ঢাকা     সোমবার   ০৮ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২৪ ১৪৩১

কেন্দ্রের নেতাদের প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকায় রাজশাহী আ.লীগে দুই বলয়

শিরিন সুলতানা কেয়া, রাজশাহী || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৫৫, ৫ জুলাই ২০২৪   আপডেট: ১৮:১৩, ৫ জুলাই ২০২৪
কেন্দ্রের নেতাদের প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকায় রাজশাহী আ.লীগে দুই বলয়

এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও ডানে আবদুল ওয়াদুদ দারা

রাজশাহীতে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে আওয়ামী লীগ। কয়েক বছর ধরেই চলে আসা এ বিভক্তি সম্প্রতি আরও বেড়েছে। দলের দুই বলয়ের নেতারা সুযোগ পেলেই বাগযুদ্ধে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে ব্যস্ত। কেউ কেউ করে ফেলছেন বেফাঁস মন্তব্যও। ফলে রাজনীতির মাঠে আওয়ামী লীগের মধ্যেই উত্তাপ ছড়াচ্ছে। 

এদিকে, সংকট নিরসনে কেন্দ্রের কোনো উদ্যোগ নেই। রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা একটি বলয়কে প্রশ্রয় দিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকার কারণে দ্বন্দ্ব নিরসন হচ্ছে না।

রাজশাহীর ছয়টি সংসদীয় আসনের মধ্যে রাজশাহী-১ আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী, রাজশাহী-৪ আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ, রাজশাহী-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী আবদুল ওয়াদুদ দারা এবং রাজশাহী-৬ আসনের সংসদ সদস্য এবং সাবকে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম জোটবদ্ধ হয়ে আলাদা বলয় তৈরি করেছেন। তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মীর ইকবাল। এ বলয়ের নেতৃত্বে রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ দারা।

আরও পড়ুন: নেপথ্যে দলিল লেখক সমিতি, লাশ নিয়ে অপরাজনীতি চায় না পরিবার

অপর বলয়ে আছেন- দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, রাজশাহী-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান বাদশা, রাজশাহী-৩ আসনের সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান আসাদ, রাজশাহী-৪ আসনের সাবেক সাবেক সাবকে সংসদ সদস্য এনামুল হক, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী কামাল ও জেলার সভাপতি অনিল কুমার সরকার। রাজশাহী-১, ৪, ৫ ও ৬ আসনের সংসদ সদস্য বিরোধী স্থানীয় নেতারাও এ বলয়ে যুক্ত।

সংকটের শুরু আসাদের মুখে:
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-৩ আসন থেকে প্রথমবার সংসদ সদস্য হওয়া আসাদুজ্জামান আসাদ আগে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। সে সময় যেখানেই স্থানীয় সংসদ সদস্যদের কাছে ত্যাগী ও প্রবীণ নেতাদের কোণঠাসা হতে দেখেন, সেখানেই সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে থাকেন। তিনি রাজশাহী-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী এবং রাজশাহী-৩ আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিনকে ‘রাজাকারপুত্র’ বলে সম্বোধন করতে থাকেন।

‘ঠোটকাটা’ আসাদ সে সময় জেলার প্রতিটি উপজেলায় তৃণমূলের নেতাকর্মীদের কাছে জনপ্রিয়তা পান। এই জনপ্রিয়তাকে ভর করে ২০১৬ সালের জেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী সরকারকে চেয়ারম্যান প্রার্থী করেন। তার কাছে পরাজিত হন দলের প্রবীণ নেতা মাহবুব জামান ভুলু। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ভুলুকে দলীয় প্রার্থী করেছিল। আসাদের অনুসারী তৎকালীন রাজশাহী-৪ আসনের সংসদ সদস্য এনামুল হক এ নির্বাচনে মোহাম্মদ আলীর পক্ষে ছিলেন।

