ঢাকা     শনিবার   ০৬ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২২ ১৪৩১

শরীয়তপুর-ঢাকা রুটে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় 

শরীয়তপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৪২, ১৯ জুন ২০২৪   আপডেট: ২২:৩৭, ১৯ জুন ২০২৪
শরীয়তপুর-ঢাকা রুটে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় 

প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ শেষে এবার কর্মস্থলে ফেরার পালা। এ সুযোগে শরীয়তপুর থেকে ঢাকা রুটের যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এ রুটের ভাড়া ২৫০ টাকা হলেও ৫০০-৬০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হচ্ছে। এতে যাত্রীরা বিপাকে পড়লেও বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত ভাড়ায় যাচ্ছে।

বুধবার (১৯ জুন) জেলার বিভিন্ন বাস টার্মিনালে সরেজমিন ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) শরীয়তপুর কার্যালয় ও শরীয়তপুর আন্তঃজেলা বাস ও মিনি বাস মালিক সমিতি সূত্রে জানা যায়, শরীয়তপুরের মানুষ পদ্মা সেতু দিয়ে বাসে ঢাকায় যাতায়াত করেন। শরীয়তপুর পৌর বাস টার্মিনাল ও নড়িয়া উপজেলা সদর থেকে ঢাকার যাত্রাবাড়ী ও কেরানীগঞ্জের কদমতলা পর্যন্ত বাস চলাচল করে। সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ওই পথে প্রতিদিন তিন শতাধিক বাস চলে। গড়ে পাঁচ মিনিট পর বাস ছেড়ে যায়। প্রতিদিন ৮-১০ হাজার মানুষ বাসে যাতায়াত করে। শরীয়তপুর শহর থেকে ঢাকার যাত্রাবাড়ীর দূরত্ব ৭৩ কিলোমিটার। শরীয়তপুর বাস মালিক সমিতি ২৫০ টাকা ভাড়া নেয়। তবে ঈদকে কেন্দ্র করে গত সোমবার (১৭ জুন) ও মঙ্গলবার (১৮ জুন) যাত্রীদের কাছ থেকে ৪০০-৬০০ টাকা ভাড়া আদায় করা হয়েছে। 

যাত্রীরা এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের অভিযোগ, প্রতিবার ঈদের সময় বাস মালিকরা ভাড়া বাড়িয়ে দেন। ঢাকার মোহাম্মদপুরে মোবাইলের দোকানে কাজ করেন শরীয়তপুর সদর উপজেলার ধানুকা গ্রামের আবু রাহাত খান। তিনি আজ বুধবার (১৯ জুন) শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস পরিবহনের বাসে করে শরীয়তপুর সদর থেকে থেকে ঢাকায় যাচ্ছেন। তাঁর কাছ থেকে ৫০০ টাকা ভাড়া নেওয়া হয়েছে।

আবু রাহাত খান রাইজিংবিডি-কে বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। স্বল্প বেতনে কাজ করি। সারা বছরের সঞ্চয় দিয়ে ঈদ উদ্‌যাপন করি। সেই কষ্টের টাকা যদি বাসের মালিক-শ্রমিকেরা রেখে দেন, তাহলে আমরা কোথায় যাব?’

সকালে সদর উপজেলার চরচিকন্দি গ্রামের কামরুল খান পরিবারের দুই সদস্যকে নিয়ে ঢাকা থেকে এসেছেন। তাঁদের কাছ থেকে ৬০০ টাকা করে বাসভাড়া আদায় করা হয়েছে।

ভাড়া বেশি নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস বাসের চালক সানি বলেন, ঢাকা থেকে শরীয়তপুরে খালি বাস নিয়ে যেতে হচ্ছে। ঢাকায় যাওয়ার সময় যাত্রী হলেও আসার সময় থাকে না। তাই যাওয়া-আসার খরচ সমন্বয় করতে ভাড়া একটু বেশি নেওয়া হচ্ছে।

শরীয়তপুরে আন্তজেলা বাস ও মিনি বাস মালিক সমিতির সভাপতি ফারুক আহম্মেদ তালুকদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি রাইজিংবিডি-কে বলেন, ঈদের সময় যাত্রীদের চাপ বেড়ে যায় এবং অতিরিক্ত সার্ভিস চালাতে হয়। শরীয়তপুর থেকে যাওয়ার সময় অতিরিক্ত যাত্রী আছে। ঢাকা থেকে শরীয়তপুর যাওয়ার সময় যাত্রী পাওয়া যায় না। যাত্রীরা যাতে শরীয়তপুরের বিভিন্ন বাস টার্মিনালে দাঁড়িয়ে না থাকে, সেই কথা বিবেচনা করে ঢাকা থেকে খালি বাস পাঠাতে হচ্ছে। সেতুর টোল, মহাসড়কের টোল, বিভিন্ন চাঁদা ও তেল খরচ সমন্বয় করতে ভাড়া বেশি নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এজন্য কিছুটা ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়।

শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ নিজাম উদ্দীন আহমেদ মুঠোফোনে রাইজিংবিডি-কে বলেন, বিআরটিএ নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত আদায় করা যাবে না। ঈদের সময় ভাড়া নির্ধারণের বিষয় শরীয়তপুর আন্তঃজেলা বাস ও মিনি বাস মালিক সমিতির সঙ্গে কথা হয়েছে। যাত্রী হয়রানি ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চলবে।

আকাশ/বকুল

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়