ঢাকা     সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  পৌষ ৮ ১৪৩১

সিট বাণিজ্যের অভিযোগ, ছাত্রলীগ সভাপতিসহ বহিষ্কার ৬

রাজশাহী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৩২, ৫ জুলাই ২০২৪   আপডেট: ১৫:৫৬, ৫ জুলাই ২০২৪
সিট বাণিজ্যের অভিযোগ, ছাত্রলীগ সভাপতিসহ বহিষ্কার ৬

সিট বাণিজ্যের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় রাজশাহী ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) ছয় শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। এদের মধ্যে আইএইচটি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতিও রয়েছেন। তাদের সব একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রাখার পাশাপাশি ক্যাম্পাসে প্রবেশ এবং হোস্টেলে অবস্থানের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) বিকেলে নোটিস আকারে বিষয়টি প্রকাশ করে আইএইচটি কর্তৃপক্ষ। আইএইচটির অধ্যক্ষ ডা. ফারহানা হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- আইএইচটি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আল আমিন হোসেন (ডেন্টাল অনুষদ ২০১৯-২০), মাসুদ পারভেজ (ডেন্টাল বি গ্যালারি ২০২৩-২৪), ফারহান হোসেন (ডেন্টাল বি গ্যালারি ২০২৩-২৪), শাহরিয়ার নাফিজ (ল্যাব এ গ্যালারি ২০২৩-২৪), পারভেজ মোশাররফ (ল্যাব এ গ্যালারি ২০২৩-২৪) ও নিলয় কুমার (রেডিওলজি এ গ্যালারি ২০২৩-২৪)। এদের মধ্যে আল আমিনকে এক বছরের জন্য এবং বাকিদের ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।

আরো পড়ুন:

এছাড়া, একই শিক্ষাবর্ষের (ফার্মেসি) সিফাতকে তিরস্কার ও ভবিষ্যতে এ ধরনের কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকতে সতর্ক করা হয়েছে। আর ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী (ফার্মেসি) হাসানকে প্রশাসনকে না জানিয়ে হোস্টেলের সিটের জন্য অন্যদের সঙ্গে টাকা লেনদেনের জন্য তিরস্কারের পাশাপাশি সতর্ক করা হয়।

নোটিসে জানানো হয়, শাস্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে আল আমিন (ছাত্রলীগের সভাপতি) প্রথম বর্ষের ছাত্র হাসানের কাছ থেকে হোস্টেলের সিট দেওয়ার নামে অর্থ গ্রহণ করেন। অপর পাঁচ শিক্ষার্থী (ছাত্রলীগ কর্মী) হাসানকে মারধর করেন। এরপর তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে ৬ জুন একাডেমিক সভায় শাস্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই আদেশ কার্যকর হয়েছে ১ জুলাই থেকে।

জানতে চাইলে ছাত্রলীগ সভাপতি আল আমিন জানান, আইচটির অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে তিনি নোটিস দেখেছেন। তিনি এখনো ক্যাম্পাস ও হোস্টেলে অবস্থান করছেন। শাস্তির কোনো চিঠি পাননি।

জানা গেছে, গত ২৯ এপ্রিল আইএইচটির ফার্মেসি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী হাসানকে মারধর করা হয়। আহত অবস্থায় তাকে ভর্তি করা হয় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। এ ঘটনায় ১ মে থেকে আইএইচটি ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করে ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি হয়। কমিটি প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হলো।

অভিযোগ ছিল, হাসান নামের ওই শিক্ষার্থী হোস্টেলের সিটের জন্য আইএইচটি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আল আমিনকে ১৬ হাজার টাকা দেন। এরপরও তিনি সিটের ব্যবস্থা করেননি। ঘটনার দুই দিন আগে তিনি সভাপতির কাছে টাকা ফেরত চান। টাকা না দিয়ে সভাপতি তাকে উল্টো হুমকি দেন। সবশেষ ২৯ এপ্রিল হাসান প্রথম গ্যালারিতে ক্লাস করছিলেন। ক্লাস শেষে হলে পাঁচ-সাতজন ছেলে এসে তাকে ডেকে নিয়ে মারধর করেন। হাসানের মতো আরও বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী সেসময় ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ করেন।

আইএইচটির অধ্যক্ষ ডা. ফারহানা হক বলেন, এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি করা হয়েছিল। সেই কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে একাডেমিক কাউন্সিল সভায় শাস্তির সিদ্ধান্ত হয়। শাস্তিপ্রাপ্তরা ক্যাম্পাসে থাকতে পারবেন না।

কেয়া/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়