ঢাকা     শুক্রবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৫ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩২

লটকনের জমজমাট হাট

আমিরুল ইসলাম, রংপুর  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:২৬, ১০ জুলাই ২০২৪   আপডেট: ১০:২৯, ১০ জুলাই ২০২৪
লটকনের জমজমাট হাট

প্রতিদিন গড়ে ২০০-৩০০ মণ লটকন বিক্রি হয় এই হাটে (ছবি: রাইজিংবিডি)

রসালো ফল লটকন। একসময়ে একে জংলি ফল বলা হতো। বনে-বাদাড়ে ঝোপ-ঝাড়ে জন্ম নেওয়া গাছে ধরে থাকতো এ ফল। তেমন একটা কদর ছিল না। তবে সময়ের বিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এ ফলের পুষ্টিগুণ সবার জানা হয়ে গেছে। তাই কদর বেড়েছে বহুগুণে।

দেশে এখন চলছে ফলের মৌসুম। গ্রীষ্ম-বর্ষা দুই ঋতুতে সারা দেশে মেলে নানা জাতের দেশীয় ফল। বাজারে এখন আম, লিচু, কাঁঠাল, আনারস, লটকনসহ নানা ফল পাওয়া যাচ্ছে।

রংপুর নগরীর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠের সম্মুখ সড়কে জমে উঠেছে লটকনের হাট। রংপুরসহ আশেপাশের জেলা লালমনিরহাট, নীলফামারী থেকে বিক্রেতারা লটকন আনে এই পাইকারি হাটে। ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতিদিন গড়ে ২০০-৩০০ মণ লটকন বিক্রি হয় এই স্থান থেকে।

হাট ঘুরে দেখা যায়, আকার ভেদে পাইকারি দরে এখানে লটকন বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা মণ। 

বাগানিরা বলছেন, এ বছর লটকনের ফলন ভালো হয়েছে। শুরু থেকে ভালো দাম পেয়েছেন তারা। তবে এখন ভরা মৌসুমে দাম একটু কমেছে সরবারহ বেশি থাকায়। তারপরও দামে খুশি তারা।

লালমনিরহাটের কালিগঞ্জ থেকে ভ্যানে করে লটকন নিয়ে আসা আজিজুল হক বলেন, আমার বাগানে সাথীফল হিসেবে লটকন গাছ আছে ২০০। ফলন ভালো হয়েছে। দামও ভালো।

জেলার বিভিন্ন বাজারের ফল বিক্রেতারা সকালে এসে চাহিদা অনুযায়ী লটকন কিনে নিয়ে যান এখান থেকে। 

পীরগাছা এলাকার ফল বিক্রেতা আমির হোসেন বলেন, প্রতিদিন পৌর বাজার থেকে আমরা নানা ধরনের ফল কিনে নিয়ে যাই। পাশেই টাউনহলের সামনে দীর্ঘ সারির এই পাইকারি লটকনের হাট থেকেও আমরা লটকন কিনে বিক্রি করি। বড় আকারের এক মণ ২ হাজার টাকা দিয়ে কিনেছি। আশা করছি, দুই দিনের মধ্যে বিক্রি হয়ে যাবে। 

এই বাজারের আড়তদার সাবা উদ্দিন বলেন, প্রতিদিন ভোর ৬টা থেকে বসা এ হাটে লালমনিরহাট, রংপুর ও কুড়িগ্রামের রাজারহাট থেকে ক্রেতারা আসছেন। চাহিদা থাকায় লটকনের ভরা মৌসুমে ভালো দাম পাচ্ছেন চাষিরা।

লটকন গাছ সাধারণত বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে রোপণের উপযুক্ত সময়। বর্ষার শেষের দিকে মানে ভাদ্র-আশ্বিন মাসেও গাছ লাগানো যায়। লটকনের গাছ ঝোপের মতো হয়ে থাকে। প্রতিবছর মাঘ-ফাল্গুনে লটকনগাছে মুকুল আসা শুরু হয়। জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষে এ ফল পরিপক্ক হয়ে থাকে। এটি চাষে তেমন কোনো খরচ নেই। স্ত্রী গাছ লাগিয়ে দিলেই হয়। সময়ে সময়ে একটু পরিচর্যা করতে হয়। গোড়ার চারদিকে জৈব সার দিলে ফলন ভালো হবে। পিঁপড়া বা পোকামাকড়ের হাত থেকে ফল বাঁচাতে ছত্রাকনাশক দিতে হয়।

পুষ্টিবিদদের মতে, মানুষের শরীরে একদিনে যে পরিমাণ ভিটামিন 'সি' প্রয়োজন মাত্র তিন-চারটি লটকন সে চাহিদা মেটাতে যথেষ্ট। ছোট এ ফলটি ভিটামিন 'বি-টু', ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, লৌহসহ বিভিন্ন খনিজ উপাদানে ভরপুর।

/ইভা/ 


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়