ঢাকা     রোববার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  পৌষ ৭ ১৪৩১

সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, পানিবন্দি ৭ লাখ মানুষ

মনোয়ার চৌধুরী, সুনামগঞ্জ  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:১৫, ২০ জুন ২০২৪   আপডেট: ১৩:১৭, ২০ জুন ২০২৪
সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, পানিবন্দি ৭ লাখ মানুষ

ছবি: রাইজিংবিডি

প্রবল বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের ১১টি উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে। পানিবন্দি হয়েছেন প্রায় সাড়ে ৭ লাখ মানুষ। তাদের মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে গেছেন ১৯ হাজার মানুষ।

তবে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম হওয়ায় সুনামগঞ্জের সুরমা নদীর পানি উজানে কিছুটা কমেছে। কিন্তু ভাটির দিকের নদীগুলোর পানি বেড়েছে। হাওর উপচে প্লাবিত হচ্ছে বিস্তীর্ণ এলাকা। এতে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সময় যত যাচ্ছে বানভাসি মানুষের মাঝে ভয় আতঙ্ক বিরাজ করছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, সুরমা নদীর পানি নতুন করে বৃদ্ধি পেয়েছে দিরাই পয়েন্টে। বৃহস্পতিবার (২০ জুন) সকাল ৯টায় দিরাই পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ৩২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া ছাতক পয়েন্টে বিপৎসীমার ১২৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে পানি কমেছে সুনামগঞ্জের পৌর শহরের ষোলঘর পয়েন্টে। সুরমা নদীর এই পয়েন্টে পানি প্রবাহিত হচ্ছে বিপৎসীমার ২৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে। গত ২৪ ঘণ্টায় এ জেলায় ৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।

আরো পড়ুন:

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, জেলার চারটি পৌরসভা এলাকাসহ ৭৮ ইউনিয়নের ১০১৮ গ্রামের ৬ লাখ ৬০ হাজার ৩৪৭জন মানুষ বন্যা ভোগান্তিতে আছেন। ৫৩১টি আশ্রয়কেন্দ্রে ওঠেছেন ১৮ হাজার ৪২৯ জন বন্যার্ত মানুষ।

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার কুতুবপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুস জহুর বলেন,আমাদের গ্রামের অবস্থা খুব খারাপ। আমার ঘরে পানি, বাচ্চাদের নিয়ে কই যাবো, আমাদের গ্রামে কারো বড় বিল্ডিং নেই। দুরের কোনো স্কুলে উঠলে বন্যার পানি ঘর ভেঙে সব ভাসিয়ে নিলে কিছুই রক্ষা করতে পারবো না। এরপরে ডাকাতির ভয়তো আছেই।

লালপুর গ্রামের তাহমিদ আহমদ বলেন, পানি ঘণ্টায় ঘণ্টায় বাড়ছে। আজ কোনো আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাবো।

এর আগে ঈদের দিন সোমবার (১৭ জুন) ও ঈদের পরদিন মঙ্গলবার (১৮ জুন) পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণে নদ নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে সুনামগঞ্জে দেখা দেয় বন্যা। এরপর ১৯ জুন পানিতে প্লাবিত হতে শুরু করে নতুন নতুন এলাকা। এর মধ্যে জেলা শহরের প্রায় ৫০ ভাগ এলাকা প্লাবিত হয়। ডুবে যায় এসব এলাকার ঘরবাড়ি ও দোকানপাঠসহ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা। 

অন্যদিকে, পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় ছাতক গোবিন্দগঞ্জ সড়ক, দোয়ারাবাজার ছাতক সড়ক, জামালগঞ্জ সুনামগঞ্জ সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার শক্তিয়ারখলা সড়ক ডুবে জেলা শহরের সঙ্গে তাহিরপুর উপজেলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী জানান, বন্যার্তদের জন্য জেলায় মোট ৫৩১টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়গুলোতে কন্ট্রোলরুম স্থাপন করা হয়েছে। 

/এসবি/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়