ঢাকা     রোববার   ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  ভাদ্র ২৪ ১৪৩১

চরমপন্থিদের সঙ্গে মিটিং করে আমাকে হত্যার পরিকল্পনা হচ্ছে: শাহীন

পাবনা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৫৮, ৯ জুলাই ২০২৪   আপডেট: ২১:০৫, ৯ জুলাই ২০২৪
চরমপন্থিদের সঙ্গে মিটিং করে আমাকে হত্যার পরিকল্পনা হচ্ছে: শাহীন

সুজানগর পৌরসভার সামনে সমাবেশে বক্তব্য দেন শাহীনুজ্জামান শাহীন

‘চরমপন্থিদের সঙ্গে মিটিং করে আমাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। নকশাল সর্বহারা দিয়ে আমাকে হত্যা করে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে চায় বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাব।’

মঙ্গলবার (৯ জুলাই) বিকেলে পাবনার সুজানগর পৌরসভার সামনে আয়োজিত এক সমাবেশে এমন অভিযোগ করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীনুজ্জামান শাহীন।

এর আগে, উচ্চ আদালত থেকে একটি হত্যা মামলায় জামিন নিয়ে আরিচা-কাজিরহাট ফেরিঘাট হয়ে নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে আজ নিজ উপজেলায় আসেন শাহীনুজ্জামান শাহীন। 

শাহীন বলেন, ‘কাউকে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দিয়ে দমিয়ে রাখা যায় না। যার নেতৃত্বে মিথ্যা মামলা দায়ের হয়েছে সুজানগরের জনগণ তাকে প্রত্যাখান করেছেন। বানোয়াট মামলা প্রত্যাহার না করলে আপামর জনতা রাজপথে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’

আরও পড়ুন: পাবনায় যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ

রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন উল্লেখ করে শাহীন বলেন, ‘সুজানগরের আপামর জনতার যে ভালোবাসা পেয়েছি, তার জন্য সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাব। তিনি দলের উপজেলা সাধারণ সম্পাদকের নামে মামলা দিয়ে নিজ এলাকায় সহিংসতা লাগিয়ে প্রমোদ ভ্রমণে সমুদ্র সৈকতে সহকর্মীদের নিয়ে উল্লাস করছেন। দলের নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে উনি আনন্দ উল্লাস কিভাবে করেন?’ 

শাহীন আরও অভিযোগ করে বলেন, ‘আব্দুল ওহাব যুবলীগ নেতা আল আমিন হত্যার সময় উপস্থিত ছিলেন। এজন্য নিহতের আত্মীয় স্বজন ওহাবের নামে মামলা দিতে চেয়েছিল। আমি নিজেই আওয়ামী লীগের সভাপতির নামে মামলা হতে দেইনি। অথচ তারই এক সমর্থক বলে দাবি করা মোজাহার বিশ্বাস হত্যা মামলায় আমাকে আসামী করিয়েছেন।’

শাহীনুজ্জামান শাহীন বলেন, ‘ওহাব সাহেবের মামলায় আমার কিছুই যায় আসে না। আপনি আগামী দিনের জন্য প্রস্তুত থাকেন। আমাকে হত্যার পরিকল্পনা করছেন। আমি যেখানেই হত্যাকাণ্ডের শিকার হই ওই মামলার প্রধান আসামি হবেন ওহাব।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাব বলেন, ‘যা মুখে আসছে তাই বলছে। আসলে এটা নতুন নয়। আমি যখন মেয়রের মনোনয়ন চেয়ে পাইনি, তখন থেকেই শুরু করছে এরকম। উপজেলা নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর থেকে শাহীনের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। কোনো নকশাল সর্বহারা বাহিনীর সঙ্গে আমার পরিচয় নেই। ওসব আমি করি না। বালু তোলার ব্যবসা সে (শাহীন) করে। তারই ওইসব নিষিদ্ধ বাহিনীর সঙ্গে সখ্যতা আছে।’

প্রসঙ্গত, গত ৮ মে সুজানগর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে জয়ী হন আব্দুল ওহাব। পরাজিত হন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীনুজ্জামান শাহীন। এরপর থেকেই সুজানগরে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। এরই জেরে গত ২১ জুন রানীনগর এলাকায় দুই গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে আল আমিন মিয়া (৩৫) নামে শাহীন গ্রুপের একজন নিহত হন।

এ ঘটনার জেরে এলাকায় কিছু বাড়িতে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। হামলায় মোজাহার বিশ্বাসসহ ওহাব গ্রুপের কয়েকজন আহত হন। মোজাহার বিশ্বাসের‌ অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢাকায় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৭ জুন তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীনুজ্জামান শাহীনকে প্রধান আসামি করে মামলা হয়। মঙ্গলবার উচ্চ আদালত থেকে ৮ সপ্তাহের আগাম জামিন পান শাহীনুজ্জামান শাহীন।

শাহীন/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়