ঢাকা     শনিবার   ০৫ অক্টোবর ২০২৪ ||  আশ্বিন ২০ ১৪৩১

রংপুরে ফুলে উঠেছে তিস্তা, ৫ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি 

রংপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৫৮, ৬ জুলাই ২০২৪   আপডেট: ১১:০০, ৬ জুলাই ২০২৪
রংপুরে ফুলে উঠেছে তিস্তা, ৫ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি 

টানা বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে রংপুরের গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া ও পীরগাছায় তিস্তা নদীর পানি তৃতীয় দফায় বৃদ্ধি পেয়েছে। রংপুরের কাউনিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার নিচে থাকলেও নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে তিন উপজেলার প্রায় পাঁচ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

এদিকে তিস্তার তীব্র স্রোতে নদীর তীরবর্তী এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত প্রায় শতাধিক ঘরবাড়ি নদী ভাঙনের কবলে পরেছে। এছাড়াও অনেকেই ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন।

শনিবার (৭ জুলাই) সকালে রংপুরের গংগাচড়ার উপজেলার পূর্ব ও পশ্চিম ইচলি, বাকডোরা এলাকাসহ বেশ কিছু তিস্তার তীরবর্তী এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এসব এলাকার নিম্নাঞ্চলে বেশ কিছু ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। পানিবন্দি পরিবারগুলো বলছেন, ক্ষণে ক্ষণে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে আবার কমছে। এই দেখছেন পানি নেমে গেছে আবার পানি এসে ভরে যাচ্ছে। এ অবস্থা সপ্তাহ ধরে চলছে। এছাড়াও গত ১৫ দিনের বেশি সময় ধরে তিস্তা নদীর পানি বাড়া-কমার মধ্যে রয়েছে। প্রতিদিন তিস্তা নদীতে ৫ থেকে ৬ সেন্টিমিটার পানি বাড়ে, আবার কমে যাচ্ছে। এতে নিম্নাঞ্চলের মানুষেরা পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ইতোমধ্যে নদী তীরবর্তী এলাকার বাদাম, পাটসহ শাক-সবজির ক্ষেত ডুবে গেছে। 

এদিকে গতকাল শুক্রবার থেকে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় গঙ্গাচড়া উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের ৩ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। এছাড়াও কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া, হারাগাছ, শহীদবাগ ও টেপামধুপুর এবং পীরগাছা উপজেলার পাওটানা ছাওলা, তাম্বুলপুরসহ বিভিন্ন স্থানের নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করেছে। এতে দুই উপজেলার প্রায় দুই শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে অনেক ফসলি ক্ষেত। 

গঙ্গাচড়া উপজেলার নোহালীর চর এলাকার মো. শমসের জানান, নদীর পানি বাড়া-কমার মধ্যে থাকলেও বন্যার পানি থেকেই যায়। বাড়ির পাশ দিয়ে নদীর পানি যাচ্ছে আর এলাকা ভাঙছে। আমাদের সব জমি নদী ভাঙনে চলে গেলো। এখন কি করে চলবে তা নিয়ে চিন্তায় আছি। 

কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনছার আলী জানান, আমার ইউনিয়নের গদাই এলাকার বেশ কিছু ঘরবাড়ি ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে। ইতিমধ্যে ওই এলাকার ৬-৭টি ঘর অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে পরিবারগুলো। এছাড়াও ঢুষমারার চরের প্রায় ৩০ থেকে ৪০টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে আছে। তাদের সহায়তাসহ খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। 

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে শুক্রবার বিকেল ৩টায় তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৪১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। 

আর পানি উন্নয়ন বোর্ড রংপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা নদীর পানি স্থিতিশীল অবস্থায় থাকবে। তবে ভাঙন রোধে জিও-ব্যাগসহ অন্যান্য উপায়ে কাজ করা হচ্ছে। 

এদিকে রংপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মোস্তাফিজার রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় রংপুরে ১৩২.৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তবে আজকের পর থেকে আবহাওয়ার কিছুটা উন্নতি হলেও দুই তিনদিন পর আবার বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আমিরুল/ইমন


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়