ঢাকা     সোমবার   ০১ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৭ ১৪৩১

বাঘায় আ.লীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় আরেক মামলা

রাজশাহী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:০৬, ২৮ জুন ২০২৪  
বাঘায় আ.লীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় আরেক মামলা

রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় আদালতে আরও একটি মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) বিকেলে আবুল কালাম (৩৫) নামের এক ব্যক্তি বাদী হয়ে রাজশাহীর জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-১ ও দ্রুত বিচার আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, গত ২২ জুন ঘটনার দিন তাদের পক্ষ থেকে থানায় মামলা করতে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাদের মামলা গ্রহণ করেনি। তিনি আদালতে মামলা করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। বাধ্য হয়ে ৫ দিন পর আদালতে মামলা করা হলো।

যদিও বাঘা থানার ওসি আমিনুল ইসলাম মামলা না নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। বাদিপক্ষের আইনজীবী জিয়াউর রহমান বলেন, মামলায় আসামি হিসেবে উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি শাহিনুর রহমানসহ ৩২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া আরও ১০০ থেকে ১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। আদালতের বিচারক মো. হাদিউজ্জামান মামলার আবেদনটি গ্রহণ করে তা এজাহার হিসেবে রেকর্ড করার জন্য বাঘা থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।

এর আগে গত ২২ জুন বাঘা উপজেলা সদরে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়। এতে উভয়পক্ষের অন্তত অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। এদের মধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল বুধবার (২৬ জুন) বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
রক্তক্ষয়ী এ সংঘর্ষের নেপথ্যে ছিল উপজেলা দলিল লেখক সমিতির বাড়তি টাকা আদায়কে সমর্থন দেওয়া বা না দেওয়া। ২০১৯ সাল থেকে বাঘায় স্থানীয় সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহরিয়ার আলমের পছন্দ অনুযায়ী দলিল লেখক সমিতির কমিটি গঠিত হয়। এই সংগঠনের নেতারা জমি কেনাবেচার সময় ক্রেতার কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করতেন।

এর প্রতিবাদে গত ২০ জুন দলিল লেখকদের একাংশ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। এই মানববন্ধনে একাত্মতা প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক লায়েব উদ্দিন লাভলু, পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আক্কাস আলী এবং পাকুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেরাজুল ইসলাম।

পরে ২২ জুন দলিল লেখক সমিতির দৌরাত্ম্য বন্ধের দাবিতে বাঘা উপজেলার সচেতন নাগরিকের ব্যানারে লাভলু, আক্কাস ও মেরাজুলের সমর্থকেরা বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে। পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে একই দিন বাঘা পৌরসভার মেয়র আক্কাস আলীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে মানববন্ধনের ডাক দেয় বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগ। পাল্টাপাল্টি এ কর্মসূচির জন্য দু’পক্ষের কর্মী-সমর্থকেরা উপজেলা চত্বরে জড়ো হলে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে দু’পক্ষের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়। গুরুতর আহত বাবুল মারা যান। তিনি আক্কাসের বিরুদ্ধে আয়োজন করা মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন।

আওয়ামী লীগের দুপক্ষের সংঘর্ষের পর সেদিনই দলিল লেখক সমিতির পক্ষ থেকে থানায় মামলা করা হয়। এ মামলায় এ পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর পাল্টা মামলা হিসেবে আদালতে নতুন মামলা করা হলো। এ মামলায় শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হননি।

আরও পড়ুন: বাঘায় সংঘর্ষে আহত আ.লীগ নেতা বাবুলের মৃত্যু

                 বাঘায় আ.লীগের ২ গ্ৰুপের সংঘর্ষ, আহত অর্ধশতাধিক

কেয়া/ফয়সাল

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়