ঢাকা     বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৯ ১৪৩১

তিস্তাপাড়ে কান্নার রোল, খোঁজ মেলেনি স্বামী-স্ত্রীসহ ৪ শিশুর

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:০২, ২০ জুন ২০২৪  
তিস্তাপাড়ে কান্নার রোল, খোঁজ মেলেনি স্বামী-স্ত্রীসহ ৪ শিশুর

কুড়িগ্রামের উলিপুরে নৌকাডুবির ঘটনায় তিস্তাপাড়ে কান্নার রোল উঠেছে। নিখোঁজদের আত্মীয়-স্বজনসহ শত শত মানুষ নদীর পাড়ে উৎকণ্ঠা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা তারা অপেক্ষা করছেন অন্তত স্বজনদের মরদেহ খুঁজে পাওয়ার আশায়। 

গত বুধবার সন্ধ্যায় তিস্তায় নৌকাডুবির ঘটনায় এখনও স্বামী-স্ত্রীসহ ৪ শিশু নিখোঁজ রয়েছেন। এদের মধ্যে ৪ জন একই পরিবারের।

এ দিকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরী দলের উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। 

নিখোঁজরা হলেন আনিছুর রহমান (৩৬), তার স্ত্রী রুপালী (২৫), মেয়ে আইরিন (১০), এবং ইরামনি (১০), শামীম (৮) ও কুলসুম (৩)। শামীম ও কুলসুম সম্পর্কে আনিছুর রহমানের ভাতিজা ও ভাগ্নি বলে জানা গেছে। 

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়, তিস্তাপাড়ে শত শত মানুষের ভিড়। প্রত্যেকের চোখে-মুখে বিষণ্ণতার ছাপ। স্বজনরা বুক চাপড়ে আহাজারি করছেন। 

জানা যায়, বুধবার সন্ধ্যায় কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বজরা ইউনিয়নের পুরাতন বজরা ঘাট থেকে নৌকায় বিয়ের দাওয়াত খেতে যাচ্ছিলেন শিশু নারীসহ ২৫ জন। নৌকাটি তিস্তার ওপারে একই ইউনিয়নের দামার হাট ঘাটের কাছাকাছি পৌঁছাতেই তীব্র স্রোতে ডুবে যায়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় ও সাঁতার কেটে ১৮ জন পাড়ে উঠে আসেন। ঘটনাস্থল থেকে এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। কিন্তু নিখোঁজ ৬ জনকে এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। 

রংপুর ও কুড়িগ্রাম থেকে আসা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরী দলের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তীব্র স্রোতে ব্যাহত হচ্ছে উদ্ধার কার্যক্রম। 

নৌকায় থাকা যাত্রীদের বাড়ি পুরাতন বজরা এলাকায় বলে জানা গেছে। স্থানীয় দোকানদার মাসুদ রানা জানান, সন্ধ্যার কিছু আগে নৌকায় করে ফয়জার আলীর মেয়ের বিয়ের দাওয়াত খেতে যাচ্ছিল তার পরিবারসহ আত্মীয়-স্বজনরা। তিস্তার ওপাড়ে তার মেয়ে জামাইয়ের বাড়ি। দামারহাট ঘাটে পৌঁছানোর আগ মুহূর্তে নৌকাটি ডুবে যায়। 

দামারহাট ঘাট এলাকায় এব প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, স্রোতের তোরে নৌকাটি উজানে ঘাটের দিকে আসছিল। নদীর কিনার থেকে প্রায় দুইশ গজ দূরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। যাত্রীরা মুহূর্তের মধ্যে ডুবে যায়। 

কুড়িগ্রাম ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার শরিফুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত নদীতে তল্লাশি চালিয়েও নিখোঁজদের সন্ধান পাওয়া যায়নি। হয়তো তীব্র স্রোতে মরদেহ ভাটির দিকে ভেসে গেছে। সেসব জায়গাতেও তল্লাশি চালানো হচ্ছে।

নিখোঁজদের সন্ধান না মেলা পর্যন্ত উদ্ধার কাজ অব্যাহত থাকবে বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা।
স্থানীয়রা জানান, নৌকাটিতে সর্বোচ্চ ১২ জন উঠতে পারত। কিন্তু নৌকায় ২৫ জন যাত্রী ছিল।  স্রোতের পাকে নৌকাটি ডুবে গেছে।
 

সৈকত/তারা

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়