ঢাকা     শনিবার   ০৬ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২২ ১৪৩১

বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি

খুলে দেওয়া হলো জাফলং ও রাতারগুল

সিলেট প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৩৫, ২৩ জুন ২০২৪   আপডেট: ১৯:৩৭, ২৩ জুন ২০২৪
খুলে দেওয়া হলো জাফলং ও রাতারগুল

জাফলংয়ের পিয়াইন নদী

আবহাওয়া স্বাভাবিক থাকায় সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং ও রাতারগুল পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়েছে। রোববার (২৩ জুন) উপজেলা পর্যটন কমিটি জাফলং পর্যটন কেন্দ্রগুলো চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়। এর আগে, গত শুক্র ও শনিবার দুই দফা গোয়াইনঘাটের সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইদুল ইসলামের নেতৃত্বে উপজেলা প্রশাসনের একটি টিম পর্যটন কেন্দ্রগুলো পরিদর্শন করেন। 

এদিকে, সিলেটের নদ-নদীর পানি ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে। ফলে নগরীর বহু এলাকায় বন্যার পানি সরে যেতে শুরু করেছে। সেসব এলাকার আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে পরিবার নিয়ে অবস্থান নেওয়া মানুষেরা বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন। 

গেয়াইনঘাট উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, জাফলং পর্যটন কেন্দ্র আসা যাত্রীদের নিরাপত্তা ঝুঁকি বিবেচনায় সব বোট মালিক, নৌ চালক-মাঝিদের পর্যাপ্ত লাইফ জ্যাকেটের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। জাফলংয়ের পিয়াইন নদীর গভীরতা ও পানির স্রোত বিবেচনায় সাঁতার জানে না এবং ১২ বছরের কম বয়সীদের নিয়ে জাফলং ট্যুরিস্ট স্পটে নৌকায় চলাচল করা যাবে না।  ট্যুরিস্ট পুলিশকে পর্যটন কেন্দ্রে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও সুরক্ষা বিধানের জন্য বলা হয়েছে।

গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘উপজেলার পর্যটন কেন্দ্রগুলো শর্তসাপেক্ষে রোববার দুপুর থেকে খুলে দেওয়া হয়েছে। পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটক, ট্যুর অপারেটর ও নৌকার মাঝিসহ সবাইকে অবশ্যই নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।’ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হওয়ায় গত ১৭ জুন সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দেয় প্রশাসন।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সূত্র জানায়, রোববার সন্ধ্যা ৬টায় সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে ২১ সেন্টিমিটার, কুশিয়ারা নদীর পানি আমলশীদ পয়েন্টে ৪০ সেন্টিমিটার, ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ৯৯ সেন্টিমিটার ও শেরপুর পয়েন্টে ৮ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কমা অব্যাহত থাকলে আজকের (রোববার) মধ্যেই আরো ২টি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার নিচে নেমে যাবে।

জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, রোববার সকাল পর্যন্ত ১৩টি উপজেলাসহ সিলেট সিটি করপোরেশনের ২৩টি ওয়ার্ডের ৮ লাখ ৫২ হাজার ৩৫৭ জন মানুষ পানিবন্দি ছিলেন। এরমধ্যে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ২৯টি ওয়ার্ড ও ১৩৬টি ইউনিয়ন বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এখনো ১৯ হাজার ৭৩৮ জন ৩৮৩ টি আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। সিলেট সদর, বিশ্বনাথ, ওসমানীনগর, কোম্পানীগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ, দক্ষিণ সুরমা, বালাগঞ্জ, জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, জকিগঞ্জ, বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জে এবার বন্যা দেখা দেয়।

সিলেট নগরীর শাহজালাল উপশহর, ঘাসিটুলা, মাছিমপুর, ছড়ারপার, তালতলা, কুয়ারপার, মেন্দিবাগ, কামালগড়, চালিবন্দর, যতরপুর, সোবহানীঘাট, কালীঘাট, শেখঘাট, তালতলা, জামতলা এলাকার পানি নেমে গেছে। ওইসব এলাকায় এখন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান চলছে।

সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী পরিচালক মো. সজিব হোসাইন বলেন, রোববার সিলেটের কোথাও বৃষ্টিপাত হয়নি। আগামী ২৮ জুন থেকে আরো বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। যেহেতু বর্ষা মৌসুম চলমান, আবহাওয়া যে কোনো সময় খারাপ হতে পারে।

সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান বলেন, বন্যা কবলিত এলাকা সমূহে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। পানি কমা ও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে পর্যটন স্পটগুলো পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে। 

নূর/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়