ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২১ ১৪৩১

ভুয়া এসআই পরিচয়ে ৮ বিয়ে

পিরোজপুর প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৪৬, ৩ জুলাই ২০২৪   আপডেট: ১১:৫৬, ৩ জুলাই ২০২৪
ভুয়া এসআই পরিচয়ে ৮ বিয়ে

চতুর্থ শ্রেণি পাশ, কিন্তু পরিচয় দেন পুলিশের এসআই গোয়েন্দা (ডিবি)। আবার মাঝে মাঝে ডিএসবি পরিচয় দিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করে লুটে নেয় টাকা, স্বর্ণসহ মূল্যবান সামগ্রী। সম্প্রতি ৮তম বিয়ে করেছেন তিনি। বলছি মো. মনির ওরফে আমিনুল ইসলাম নামের এক প্রতারকের কথা। তিনি উপজেলার শাঁখারীকাঠী ইউনিয়নের ঘোপের খাল গ্রামের ময়ূর শেখের ছেলে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মনির সম্প্রতি রোকেয়া আক্তার দীনা (৪৮) নামে এক নারীকে প্রতারণা করে বিয়ে করেন। দুই বছর ধরে ভুয়া পুলিশের এসআই পরিচয় দিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ৮ম তম বিবাহ করেন তাকে। দীনার বর্তমান বাড়ি ঢাকার শ্যামপুর থানার ধোলাইপাড় এলাকার যুক্তিবাদী মসজিদ সংলগ্ন এলাকার। মূলত দীনা গোপালগঞ্জ জেলার টুংগীপাড়া উপজেলার বাঁশবাড়িয়া গ্রামের মৃত আব্দুল মোতালেব শেখের মেয়ে। দিনার পূর্বের স্বামী মৃত আলমগীর হোসেন, তিনি করোনাকালী সময় মারা যান। তার বাড়ি ঢাকার বিক্রমপুর এলাকায়। দীনার রয়েছে ঢাকার শ্যামপুরে রয়েছে নিজস্ব বাড়ি।

ভুক্তভোগী দীনা জানান, স্বামী নিয়ে অনেক বছর কুয়েতে ছিলেন। ৫ কন্যার জননী দীনা করোনাকালীন সময়ে দেশে ফিরলে স্বামী আলমগীরের মৃত্যু হয়। কন্যাদের বিয়ে দিয়ে তিনি একা হয়ে পড়েন। এমন সময়ে পরিচয় হয় প্রতারক আমিনুল ইসলামের সাথে। মেয়েদের সাথে আলোচনা করে একাকীত্ব দূর করতে পরিচিত আমিনুল ইসলামকে বিয়ে করেন তিনি। বিয়ের পরেই জানতে পারেন মনিরের নানা প্রতারণার কথা। মনির নানা সময় বিভিন্নভাবে তার কাছ থেকে নগদ অর্থ, ব্যবহৃত সোনা ৩ ভরি, বাড়ির দলিল, বিয়ের কাবিননামাসহ মোট ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন।

তিনি আরও জানান, গত ২৫ জুন আমাকে মালামাল, টাকা, সোনা নিয়ে নাজিরপুর আসতে বললে আমি সেখানে যাই। সেদিন রাতে মনির আমার ওপর নির্মম অত্যাচার চালায়। আমাকে মেরে রাতে রাস্তায় ফেলে রাখে। স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে ভ্যানচালকের মাধ্যমে মনিরের বাড়ির খোঁজ পেয়ে সেখানে যাই। গিয়ে তার বিয়ের বিষয়গুলো জানতে পারি। 

মনিরের বাবা মো. ময়ুর শেখ বলেন, আমার ছেলে একজন প্রতারক। এইভাবে একে একে আট বিয়ে করেছে। আর বিয়ের পর তাদের কাছ থেকে টাকা পয়সা রেখে মারধর করে তাড়িয়ে দেয়। প্রথম স্ত্রী দুই সন্তানসহ ঢাকায় কাজ করেন। 

স্থানীয় ইউপি সদস্য জাকির হোসেন হাওলাদার বলেন, ঘটনাটা শুনে ওই বাড়িতে গিয়ে এর সত্যতার প্রমাণ মেলে। আমিনুল ইসলাম পলাতক থাকায় তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে তার মা-বাবাকে বলেছি বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য। আমি চাই ওই ছেলের বিচার হোক। 

নাজিরপুর থানার পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম হাওলাদার বলেন, বিষয়টি মৌখিকভাবে শুনেছি, তবে কোনো অভিযোগ পাইনি। কেউ অভিযোগ করলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তাওহিদুল/ইমন

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়