কোটা সংস্কার দাবিতে রাবি শিক্ষার্থীদের রেলপথ অবরোধ
রাজশাহী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
রাবি শিক্ষার্থীদের রেলপথ অবরোধ
সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আজ সোমবার (৮ জুলাই) সকালে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা রেলপথ অবরোধ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। এতে রাজশাহীর সঙ্গে সারা দেশের রেল রেলযোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। বিকালে শিক্ষার্থীরা রেললাইন থেকে সরে গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন মেহেরচণ্ডী ফ্লাইওভারের নিচে রেললাইনের ওপর অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় একটি বাইপাস সড়কেও যান চলাচল বন্ধ করে দেন তাঁরা। বিকাল ৪টার দিকে তারা রেলপথ থেকে সরে ক্যাম্পাসে ফিরে যায়।
এর আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চার দফা দাবিতে আন্দোলন করলেও সারা দেশের সঙ্গে সমন্বয় করে সোমবার এক দফা দাবিতে রেলপথ অবরোধ করেন তাঁরা। কোটা পদ্ধতির সংস্কার আন্দোলন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক আমানুল্লাহ খান বলেন, ‘আমরা এর আগে চার দফা দাবিতে আন্দোলন করেছি। কিন্তু আজ থেকে চার দফা বাদ দিয়ে সারা দেশের সঙ্গে সমন্বয় করে, এক দফা দাবিতে আমাদের সংগ্রাম চলবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দাবি একটাই, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি নয়, সব ধরনের সরকারি চাকরিতে কোটাপদ্ধতি সংস্কার করতে হবে এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে মেধাবীদের দ্বারা সেই পদ পূরণ করতে হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত বিভিন্ন আঙ্গিকে আমাদের এই ধারাবাহিক আন্দোলন চলবে।’
২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা, ১০ শতাংশ নারী কোটা, অনগ্রসর জেলার বাসিন্দাদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের জন্য ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ পদ সংরক্ষিত ছিল। ওই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোটা সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ হয়। কোটাব্যবস্থার সংস্কার করে ৫৬ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবি জানান আন্দোলনকারীরা। পরে সেই বছরের ৪ অক্টোবর কোটাপদ্ধতি বাতিলবিষয়ক পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
এর মাধ্যমে ৪৬ বছর ধরে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে যে কোটাব্যবস্থা ছিল, তা বাতিল হয়ে যায়। পরে ২০২১ সালে সেই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের অংশটি চ্যালেঞ্জ করে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান উচ্চ আদালতে রিট করেন। সেই রিটের রায়ে গত ৫ জুন পরিপত্রের ওই অংশ অবৈধ ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে চাকরিপ্রত্যাশী সাধারণ শিক্ষার্থীরা মাঠে নেমেছেন।
কেয়া/বকুল