নির্বাচনের পর থেকেই আসাদের সঙ্গে সংসদ সদস্যদের দূরত্ব বাড়তে থাকে। ২০১৯ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে আসাদ সভাপতি প্রার্থী হন। তবে, তাকে সভাপতি করা হয়নি। ওই সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক হন আসাদ বিরোধী নেতা আবদুল ওয়াদুদ দারা। এবার কোণঠাসা হয়ে আসাদ দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের কাছাকাছি আসেন। ফলে আসাদবিরোধী সংসদ সদস্যরা লিটনবিরোধী মনোভাব শক্ত করেন।

আসাদ আগে থেকেই রাজশাহী-৩ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি মনোনয়নবঞ্চিত হলেও লিটনের কাছে আসার পর এবার তিনি মনোনয়ন পান। এই আসনে মনোনয়নবঞ্চিত হন লিটনবিরোধী আয়েন উদ্দিন। তিনি এখন লিটনবিরোধী প্রতিমন্ত্রী আবদুল ওয়াদুদ দারা ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের বলয়ে রাজনীতি করছেন।

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকারের একটি আপত্তিকর ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। তখন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী কামালসহ লিটন অনুসারী নেতাকর্মীরা তার বহিষ্কার চেয়ে কর্মসূচি পালন করেন। বেকায়দায় পড়ে ডাবলু তখন লিটনবিরোধী জেলার নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ান।

রাজশাহী আওয়ামী লীগের এমন বিভক্তির বিষয়ে কথা বলতে সাবেক প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও প্রতিমন্ত্রী আবদুল ওয়াদুদ দারাকে ফোন করা হলে তারা কল ধরেননি। মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার মন্তব্য করতে চাননি।

দ্বন্দ্ব বাড়ে নির্বাচনে:
২০২২ সালের অক্টোবরের জেলা পরিষদ নির্বাচনে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হন দলটির মহানগরের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকারের দুলাভাই মীর ইকবাল। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে তাকে টেক্কা দেন আসাদ অনুসারী আখতারুজ্জামান আক্তার। ফলে দ্বন্দ্ব আরও বাড়ে। এই নির্বাচনে আগেরবারের মতোই দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে ছিলেন আসাদ অনুসারী রাজশাহী-৪ আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য এনামুল হক। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে এনামুল মনোনয়নবঞ্চিত হন।

এই আসনে মনোনয়ন পান বিপরীত বলয়ের আবুল কালাম আজাদ। তার সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে পরাজিত হন এনামুল হক। রাজশাহী-৩ আসনে আসাদ মনোননয়ন পান। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েও পরে প্রত্যাহার করেন বিপরীত বলয়ের নেতা আয়েন উদ্দিন। রাজশাহী-১ আসনে মনোনয়ন পান আসাদবিরোধী ওমর ফারুক চৌধুরী। তার বিপক্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে যান আসাদ অনুসারী সাবেক পৌর মেয়র গোলাম রাব্বানী। আসাদের নেতাকর্মীরা তাকে সমর্থন দেন।

রাজশাহী-২ আসনে ১৪ দলের প্রার্থী হিসেবে নৌকা পান ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা। তিনি পরাজিত হন লিটন অনুসারী স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুর রহমান বাদশার কাছে। নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার বাদশার পক্ষে মাঠে নামলেও তাকে জেতাতে পারেননি। রাজশাহী-৫ আসনে মনোনয়নবঞ্চিত হন আসাদ অনুসারী তৎকালীন সংসদ সদস্য ডা. মনসুর রহমান। মনোনয়ন পান আসাদবিরোধী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ দারা। ভোটে জিতে তিনি প্রতিমন্ত্রীও হয়েছেন। এ আসনেও আসাদপক্ষের সমর্থন নিয়ে দারার সঙ্গে লড়াই করেন ওবায়দুর রহমান।

