ঢাকা     শনিবার   ০৬ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২২ ১৪৩১

কুমিল্লা বিসিক এলাকার সড়কে বৃষ্টিতেই জমে পানি, ঘটে দুর্ঘটনা

কুমিল্লা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:২০, ৩ জুলাই ২০২৪  
কুমিল্লা বিসিক এলাকার সড়কে বৃষ্টিতেই জমে পানি, ঘটে দুর্ঘটনা

কুমিল্লায় বাংলাদেশ ক্ষদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) শিল্পনগরী এলাকার সড়কটি ভাঙাচোরা। গর্ত ও খনাখন্দে ভরা সড়কটিতে সামান্য বৃষ্টি হলেই জমে হাঁটুপানি। আবর্জনা জমে নালা দিয়ে পানি বের হতে না পারার কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান ট্রাক চালকও  স্থানীয়রা। তারা জানান, সড়কে জলাবদ্ধতার কারণে তাদের কাপড় নষ্ট হচ্ছে, শরীর চুলকায়। পাশাপাশি এখানে বিভিন্ন পণ্য নিয়ে যাতায়াতকারী গাড়ির চালকরা পানিতে তলিয়ে থাকা গর্ত দেখতে না পাওয়ার কারণে বিপাকে পড়েন। 

বিসিক শিল্পনগরী সূত্র জানায়, কুমিল্লা অঞ্চলে শিল্পের প্রসার ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য ১৯৬০-৬১ সালে নগরের অশোকতলা এলাকায় বিসিক শিল্পনগরী প্রতিষ্ঠা করা হয়। ৫৪ দশমিক ৩৫ একর জমিতে গড়ে ওঠা এই শিল্পনগরীতে ১৪১টি শিল্প প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৩০টি প্রতিষ্ঠান উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। গত অর্থ বছরে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার পণ্য উৎপাদন হয়েছে এখানে। জলাবদ্ধতার কারণে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পণ্যবাহী পরিবহন সড়ক ভাঙাচোরা থাকায় চলাচলের ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হয়। বিভিন্ন সময়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে গাড়িগুলো। 

বুধবার (৩ জুলাই) সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, সামান্য বৃষ্টিতে বিসিক এলাকার প্রবেশপথের মূল সড়কটি পানিতে তলিয়ে গেছে। বিভিন্ন কারখানায় যাওয়া শ্রমিকদের পানির ওপর দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। পণ্য নিয়ে শিল্পনগরী থেকে আসা গাড়ি খুব সাবধানে চালাতে দেখা গেছে চালকদের।  

পণ্য নিয়ে আসা ট্রাকচালক সিরাজ মিয়া বলেন, ‘পানির কারণে তো রাস্তা দেখাই যায় না। যে কারণে গাড়ি চালাতে অসুবিধা হচ্ছে। কোথায় গর্ত আছে সেটাই বুঝাতে পারছি না। গর্তে পড়ে কখন গাড়ির চাকা আটকে যায় সেই চিন্তায় থাকি। সড়কের এই অবস্থা দেখার কী কেউ নেই?’ 

পথচারী শিরিনা আকতার বলেন, ‘সামান্য বৃষ্টি হলেই হাঁটু সমান পানি জমে সড়কটিতে। ময়লা পানি দিয়ে চলাচল করতে হয় প্রতিদিন। পানি লেগে পা চুলকায়। জমে থাকা পানিতে জামাকাপড়ও নষ্ট হয়। সড়কটি দ্রুত মেরামত করা প্রয়োজন। পাশাপাশি জমে থাকা জানি যাতে দ্রুত নিষ্কাশন করা যায় সে ব্যবস্থা করতে হবে কর্তৃপক্ষকে।’ 

কুমিল্লা ফ্লাওয়ার মিলের ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বে থাকা বিক্রম চন্দ্র দাস বলেন, ‘জলাবদ্ধতার কারণে পণ্য আনা নেওয়া করতে অসুবিধা হচ্ছে। আমাদের উৎপাদনে খরচের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে পণ্য উৎপাদন করাই তো দায় হয়ে দাঁড়াবে।’

কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আব্দুর রহমান বলেন, ‘আমি সিটি করপোরেশনের মেয়র মহোদয়ের সঙ্গে কয়েকবার এ বিষয়ে কথা বলেছি। তিনি আমাকে জানিয়েছেন যে, এটা সিটি করপোরেশনের অধীনে নয়। বিসিক সড়কটি শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে। বিসিক কর্তৃপক্ষ এই সড়কটি সংস্কার করবে। আমি বিসিক কর্তৃপক্ষকে কয়েকবারই ড্রেন সংস্কারের কথা বলেছিলাম। কিন্তু তারা কাজটি আজ পর্যন্ত করেনি। আমরা চেষ্টা করছি সমস্যাটি সমাধান করার।’ 

কুমিল্লা বিসিকের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. মুনতাসীর মামুন বলেন, ‘নগরীর বিভিন্ন অঞ্চলের পানি বিসিক শিল্প নগরী হয়ে নামে। পানি নিষ্কাশনের জন্য পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে বিসিক এলাকার রাস্তা ও ড্রেনের অর্ধেক কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। বাকি রাস্তা ও ড্রেনের কাজ করতে প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বিসিকের রাস্তা ও ড্রেনের কাজ সম্পন্ন হলে জলাবদ্ধতা থাকবে না।’ 

কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী জি.পি চৌধুরী বলেন, ‘বিসিকের রাস্তাগুলো মূলত বিসিকই দেখাশোনা করে। এগুলোর কাজ শিল্পমন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে হয়। তারপরেও আমরা কাজটি দ্রুত করার জন্য বিসিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেছি। বিসিক ও সিটি করপোরেশন সমন্বয় করে খুব দ্রুতই কাজটি সম্পন্ন হবে।’

রুবেল/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়