ঢাকা     মঙ্গলবার   ০২ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৮ ১৪৩১

রিকশাচালককে মারধর, পুলিশ কর্মকর্তা ক্লোজড

নাটোর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৫৫, ২৯ জুন ২০২৪   আপডেট: ২২:৩৩, ২৯ জুন ২০২৪
রিকশাচালককে মারধর, পুলিশ কর্মকর্তা ক্লোজড

এএসআই সেলিম রেজা

নাটোরের সিংড়ায় এক অটোরিকশা চালককে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) সেলিম রেজার বিরুদ্ধে। এ ঘটনার ২ মিনিট ৫০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এরপর অভিযুক্ত সেলিম রেজাকে পুলিশ লাইন্সে ক্লোজড করা হয়েছে। শনিবার (২৯ জুন) এ তথ্য জানান সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম। 

গত বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) রাত ১১টার দিকে সিংড়া উপজেলা পরিষদ-সিংড়া বাস্ট্যান্ড রোডের দেশ ফার্নিচার দোকানের সামনে মারধরের ঘটনাটি ঘটে।

এএসআই সেলিম রেজা সিংড়া থানায় কর্মরত। আহত অটোরিকশা চালকের নাম হারুন আলী। তিনি সিংড়া পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাইশা গ্রামের বাসিন্দা। 

স্থানীয়রা জানান, রিকশাচালক হারুন আলী দমদমা থেকে সিংড়া বাসস্টান্ডে যাচ্ছিলেন। উপজেলা পরিষদ রোড়ের দেশ ফার্নিচার দোকানের সামনে পৌঁছালে এএসআই মো. সেলিম রেজা রিকশাটি থামান। এরপর এএসআই, এক পুলিশ কনস্টেবলসহ তিনজন হারুনের রিকশায় ওঠেন। এএসআই তাদের সিংড়া বাসষ্ট্যান্ডে নিয়ে যেতে বলেন রিকশাচালককে। চালক এএসআইকে বলেন, স্যার মিটারের তার সংযোগ লুজ হয়ে গেছে, গাড়ি যাচ্ছে না। অনেক কষ্টে আমি হাত দিয়ে তার ধরে এ পর্যন্ত এসেছি। অকেজো হওয়া এই রিকশা নিয়ে যাওয়া যাবে না।

এসময় অকথ্য ভাষায় চালককে বকাবকি করতে থাকেন তিনি। এক পর্যায় এএসআই ক্ষুদ্ধ হয়ে তার হাতে থাকা টস লাইট দিয়ে চালকের মাথায় আঘাত করেন তিনি। পরে আবারও দ্বিতীয় দফায় চালকে মারধর করতে দেখা গেছে। এসময় চালকের কান্নায় আশপাশের লোকজন জড়ো হলে তাদের ধমক দিয়ে সরিয়ে দেন এএসআই। এরপর চালক ওই এএসআইসহ তিনজন রিকশায় নিয়ে চলে যান।

ভুক্তভোগী অটোরিকশা চালক হারুন আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘রাতে দমদমায় আমার রিকশার মিটারের তার ছিঁড়ে যায়। আমি এক হাত দিয়ে তার চেপে অনেক কষ্টে বাসষ্ট্যান্ডে যাচ্ছিলাম। কোর্ট মাঠ পার হলে দুই পুলিশসহ তিনজন রিকশা থামায়। তারা আমাকে বলে, তোক সিগন্যাল দিলাম, তুই দাঁড়ালি না কেন। আমি বললাম, আমি বুঝতে পারিনি স্যার। আমার গাড়ির মিটারের একটি তার ছিঁড়ে গেছে, তাই মেরামত করতে সিংড়া বাসষ্ট্যান্ডে যাচ্ছিলাম। এসময় তিনজন আমার রিকশায় চড়ে বলে থানায় চল। এরপর আমাকে ওই পুলিশ অনেক মারধর করতে থাকেন। পরে নষ্ট গাড়িতে তিনজন উঠে জোর করে আমাকে দিয়ে টেনে সিংড়া বাসষ্ট্যান্ডে নিয়ে যান। আমরা গরিব মানুষ বলে আমাদের কোনো ইচ্ছা, সুবিধা-অসুবিধার মূল্য নেই।’

এ বিষয়ে এএসআই সেলিম রেজা জানান, ওই রিকশা চালককে তিনি মারধর করেননি। শুধু তাকে যেতে বলেছেন। এরপর তিনি ফোন কেটে দেন।

সিংড়া থানার ওসি আবুল কালাম বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলামের নির্দেশে এএসআই সেলিম রেজাকে পুলিশ লাইনন্সে ক্লোজড করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। 

নাটোরের পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘তদন্ত করে আইনগতভাবে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যে যতটুকু অপরাধ করবে তার সেটুকু বিচার হবে।’

আরিফুল/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়