ঢাকা     শনিবার   ০৫ অক্টোবর ২০২৪ ||  আশ্বিন ২০ ১৪৩১

টাঙ্গাইলে নদীর পানি বৃদ্ধি, নতুন এলাকা প্লাবিত

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৩৬, ৬ জুলাই ২০২৪  
টাঙ্গাইলে নদীর পানি বৃদ্ধি, নতুন এলাকা প্লাবিত

টাঙ্গাইলে বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হচ্ছে। নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি পানিবন্দি হচ্ছে হাজার হাজার পরিবার। গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি নিয়ে বিপাকে পড়েছে বন্যার্তরা। দেখা দিচ্ছে, সুপীয় পানির অভাব। 

এদিকে, ভূঞাপুরে যমুনা নদীর পানি গ্রামে প্রবেশ করায় একটি পাকা সড়ক ভেঙে গেছে। শত শত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ফলে নিম্নাঞ্চলের মানুষজন দুর্ভোগে পড়েছে। 

সরেজমিন উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের কষ্টাপাড়া ঘোষপাড়া, খানুরবাড়ী, ভালকুটিয়া এলাকায় দেখা গেছে, যমুনা নদীর পানি পাড় উপচিয়ে এইসব এলাকায় প্লাবিত হয়েছে। মানুষ রাস্তা তলিয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে। গত দুই দিন ধরে তারা পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। যমুনা নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করায় গোবিন্দাসী-কষ্টাপাড়া-ভালকুটিয়া রাস্তাটি ভেঙে গেছে। ওই রাস্তায় চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। গোবিন্দাসী বাজারের কিছু অংশ পানিতে তলিয়ে গেছে। উপজেলার গাবসারা, নিকরাইল, অর্জূনা ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষজন পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

আরো পড়ুন:

শনিবার (৬ জুলাই) দুপুর ১২টা পর্যন্ত যমুনা নদীর পানি ভূঞাপুর অংশে বিপদসীমার ৫৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী, বঙ্গবন্ধু সেতু এলাকায় যমুনা নদীতে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিপদসীমারা ৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া সকাল ৯টার তথ্যে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ঝিনাই নদীর পানি জোকারচর পয়েন্টে ১৪ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি পোড়াবাড়ী পয়েন্টে ৮ সেন্টিমিটার, ধলেশ্বরী নদীর পানি এলাসিন পয়েন্টে ২৭ সেন্টিমিটার, ফটিকজানি নদীর পানি নলচাপা ব্রিজ পয়েন্টে ১৮ সেন্টিমিটার, বংশাই নদীর পানি কাউলজানী পয়েন্টে ২৪ সেন্টিমিটার, মির্জাপুর পয়েন্টে ১২ সেন্টিমিটার, এবং মধুপুর পয়েন্টে ১৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। জেলার ভুঞাপুর, কালিহাতী, নাগরপুর, গোপাপলপুর ও সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে নদীর পানি প্রবেশ অব্যাহত রয়েছে। পানি বৃদ্ধির কারণে কয়েকটি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ভাঙনও অব্যাহত রয়েছে।

ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের ভালকুটিয়ার ইউপি সদস্য আব্দুল কাদের জানান, পানির স্রোতের কারণে ভালকুটিয়া এলাকার পাকা রাস্তা ভেঙে গিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। প্রতিবছরই যমুনা নদীর পানি এলাকায় করায় মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নদীতে স্থানীয় একটি বাঁধ নির্মাণ করা হলে এলাকায় বন্যা হবে না।

উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দুলাল হোসেন চকদার বলেন, যমুনা পানি লোকালয়ে আসায় কষ্টাপাড়া, ভালকুটিয়া, খানুরবাড়ি, চিতুলিয়াপাড়াসহ কয়েকটি গ্রামের মানুষজন পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ভালকুটিয়ার রাস্তাটি ভেঙে যাওয়ায় আরও দুর্ভোগে পড়েছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ থেকেও বন্যার্ত মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মামুনুর রশীদ জানান, সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হচ্ছে। এছাড়া ভাঙন এলাকা ও বন্যা কবলিতদের খোঁজ খবর রাখা হচ্ছে। প্রশাসনের সব প্রস্তুতি রয়েছে।
 

কাওছার/বকুল

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়