কেরুর ১৩ হাজার লিটার স্পিরিট গায়েব, তদন্ত কমিটি গঠন
চুয়াডাঙ্গা সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
চুয়াডাঙ্গার দর্শনাতে অবস্থিত ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ডিস্টিলারি বিভাগ থেকে ১৩ হাজার লিটার ডিএস স্পিরিট বিভিন্ন সময়ে গায়েব হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বুধবার (২৬ জুন) চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কর্তৃপক্ষ। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। ডিএস স্পিরিট মদ তৈরির অন্যতম কাঁচামাল। চুরি হওয়া স্পিরিটের অনুমানিক বাজার মূল্য ৩০ লাখ টাকা।
কেরুর ডিস্টিলারি বিভাগের বন্ডেট ওয়্যারহাউজের সহকারী ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত জাহাঙ্গীর হোসেন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগে বলেন, আমাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার সময় ডি/এস গোডাউন, ডিএস স্পিরিটের ৩ নম্বর ভ্যাট গোডাউন সরজমিনে গভীরতা ১০৯ ইঞ্চি। যার বাস্তবিক মজুত রয়েছে ৩৫ হাজার ৫১২ দশমিক ২৩ লিটার। হস্তান্তর তালিকায় মজুত দেখানো হয়েছে ৩৯ হাজার ৭১১ দশমিক ৫৫ লিটার। ৭ নম্বর ভ্যাট গোডাউনে সরজমিনে গভীরতা ৫৩ ইঞ্চি। যার বাস্তবিক মজুত রয়েছে ৪ হাজার ৮০৪ দশমিক ৩০ লিটার। কিন্তু, হস্তান্তর তালিকায় মজুত দেখানো হয়েছে ১৩ হাজার ৭৯৫ দশমিক ৭৩ লিটার। এছাড়া, ১০ নম্বর ভ্যাটে ৪ ইঞ্চি মালামাল কম আছে। তিন গোডাউনে বাস্তবিক মজুত অনুযায়ী ১৩ হাজার ১৯০ দশমিক ৭৫ লিটারের বেশি মালামাল কম থাকায় আমি দায়িত্ব গ্রহণ করিনি।
এ বিষয়ে জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘হিসাবের গরমিল থাকায় গত ২ মে দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানি ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করি। বিষয়টি কমিটির মাধ্যমে তদন্ত করা যেতে পারে বলে সুপারিশ করেন বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু না হওয়ায় ঘটনাটি ফাঁস হয়ে যায়।’
কেরু অ্যান্ড কোম্পানি চিনিকলের ডিস্টিলারি বিভাগের বন্ডেড ওয়্যারহাউস (ডিস্টিলারি ভাণ্ডার) বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্ত এ কে এম সাজেদুর রহমান বলেন, ‘জাহাঙ্গীর সাহেব দর্শনার দায়িত্ব বুঝে না নিয়ে কেরুর শ্রীমঙ্গল ওয়ারহাউজে গিয়ে বাড়তি দায়িত্ব পালন করছেন এবং উল্টাপাল্টা কথা বলছেন। তার কথা সঠিক না। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগও ভিত্তিহীন। বড় হাউজে ২/১শ’ লিটার সটেজ থাকতেই পারে।’
কেরু অ্যান্ড কোম্পানির চিনিকলের মহাব্যাবস্থাপক (প্রশাসন) মোহাম্মদ ইউসুফ আলী বলেন, ‘ডিস্টিলারি বিভাগের বন্ডেড ওয়্যারহাউস (ডিস্টিলারি ভাণ্ডার) থেকে কিছু মালামাল সটেজ হওয়ার অভিযোগে চিনিকল কর্তৃপক্ষ কেরু চিনি কলের জিএম-কে (প্রশাসন) প্রধান করে ৪ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।’
এবিষয়ে চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন বলেন, ‘তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। আশা করি সঠিক তদন্ত শেষে প্রাতিষ্ঠানিক আইনে অপরাধীর বিচার হবে।’
প্রসঙ্গত, কেরু অ্যান্ড কোম্পানি বাংলাদেশের অন্যতম বড় চিনিকল। উপজাত হিসেবে এই কারখানা থেকে মদও উৎপাদন করা হয়।
মামুন/মাসুদ