ঢাকা     বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৯ ১৪৩১

ঝিনাইদহে ভিজিএফের ২৬৪ বস্তা চাল বিক্রির অভিযোগ

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৩৭, ২১ জুন ২০২৪   আপডেট: ১৯:৫৯, ২১ জুন ২০২৪
ঝিনাইদহে ভিজিএফের ২৬৪ বস্তা চাল বিক্রির অভিযোগ

ভিজিএফের চাল পরিবহনে ব্যবহৃত যান

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ঈদুল আযহা উপলক্ষে দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দকৃত ভিজিএফের চাল বিক্রির অভিযোগ উঠেছে তিন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।

গত শনিবার (১৫ জুন) বিকেলে এই চাল বিক্রি করা হয়েছে পার্শ্ববর্তী মহেশপুর উপজেলার খালিশপুর বাজারের একটি দোকানে। শুক্রবার (২১ জুন) সকালে এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

জানা গেছে, ঈদের দুই দিন আগে কালীগঞ্জ খাদ্য গুদাম থেকে ৪টি শ্যালো ইঞ্জিন চালিত নসিমনে (আঞ্চলিক যান) ২৬৪ বস্তা ভিজিএফের চাল নিয়ে যাওয়া হয় মহেশপুরের খালিশপুরে। প্রতিটি গাড়িতে ৬৬ বস্তা চাল ছিল। প্রতিটি বস্তা খাদ্য অধিদপ্তরের স্টিকারযুক্ত। নিয়ে যাওয়ার সময় একটি গাড়ির চালকের কাছে তিনটি বিলি আদেশ (ডিও) পাওয়া গেছে। বিলি আদেশগুলোতে কালীগঞ্জ উপজেলার ৪নং নিয়ামতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ রনি লস্কর, ৬নং ত্রিলোচনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল হিজড়া ও ৮নং মালিয়াট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান খানের নামে বরাদ্দকৃত চাল। গত ১২ জুন চালগুলো বরাদ্দ দেওয়া হয় এবং এর মেয়াদ ছিল ৩০ জুন পর্যন্ত। এরমধ্যে চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ রনি লস্করের জন্য ২.৫ মেট্রিক টন, চেয়ারম্যান নজরুল হিজড়ার জন্য ৩ মেট্রিক টন ও আজিজুর রহমান খানের জন্য ২ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়।

উপজেলা অফিস সূত্রে জানা গেছে, কালীগঞ্জ খাদ্য গুদাম থেকে বের হওয়া এ চাল দরিদ্র মানুষের জন্য বিশেষ বরাদ্দের অংশ। ঈদের আগে যে চালগুলো গরীব মানুষদের দেওয়া হয়। আর এই চালগুলো কোরবানির ঈদের আগে দরিদ্র মানুষের মাঝে বিতরণের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল।

ভিডিওতে এক গাড়ির চালক বলেন, কালীগঞ্জ খাদ্য গুদাম থেকে চাল নিয়ে মহেশপুর উপজেলায় খালিশপুর বাজারের দীপু দাদার দোকানে নিয়ে যাচ্ছিলাম। আমার গাড়িটাই শেষ। এর আগে তিন গাড়ি গিয়েছে। মোট ৪ গাড়ি চাল বেরিয়েছে। প্রতি গাড়িতে ৬৬ বস্তা চাল।

ভিডিও ধারণ করা যুবক রাকিবুল ইসলাম রকি বলেন, গত শনিবার (১৫ জুন) বিকেল ৫টার দিকে সরকারি ভিজিএফের চাল নিয়ে যাওয়ার ভিডিওটি ধারণ করি। ৪টি গাড়িতে এ চাল নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দরিদ্র মানুষের জন্য বিশেষ বরাদ্দের এ চাল বিতরণ না করে বিক্রি করা হয়েছে।
৪নং নিয়ামতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ রনি লস্কর বলেন, বিষয়টি আমি জানিনা। খোঁজ নিচ্ছি।

শুক্রবার (২১ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টায় মুঠোফোনে ৬নং ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজরুল হিজড়ার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ফোনে আমি কিছুই বলবো না। আপনি সরাসরি ইউনিয়নে আসলে সব বলবো।

৮নং মালিয়াট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান খানের মোবাইলে ফোন দিলেও তিনি ধরেননি।
কালীগঞ্জ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মাহদী হাসান শিহাব বলেন, গত ১৫ জুন সরকারি বরাদ্দের চাল গুদাম থেকে দেওয়া হয়েছে। ডিও লেটার দেখালে আমরা চাল প্রদান করি। এখন এই চাল কে কোথায় বিক্রি করেছে সেটা আমি জানি না।

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইশরাত জাহান বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শাহরিয়ার/ফয়সাল

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়