ঢাকা     রোববার   ০৬ অক্টোবর ২০২৪ ||  আশ্বিন ২১ ১৪৩১

মায়ের ভুল চিকিৎসার বিচার চেয়ে রমেকে ছেলের অবস্থান কর্মসূচি

রংপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:২৫, ৭ জুলাই ২০২৪  
মায়ের ভুল চিকিৎসার বিচার চেয়ে রমেকে ছেলের অবস্থান কর্মসূচি

রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ডায়াগনস্টিক বিভাগে ফাতেমা বেগম (৪৪) নামের এক নারীর স্বাস্থ্য পরীক্ষায় রক্তের ভুল গ্রুপ নির্ণয়ের অভিযোগ উঠেছে। এতে ভুক্তভোগী ওই নারীর অবস্থা এখন জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে।

এমন অভিযোগে রোববার (৭ জুলাই) দুপুরে ২ ঘণ্টা ধরে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে ভুক্তভোগীর ছেলে আব্দুল্লাহ আল জিয়াম ও তার সহপাঠিরা।

এসময় ভুল রক্ত নির্ণয়কারী ওই চিকিৎসকের শাস্তি ও মায়ের সুস্থতায় যাবতীয় চিকিৎসার ব্যায়ভার বহনের দাবি তোলেন ছেলে জিয়াম।

ছেলে জিয়াম ও আন্দোলনকারীদের মাধ্যমে জানা যায়, গত ২১ জুন জরায়ুর জটিলতা নিয়ে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন নগরীর কেরানীপাড়ার ফজলুর রহমানের স্ত্রী ফাতেমা বেগম। ২২ জুন করা হয় অপারেশন। অপারেশনকালে রক্তের প্রয়োজন হলে ব্লাড ট্রান্সফিউশনের চিকিৎসকের পরীক্ষা অনুযায়ী শরীরে দেওয়া হয় দুই ব্যাগ ‘এ পজেটিভ’ রক্ত। এতে ভালো তো দুরের কথা তীব্র আকার ধারণ করে ফাতেমার শরীরের জটিলতা। পরে পুনরায় হাসপাতালের ওই ব্লাড ট্রান্সফিউশনে রক্ত পরিক্ষা করলে ধরা পরে তার শরীরে রক্তের গ্রুপ ‘ও পজেটিভ’।

এরপর রংপুর মেডিক্যালের আইসিইউ বিভগে ছয় দিন ধরে চিকিৎসা করলেও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ফাতেমাকে উন্নত চিকিৎসায় নেওয়া হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ভুল গ্রুপের রক্ত দিয়ে অপারেশনের ১৫ দিন পেরিয়ে ফাতেমা এখন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে।

ভুল চিকিৎসায় মায়ের এমন পরিণতিতে রংপুর হাসপাতালের অভিযুক্ত চিকিৎসকের শাস্তির দাবিতে রোববার বিকেলে হাসপাতাল ঘেরাও ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে ভুক্তভোগীর ছেলে আব্দুল্লাহ আল জিয়াম।

এসময় জিয়াম বলেন, অপারেশনের ১৫ দিন হলেও তার মায়ের অবস্থা এখনও উন্নতি হয়নি। এরই মধ্যে অভাবের সংসারে মায়ের চিকিৎসায় সাড়ে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। অথচ ভুল রক্ত নির্ণয়ের বিষয়টি মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষকে জানালে সে সময়ে তাদের পরামর্শে মা’কে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেওয়া হয়। এছাড়াও মায়ের যাবতীয় চিকিৎসার ব্যয়ভার মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ বহন করার মৌখিক আশ্বাস দিলেও সেটি এখন পর্যন্ত করা হয়নি। ফলে এখন মায়ের চিকিৎসার ড্রাইভার বহন করতে হিমশিম খাচ্ছি। তাই মায়ের চিকিৎসার যাবতীয় ব্যবহার বহন ও অভিযুক্ত চিকিৎসকের শাস্তির দাবি জানান জিয়াম।

এদিকে ব্লাড ট্রান্সফিউশনের কারও বক্তব্য পাওয়া না গেলেও হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ ইউনুছ আলী জানান, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। ভুক্তভোগী ছেলে আজ মেডিক্যালের সামনে অবস্থান করেছিল‌‌। আমরা সেখান থেকে তাকে ডেকে ঘটনার বিবরণে একটি লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি। অভিযোগ অনুযায়ী তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়াও এরই মধ্যে এ ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে অভ্যন্তরীণভাবে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট আসলে বোঝা যাবে প্রকৃত ঘটনা। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করারও কথা জানান তিনি।

রোগীর চিকিৎসার যাবতীয় ব্যয়ভার বহনের বিষয়ে হাসপাতাল পরিচালক বলেন, বর্তমানে রোগী ফাতেমা বেগম ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তার শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে। অর্থনীতিকভাবে না হলেও তার চিকিৎসার খোঁজখবর রাখা হচ্ছে বলেও জানেন তিনি।

/আমিরুল/মেহেদী/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়