ঢাকা     বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৯ ১৪৩১

মসজিদের সভাপতির গরু আগে জবাই না দেওয়ায় ইমামকে মারধর, চাকরিচ্যুতি

কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:১৭, ১৮ জুন ২০২৪   আপডেট: ১৩:৪৬, ১৮ জুন ২০২৪
মসজিদের সভাপতির গরু আগে জবাই না দেওয়ায় ইমামকে মারধর, চাকরিচ্যুতি

গাজীপুরের শ্রীপুরে মসজিদ কমিটির সভাপতির কোরবানির গরু আগে জবাই না দেওয়ায় ইমামকে মারধর ও চাকরিচ্যুতি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (১৭ জুন) সকালে ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার পৌর এলাকার ভাংনাহাটি মধ্যপাড়া গ্রামের বায়তুল নূর জামে মসজিদে।

অভিযুক্তের নাম কফিল উদ্দিন। তিনি শ্রীপুর পৌরসভার ভাংনাহাটি মধ্যপাড়া গ্রামের মৃত জাফর আলীর ছেলে ও ভাংনাহাটি মধ্যপাড়া বায়তুল নূর জামে মসজিদের সভাপতি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার ঈদের নামাজের পরপরই মসজিদের মাঠ ও এর আশপাশে কোরবানির পশু জবাই করার প্রস্তুতি চলছিল। এ সময় ইদ্রিস নামে এক মুসল্লির কোরবানির গরু মাঠের পাশেই শোয়ানো হলে ইমামকে ওই গরু জবাই করতে অনুরোধ করেন। একই সময়ে মসজিদের সভাপতি কফিল উদ্দিনের কোরবানির গরু জবাইয়ের জন্য প্রস্তুত করা হয়। এ সময় ইমামকে ডাক দিলে সঙ্গে সঙ্গেই ইমাম হাজির হলেও ইদ্রিসের গরু আগে জবাই করতে কেন গেলেন তার কারণ জানতে চান সভাপতি। একপর্যায়ে তিনি উত্তেজিত হন এবং ইমামকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। পরে ইমামকে ওই গরু জবাই করতে না দিয়ে নিজেরাই জবাই করেন। এ সময় ওই ইমাম স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে বিষয়টি জানিয়ে মসজিদে ফিরে আসেন। এরই জেরে আসরের নামাজ শেষে ইমামকে লাঞ্ছিত করে বিদায় করে দেন সভাপতি।

ভুক্তভোগী ইমাম বলেন, ঈদের নামাজ শেষে পশু কোরবানির প্রস্তুতির একপর্যায় পাশের ইদ্রিস আলীর কোরবানির পশু (গরু) জবাইয়ের জন্য ডাকলে সেখানে চলে যাই। এ সময় সভাপতি সাহেব ফোন করেন তার গরু জবাই করতে। সঙ্গে সঙ্গে তার কাছে এলেও ক্ষিপ্ত হন ও তার অনুমতি ছাড়া অন্য গরু জবাই করার অপরাধে আমাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ এবং শরীরে হাত তুলেন। একপর্যায়ে তিনি চাকরি ছেড়ে চলে যেতে বলেন। পরে চলে আসি।

অভিযুক্ত কফিল উদ্দীন। ফাইল ফটো

বায়তুল নূর জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আল আমীন বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। খুবই দুঃখজনক ঘটনা।

তবে অভিযোগ অস্বীকার মসজিদ কমিটির সভাপতি কফিল উদ্দিন মুঠোফোনে বলেন, এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। সামান্য কথা-কাটাকাটি হয়েছে।

ইমাম চলে গেছেন কেনো? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইমাম ছুটিতে গেছেন। আমি অসুস্থ। এ বিষয়ে আর কথা বলতে পারব না।

স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামরুজ্জামান মন্ডল বলেন, ইমাম সাহেব আমার কাছে এসেছিলেন এবং বিচার দিয়ে গেছেন। ঈদের দিন ওনার সঙ্গে এমন আচরণ করা ঠিক হয়নি।

এ সময় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ইমামের গায়ে হাত তোলা জঘন্যতম কাজ। এমন ন্যক্কারজনক কাজের জন্য তার উপযুক্ত শাস্তি হওয়া উচিত।

শ্রীপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুজন কুমার পণ্ডিত বলেন, বিষয়টি আমাদের জানা নেই। এ সংক্রান্ত অভিযোগ কেউ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রফিক/কেআই

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়