রাজশাহী-৬ আসনে টানা চতুর্থবারের মতো মনোনয়ন পান আসাদবিরোধী শাহরিয়ার আলম। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী হন আসাদের অনুসারী সাবেক সংসদ সদস্য রাহেনুল হক। সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-৩ ছাড়া সবগুলো আসনেই স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন। এ নিয়ে দুই বলয়ের দ্বন্দ্ব আরও বাড়ে। এরই মধ্যে সদ্য সমাপ্ত উপজেলা নির্বাচনে রাজশাহীর ৮ উপজেলাতেই দুই বলয়ের প্রার্থীরা লড়াই করেছেন। এই নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব প্রকট হয়েছে। উপজেলা ও সংসদ নির্বাচনের আগে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে শাহরিয়ার ও দারাসহ তাদের অনুসারীরা লিটনের পক্ষে মাঠে নামেননি। কেন্দ্রের নেতারাও কাউকে মাঠে নামাতে পারেননি। অনেকটা একা ভোটের বৈতরণী পার হন লিটন।

জানতে চাইলে খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের নিয়ে আমি কথা বলতে চাই না। তবে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে রাজশাহীর কয়েকজন সংসদ সদস্য আমার পরাজয় চেয়েছিলেন। তারা সব সময় আমাকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত। বাঘায় বাবুল হত্যার পর শাহরিয়ার আলম প্রকাশ্যে আমার ওপর দায় চাপিয়ে মামলা করতে চাইলেন। অথচ এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অতীত কোনো ইতিহাস আমার নেই। আমিও এর বিচার চাই।’

উপজেলায় যা হলো:
গোদাগাড়ী উপজেলায় স্থানীয় সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে সমর্থন দিয়েছিলেন জাহাঙ্গীর আলমকে। সংসদ সদস্যের বলয়ের বেলাল উদ্দিন সোহেল প্রার্থী হয়ে বিজয়ী হন। তিনি এখন যোগ দিয়েছেন লিটনের বলয়ে। তানোরে সংসদ সদস্য ফারুকের দেওয়া প্রার্থী লুৎফর হায়দার রশীদ ময়নার বিরুদ্ধে লড়াই করে পরাজিত হন আসাদের অনুসারী আব্দুল্লাহ আল মামুন।

পবায় সাবেক সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিনের প্রার্থী এমদাদুল হক পরাজিত হন সংসদ সদস্য আসাদের প্রার্থী ফারুক হোসেন ডাবলুর কাছে। একইভাবে মোহনপুরে আয়েনের প্রার্থী আল মমিন শাহ গাবরু পরাজিত হন আসাদের প্রার্থী আফজাল হোসেন। বাগমারায় সাবেক সংসদ সদস্য এনামুল হকের প্রার্থী আবদুর রাজ্জাক সরকার ওরফে আর্ট বাবু পরাজিত হন সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের প্রার্থী জাকিরুল ইসলাম সান্টুর কাছে। পুঠিয়ায় স্থানীয় সংসদ সদস্য আবদুল ওয়াদুদ দারার অনুসারী আবদুস সামাদ বিজয়ী হয়েছেন। হেরেছেন আসাদের অনুসারী আহসানুল হক মাসুদ। 

দুর্গাপুরে দারার দেওয়া প্রার্থী শরিফুজ্জামান শরিফ বিজয়ী হয়েছেন আসাদ অনুসারী আবদুল মজিদের বিপক্ষে। চারঘাট উপজেলায় বিজয়ী হয়েছেন সংসদ সদস্য শাহরিয়ারের অনুসারী মাহমুদুল হাসান। পরাজিত প্রার্থী ফখরুল ইসলাম এতোদিন শাহরিয়ারের সঙ্গে থাকলেও এখন লিটন-আসাদের বলয়ে ভিড়েছেন। বাঘায় শাহরিয়ার আলমের অনুসারী রোকনুজ্জামান রিন্টু হেরেছেন লিটন-আসাদ বলয়ের প্রার্থী লায়েব উদ্দিন লাভলুর কাছে। এই উপজেলায় নির্বাচনের পর হত্যাকাণ্ডের ঘটনাও ঘটেছে। প্রাণ হারিয়েছেন শাহরিয়ার অনুসারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল। অন্য সবগুলো উপজেলায় দুই বলয়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে চাপা উত্তাপ রয়েছে।

