ঢাকা     শনিবার   ১১ জানুয়ারি ২০২৫ ||  পৌষ ২৮ ১৪৩১

নিজের অর্থে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন দাবিতে সমাবেশ  

রংপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:২০, ৬ জুলাই ২০২৪  
নিজের অর্থে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন দাবিতে সমাবেশ  

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা

নিজের টাকায় তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের ছয় দফা দাবিতে সমাবেশ করেছে তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদ। শনিবার (৬ জুলাই) বিকালে রংপুরের কাউনিয়া অংশের তিস্তার মাঝনদীতে মঞ্চ পেতে ভিন্নধর্মী ‘তিস্তা সমাবেশের’ আয়োজন করে পরিষদটি। সমাবেশে তিস্তাপাড়ের ১২ উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ সমাবেশে অংশ নেয়। 

তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শফিয়ার রহমানের সঞ্চালনায় সমাবেশের উদ্বোধন করেন‌ প্রধান উপদেষ্টা রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।

উদ্বোধনকালে মেয়র মোস্তফা বলেন, ‘দুই দফায় ভারত সফর শেষে আগামীকাল চীন সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সফর শেষে আর আশ্বাস নয়, দীর্ঘসূত্রিতার অবসান করবে বঙ্গকন্যা। ভারত ও চীনের দৌরাত্ম্য নিরসনে তিস্তাপাড়ের দুই কোটি মানুষের জীবন-জীবিকা রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী মহাপরিকল্পনার কাজ শুরু করবেন এমন প্রত্যাশা করি।’ ভারত ও চীন কেউ অর্থায়ন না করলে পদ্মা সেতুর ন্যায় মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি জানান তিনি।

আরো পড়ুন:

সমাবেশে তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি নজরুল ইসলাম হক্কানী বলেন, উত্তরের পাঁচ জেলার প্রায় দুই কোটি মানুষের জীবনের উপর বিরুপ প্রভাব ফেলে চলেছে রাক্ষুসী তিস্তা। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে ভাঙনে এ নদী গিলে খায় কৃষকের হাজার হাজার একর ফসলি জমি আর বসতভিটা। যার বাৎসরিক ক্ষতির পরিমাণ এক লাখ কোটি টাকা। এর থেকে বাঁচতে ১০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি তিস্তাপাড়ের মানুষের দীর্ঘদিনের। তাই সমীক্ষার নামে আর কালক্ষেপণ নয়, চীন-ভারতের দ্বৈরথ নিরসন করে নদী সুরক্ষায় বিজ্ঞানসম্মতভাবে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ চলতি বছরে শুরু করার দাবি করেন তিনি।
সমাবেশে তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য বখতিয়ার হোসেন শিশির ছয় দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো-
১. তিস্তা নদী সুরক্ষায় বিজ্ঞানসম্মতভাবে ‘তিস্তা মহাপরিকল্পনা’ দ্রুত বাস্তবায়ন। অভিন্ন নদী হিসেবে ভারতের সঙ্গে ন্যায্য হিস্যার ভিত্তিতে তিস্তা চুক্তি সম্পন্ন। তিস্তা নদীতে সারা বছর পানির প্রবাহ ঠিক রাখতে জলাধার নির্মাণ।
২. তিস্তা নদীর শাখা-প্রশাখা ও উপ-শাখাগুলোর সঙ্গে নদীর পূর্বেকার সংযোগ স্থাপন ও নৌ চলাচল পুনরায় চালু।
৩. ভূমিদস্যুদের হাত থেকে দখলকৃত তিস্তাসহ তিস্তার শাখা-প্রশাখা দখলমুক্ত করা। নদীর বুকে ও তীরে গড়ে ওঠা সমস্ত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ।
৪. তিস্তা ভাঙন, বন্যা ও খরায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের স্বার্থসংরক্ষণ। নদী ভাঙনের শিকার ভূমিহীন, গৃহহীন ও মৎস্যজীবীসহ উদ্বাস্ত মানুষের পুনর্বাসন।
৫. তিস্তা মহাপরিকল্পনায় তিস্তা নদী ও তিস্তা তীরবর্তী কৃষকদের স্বার্থ সুরক্ষায় কৃষক সমবায় এবং কৃষিভিত্তিক শিল্প কলকারখানা গড়ে তোলা। 
৬. মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ এবং প্রস্তাবিত প্রকল্প এলাকায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তিস্তা পাড়ের মানুষদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা।

নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর মতো তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের এ ছয় দফা দাবিতে ‘তিস্তা সমাবেশে’ তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের জাতীয় নেতারা ও জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
 

আমিরুল/বকুল 

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়