ঢাকা     বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৯ ১৪৩১

পিরোজপুরে হত্যা মামলায় স্বামী-স্ত্রী-সন্তানসহ ৭ জনের যাবজ্জীবন

পিরোজপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৩৪, ১ জুলাই ২০২৪  
পিরোজপুরে হত্যা মামলায় স্বামী-স্ত্রী-সন্তানসহ ৭ জনের যাবজ্জীবন

পিরোজপুরের নাজিরপুরে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে জসীম খান (২৭) নামের যুবককে হত্যার দায়ে স্বামী, স্ত্রী, সন্তানসহ ৭ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন পিরোজপুর জেলা আদালত।

সোমবার (১ জুলাই) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. মোক্তাগীর আলম আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় দেন। একইসঙ্গে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেক আসামিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় অপর ১০ জনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন একই আদালত।

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- উপজেলার সদর ইউনিয়নের বুইচাকাঠী গ্রামের হাতেম আলী শেখের ছেলে দেলোয়ার শেখ (৪৮), হাসেম শেখের ছেলে আবুল শেখ (৫৮), মোজাম মল্লিকের ছেলে বাবুল মল্লিক (৪৯), আফসার আলী শেখের ছেলে সিরাজুল হক শেখ (৭১), সিরাজুল হক শেখের ছেলে রাজু শেখ (৩১), সিরাজুল হক শেখের স্ত্রী ফাতেমা বেগম (৫৮) ও বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার রসুল শেখের ছেলে জাফর শেখ (৫৮)।

খালাস পাওয়া আসামিরা হলেন- হাতেম আলী শেখের ছেলে জহুর শেখ, হাতেম আলী শেখের স্ত্রী হাজেরা খানম, আজিজ খানের ছেলে ইমারত খান, দেলোয়ার শেখের স্ত্রী রাবেয়া বেগম, হেমায়েত খানের ছেলে সোহাগ খান, সুমন খান, আবুল শেখের স্ত্রী মঞ্জু বেগম, বাবু মীর, আবদুর রব শেখ ও জাফর শেখ। এ ছাড়া মামলা চলাকালে রাজ্জাক মল্লিক ও হাতেম আলী শেখ নামে দুই আসামির মৃত্যু হয়।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের ২৫ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৭টার দিকে জসীম খান ও তার ভাই রাজু খান উপজেলার সদর ইউনিয়নের পাতিলাখালি গ্রামে নিজ বাড়ি থেকে বের হয়ে বাড়ির সামনের রাস্তায় যাওয়ার পথে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা আসামিরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা করে। এ সময় হামলাকারীরা জসীমকে দা দিয়ে কুপিয়ে হাতেম শেখের ঘরের বারান্দায় নিয়ে আটকে রাখে।

পরে নাজিরপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে জসীমকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে নাজিরপুর উপজেলা হাসপাতলে নিয়ে যায়। এসময় উপজেলা হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

এসময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে জহুর শেখ, দেলোয়ার শেখ, হাতেম আলী শেখ, সিরাজ শেখ ও রব শেখকে আটক করে। এ ঘটনায় ওই দিনই নিহত জসীমের ভাই রাজু খান বাদী হয়ে ২২ জনকে আসামি করে নাজিরপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে এ ঘটনায় ২০১১ সালের ৭ আগস্ট নাজিরপুর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল মালেক হাওলাদার ১৯ জনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট প্রদান করেন।

আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) জহুরুল ইসলাম জানান, ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত সকল আসামির উপস্থিতিতে আজ এই রায় দেন। মামলা চলাকালীন সময়ে দুই আসামির মৃত্যু হলে বাকি ১৭ আসামির উপস্থিতিতে মধ্যে ৭ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ জনকে খালাস দেন আদালত।

মামলার বাদী নিহত জসিম খানের ভাই রাজু জানান, তিনি তার ভাইয়ের হত্যার ন্যায় বিচার পেয়েছেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী কাজি ইলিয়াস হোসেন বলেন, এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট নই। তাই রায়ের বিপক্ষে উচ্চ আদালতে আপিল করবো।

তাওহিদুল/ফয়সাল

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়