কেন্দ্রীয় নেতাদের ইন্ধনের অভিযোগ:
রাজশাহী জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাজশাহী আওয়ামী লীগে অস্থিরতা চললেও দ্বন্দ্ব নিরসনে কেন্দ্রের কোনো ভূমিকা নেই। কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা একটি বলয়কে ইন্ধন দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। জাতীয় চার নেতার সন্তান এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনকে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী ভেবে তাদের এমন ভূমিকা।

নেতাকর্মীরা জানান, সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন জাতীয় নেতার সন্তান হিসেবে দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্নেহভাজন। এ জন্য কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেকেই তাকে প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবেন। খায়রুজ্জামান লিটন একমাত্র শেখ হাসিনা ছাড়া অন্য কারও মুখাপেক্ষী হন না বলে কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে তিনি অনেকটাই একা। এ সুযোগে লিটনের বিরোধী স্থানীয় নেতারা কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে রাজনৈতিক সখ্যতা গড়ে তুলেছেন। ফলে তাঁরা বেফাঁস কথা বলা লিটনবিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেন না।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অনিল কুমার সরকার বলেন, ‘রাজশাহীতে কাদের জন্য কী ঘটছে তা সবাই জানে। এখন আমরা দলীয় সভানেত্রীর দিকে চেয়ে আছি। তিনি এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন।’

মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী কামাল বলেন, ‘গত ৯ মার্চ রাজশাহীর সাহেববাজারে প্রতিমন্ত্রী আবদুল ওয়াদুদ দারার সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের মঞ্চে বক্তব্য দেওয়ার সময় জেলার সভাপতি অনিল কুমার সরকারকে অশ্লীল ভাষায় গালি দেন সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ। ২৭ জুন বাঘায় আশরাফুল ইসলাম বাবুলের জানাজা থেকে তাকে বের করে দেওয়া হয়। স্থানীয় সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলম একজন উপজেলার সভাপতি হয়ে প্রেসিডিয়াম মেম্বার খায়রুজ্জামান লিটনকে নিয়ে অত্যন্ত আপত্তিকর কথা বলেন। এগুলো আমরা কেন্দ্রে জানিয়েছি। কিন্তু, কেন্দ্র কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। কেনো নেয়নি তার উত্তর আমার কাছে নেই।’

একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে বলেছেন, আওয়ামী লীগের রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল, বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান ও যুগ্ম সম্পাদক ডা. দীপু মনি রাজশাহীর শাহরিয়ার-দারা বলয়কে আলাদা খাতির করেন। সম্প্রতি দীপু মনি এই বলয়ের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের বাড়িতে একরাত থেকেও গেছেন।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল বলেন, ‘কোথাও আমি “আমার লোক” তৈরির দিকে মনোযোগ দেই না। আমি সব সময় শান্তির পক্ষে। কেউ বলতে পারবে না কোথাও পক্ষপাতিত্ব করেছি। এখন রাজশাহীতে যেসব ঘটনা ঘটছে, সেগুলো আমরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। বাঘার বাবুল হত্যার পর আমি দুই পক্ষের সঙ্গেই কথা বলেছি। সবাইকে সংযত হয়ে কথা বলার অনুরোধ জানিয়েছি। অচিরেই দুই পক্ষকে নিয়ে বসে সমস্যাগুলোর সমাধান করা হবে। আমরা সে চেষ্টা করছি।’

আরও পড়ুন: 

শাহরিয়ার আলমকে ষড়যন্ত্রকারী বললেন আ.লীগের নেতারা 

শাহরিয়ার আলমকে বহিষ্কার চেয়ে সড়কে মুক্তিযোদ্ধারা

রাজশাহীতে শাহরিয়ারকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা, কুশপুত্তলিকা দাহ

বাঘায় আ.লীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় আরেক মামলা

বাবুলের জানাজায় সভাপতি লাঞ্ছিত, শাহরিয়ারের বক্তব্য নিয়ে রাজশাহীতে উত্তাপ

 বাঘায় সংঘর্ষে আহত আ.লীগ নেতা বাবুলের মৃত্যু

মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়