ঢাকা     রোববার   ০৬ অক্টোবর ২০২৪ ||  আশ্বিন ২১ ১৪৩১

শায়েস্তাগঞ্জে পরিত্যক্ত পশু হাসপাতালটি দখল হয়ে যাচ্ছে!

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:০৯, ৭ জুলাই ২০২৪  
শায়েস্তাগঞ্জে পরিত্যক্ত পশু হাসপাতালটি দখল হয়ে যাচ্ছে!

পরিত্যক্ত পশু হাসপাতালে স্তুপ করে রাখা পাকা পিলার

হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাগঞ্জে সরকারি পশু হাসপাতালে এখন পাকা পিলারের ব্যবসা চলছে। শুধু তাই নয়, এই জমি দখল করে মার্কেট নির্মাণের পরিকল্পনা করছে একটি চক্র। এসব দেখার যেন কেউ নেই। 

অবশ্য সরকারি এই পশু হাসপাতালটি এখন পরিত্যক্ত। হাসপাতালটির বেহাল দশা ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার বসার স্থায়ী ভবন না থাকায় একটি ভবন ভাড়া নিয়ে অন্যস্থানে হাসপাতালের কার্যক্রম চলছে।

শায়েস্তাগঞ্জ পৌর শহরের দাউদনগর বাজার থেকে থানায় যেতে চোখে পড়ে পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের তালুগড়াই নামক স্থানে জঙ্গলবেষ্টিত ময়লা আবর্জনার একটি স্থান। এক সময় এটি ছিল শায়েস্তাগঞ্জের সরকারি পশু হাসপাতাল। হাসপাতালটি প্রায় ২৮ শতক জমির উপর ১৯০৩ সালে স্থাপিত হয়েছিল। বর্তমানে এখানে কার্যক্রম বন্ধ থাকায় হাসপাতালের জমিতে পাকা পিলার ও পানির ট্যাংকের ব্যবসা করা হচ্ছে। তার সাথে একটি চক্র ওই জমিতে মার্কেট নির্মাণের পরিকল্পনা করছে। এ অবস্থায় দ্রুত নজর দিয়ে সরকারি জমি রক্ষণাবেক্ষণ করার দাবি উঠেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, পশু হাসপাতালের জমি পরিত্যক্ত থাকায় প্রভাবশালীরা দখল করে পাকা পিলারের ব্যবসা করছে। এভাবে চলতে থাকলে, এক সময় ওই জমি দখল হয়ে যেতে পারে। এ ব্যাপারে দায়িত্বপ্রাপ্তদের নজর দেওয়া প্রয়োজন।  

অনুসন্ধানে জানা গেছে, তৎকালীন প্রিটিশ সরকারের আমলে নির্মিত এ হাসপাতালে শায়েস্তাগঞ্জ অঞ্চলসহ বিভিন্ন চা-বাগানের পশু চিকিৎসা সেবা চলে আসছিল। পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা সেবা চালুরত অবস্থায় এরশাদ সরকারের আমলে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণে হাসপাতালটির করুণ দশার শুরু হয়।  তখন একজন এসডিএলও, দুজন ভেটেরিনারি ডাক্তার ও একজন ভেটেরিনারি সহকারী দীর্ঘ দিন যাবৎ হাসপাতালটিতে পশু চিকিৎসা সেবা দিতেন। একে একে এ হাসপাতাল থেকে সবাই অন্যত্র চলে যান। তারপরও একজন ভেটেরিনারি সহকারীর মাধ্যমে শুধুমাত্র কৃত্রিম প্রজনন চালু ছিল। এ ভেটেরিনারিও চলে গেলে এখানে পশু চিকিৎসা কার্যক্রম একেবারে বন্ধ হয়ে যায়।

পরিদর্শনকালে মনে হয় কোন এককালে কিছু একটা ছিল। বর্তমানে পরিত্যক্ত স্থান। এখনও এ স্থানে একাধিক ভবনের চিহ্ন রয়েছে। ভবনগুলো মাটির সঙ্গে মিশে যাচ্ছে। আর পরিত্যক্ত থাকায় ময়লা আবর্জনার নির্ধারিত স্থানে রূপ নিয়েছে এ পশু হাসপাতালটি। স্থানীয় লোকজনের কাছে জানতে চাইলে পশু হাসপাতালের নাম প্রকাশ পায়। 

দেখা গেছে, হাসপাতালের জমিতে পাকা পিলার স্তুপ করে রাখা হয়েছে। ক্রেতারা এখান থেকে এসব ক্রয় করে নিচ্ছেন।

২০১৭ সালের ২০ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস-সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) বৈঠকে ৪৯২তম উপজেলা হিসেবে শায়েস্তাগঞ্জকে অনুমোদন দেওয়া হয়।
এরপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা যোগদান করে শায়েস্তাগঞ্জ ভূমি অফিসের একটি ভবনে বসে কার্যক্রম পরিচালনা করেন। পর্যায়ক্রমে স্থায়ীভাবে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, মৎস্য কর্মকর্তা, নির্বাচন কর্মকর্তা যোগদান করেন। এক পর্যায়ে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাও যোগদান করেন।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) কৃষিবিদ নাজিম উদ্দিন বলেন, ভাড়া ভবন নিয়ে কার্যক্রম চলছে। তবে পশু হাসপাতালের নিজস্ব জমিতে দ্রুত ভবন নির্মাণের জন্য কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বরাদ্দ সাপেক্ষে ভবন হলে সেখানে কার্যক্রম চলবে।

মামুন/টিপু       


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়