানিয়া ব্লাড ডোনারস ক্লাব, বিডি ক্লিন, ফেনী সাইক্লিস্ট, সিন্দুরপুর সমাজ উন্নয়ন সংস্থাসহ বিভিন্ন সংস্থার নেতৃত্ববৃন্দ।

সাহাব/ফয়সাল

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়