ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ০৪ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২০ ১৪৩১

জমিদার বাড়ির স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণ দাবি

মো. মামুন চৌধুরী, হবিগঞ্জ  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৪২, ২ জুলাই ২০২৪   আপডেট: ১২:৫৭, ২ জুলাই ২০২৪
জমিদার বাড়ির স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণ দাবি

সদর উপজেলার লস্করপুর ইউনিয়নের গংগানগর জমিদার বাড়ি

হবিগঞ্জ সদর উপজেলার লস্করপুর ইউনিয়নের গংগানগর (তাতীনগর) জমিদার বাড়ির স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছে স্থানীয়রা।  
  
জানা গেছে, দুই শতাধিক বছর পূর্বে ঢাকার সোনারগাঁওয়ের বাসিন্দা গোপাল চন্দ্র দেব তাতীনগর প্রকাশ গংগানগরে এসে বিশাল এলাকা ক্রয় করে জমিদারি শুরু করেন।  তিনি (জমিদার গোপাল চন্দ্র দেব) চুনারুঘাট, বাহুবল ও হবিগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় জমিদারি করতেন। তার শাসনামলে প্রজারা শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে তাকে খাজনা দিতেন। তিনি ছিলেন-সৎ ও সাহসী ব্যক্তি। এছাড়া জমিদার বাড়িতে নানা সময়ে বিভিন্ন উৎসব হতো। আর বড় করে পালন করা হতো দুর্গাপূজা। বাড়িটিতে প্রতিদিন শত শত মানুষ খাবার খেতে পারতেন। অসহায় লোকদের আশ্রয়স্থল ছিলো এই বাড়ি। 

জমিদার গোপাল চন্দ্র দেব শত বছরে পা দিয়ে পরলোকগমন করেন। এরপর বাড়িটির দায়িত্ব নেন নবীন চন্দ্র দেব, সতিষ চন্দ্র দেব, দিনেশ চন্দ্র দেব, সুরেশ চন্দ্র দেবরা। পরে জমিদারি প্রথা বাতিল হয়ে যায়। তারপরও তারা ঐতিহ্যকে ধরে রেখে জমিদারি মনোভাব নিয়ে এলাকায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করেন। এছাড়া জমিদাররা ছিলেন শিক্ষানুরাগী। এ কারণে তারা শায়েস্তাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জমি দান করেছেন। তাদের ক্রয়কৃত শত শত একর জমি এখনও নানা লোকজনের ভোগ দখলে রয়েছে। এলাকার লোকজনের নিকট হতে ও অনুসন্ধানে এসব তথ্য পাওয়া যায়।

পরিদর্শনকালে জানা যায়, জমিদাররা কেউ বেঁচে নেই। তবে জমিদারি আমলে নির্মিত একটি প্রাচীন ভবন রয়েছে এই বাড়িতে। সংরক্ষণের অভাবে এ ভবনটির স্থানে স্থানে ফাটল ধরেছে। এ বাড়িতে জমিদারদের এক আত্মীয় বসবাস করছেন। আর বসবাস করছেন জমিদারের রেখে যাওয়া পছন্দের লোক বকুল চক্রবর্তী। তারা দুইজন ছাড়া এ বাড়িতে জমিদারদের আর কেউ থাকেন না। 

বকুল চক্রবর্তী জানান, জমিদারদের মায়া ছাড়তে না পেরে এ বাড়িতে বসবাস করে তাদের আদর্শ অনুসরণ করছি।

এলাকার বাসিন্দা সমাজসেবক শিক্ষক সমীরণ চক্রবর্তী শংঙ্কু জানান, এ বাড়ির জমিদাররা ছিলেন শান্তপ্রিয়। তাদের শাসনামলে এলাকার লোকজন শান্তিতে বসবাস করেছিলো। জমিদাররা অসহায় লোকজনকে নানাভাবে সহযোগীতা করেছেন। কিন্তু বর্তমানে একটি প্রভাবশালী চক্র বাড়িটির স্মৃতিচিহ্ন মুছে ফেলার চেষ্টায় লিপ্ত। আমরা গ্রামবাসী বাড়িটি রক্ষায় কাজ করছি।

লস্করপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বার হেলাল মিয়া জানান, এ বাড়ির ঐতিহ্য রয়েছে। এলাকার লোকেরা এ বাড়ির ঐতিহ্যের কথা এখনও মনে করে। আর তাই আমি জমিদারের স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণের দাবি জানাই। 

এলাকার বাসিন্দা জীবন বসাক বলেন, এ বাড়ির ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে হলে প্রাচীন আমলে নির্মিত ভবনটি সংস্কার করা প্রয়োজন।

/ইমন/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়