ঢাকা     শুক্রবার   ১৮ অক্টোবর ২০২৪ ||  কার্তিক ২ ১৪৩১

‘থাই গোল্ড’ কচু চাষে তাক লাগালেন সিরাজুল

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৩৯, ১০ জুলাই ২০২৪   আপডেট: ১২:৪১, ১০ জুলাই ২০২৪
‘থাই গোল্ড’ কচু চাষে তাক লাগালেন সিরাজুল

লক্ষ্মীপুরের উত্তর জয়পুর গ্রামে ‘থাই গোল্ড’ জাতের কচু চাষ করে এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন জেলার সফল কৃষি উদ্যোক্তা সিরাজুল ইসলাম। চলতি বছর তিনি তার বন্ধুর মাধ্যমে থাইল্যান্ড থেকে ২৮০টি ‘থাই গোল্ড’ জাতের কচুর চারা এনে পাঁচ শতাংশ জমিতে রোপণ করেন। পরবর্তীতে সেখান থেকে চারা সংগ্রহ করে বর্তমানে এক বিঘা জমিতে প্রায় ২ হাজার কচু উৎপাদন করেছেন। 

এ বিষয়ে সিরাজুল ইসলাম জানান, এ জাতের প্রতিটি কচুর উচ্চতা ১২ ফুট পর্যন্ত এবং কাঠের ওজন (ডাল ছাড়া মুল কচু) ৪০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। এছাড়া প্রতিটি লতির দৈর্ঘ্য ৪ ফুট ও বেড় ১২ মিলি মিটার হয়ে থাকে। বর্তমানে তার চাষকৃত একটি কচুর ওজন ৪ মাসে ২০ থেকে ২৫ কেজি ও উচ্চতা প্রায় ৮ ফুট পর্যন্ত হয়েছে। এছাড়াও ৮ থেকে ১০ পিস লতির ওজন ১ কেজি হয়েছে। তিনি আশা করছেন আগামী চার মাসের মধ্যে তার চাষকৃত প্রতিটি কচু ৪০ কেজি ওজন হবে। ইতিমধ্যে ১০ জন চাষিকে এ কচুর চাষ করার জন্য চারা দিয়েছেন তিনি। 

সফল চাষি লক্ষ্মীপুর জেলা জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডির) সহ সভাপতি সিরাজুল ইসলাম আরও জানান, তার জানামতে তিনিই প্রথম দেশে ‘থাই গোল্ড’ জাতের কচুর চাষ শুরু করেছেন। দেশের চাষিদের মধ্যে এ কচু চাষ বিস্তারে তিনি সব ধরনের সহযোগীতা করবেন।

লক্ষ্মীপুর জেলার সদর উপজেলার উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের দৌলত বাড়ির স্কুল শিক্ষক মরহুম আজহারুল ইসলাম মাষ্টারের ৩য় পুত্র সিরাজুল ইসলাম ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর) এর চাকুরি ছেড়ে বাড়িতে এসে শখের বসে নার্সারি শুরু করেন। এতে তিনি বিভিন্ন জাতের ফলজ, বনজ, ফুল ও সবজির চারা উৎপাদন করতেন। এছাড়াও তিনি তিনি এলাকার আগ্রহী যুবকদের হাতে কলমে চারা উৎপাদন করা শিখাতে থাকেন। তার কাছে চারা উৎপাদন শিখে ইতিমধ্যে ৫০ জন বেকার যুবককে স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলেছেন। তার কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কার। সিরাজুল ইসলাম বর্তমানে লাউ, কলা, লেবু চাষ করে যাচ্ছেন। কৃষি বিষয়ক বিভিন্ন ফসল চাষ করে স্বাবলম্বী সিরাজুল ইসলাম ইউটিউবে থাই গোল্ড জাতের কচুর চাষ দেখে তিনি তার বন্ধুর মাধ্যমে থাইল্যান্ড থেকে এ কচুর চারা সংগ্রহ করে চাষ শুরু করেন। 

সিরাজুল ইসলাম বলেন, বাজারে আমার উৎপাদিত কচুর লতি নিয়ে গেলে মানুষ এক নজর দেখার জন্য আসে। বর্তমানে আমি উৎপাদিত কচু বিক্রি শুরু করেছি। ইতিমধ্যে ২০টি কচু চার হাজার টাকা বিক্রি করেছি। সব কিছু ঠিক থাকলে চলতি বছর কচু চাষ থেকে আমার ৬ লাখ টাকা লাভ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

এলাকার আরেক সবজি চাষি মো. শরীফ বলেন, সিরাজুল ইসলামের থেকে তিনি থাই গোল্ড জাতের কচুর চারা নিয়ে চাষ শুরু করেছেন। সিরাজুল ইসলাম একজন সফল উদ্যোক্তা। তার কাছে কৃষি চাষাবাদ বিষয়ে পরামর্শ নিয়ে অনেকেই আজ স্বাবলম্বী হয়েছেন। 

উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. শাহ জাহান বলেন, সিরাজুল ইসলামের কচুর চাষ আমি সরেজমিনে দেখে এসেছি। এ কচুর চাষ সম্প্রসারণে সহযোগীতা করা হবে।

জাহাঙ্গীর/ইমন


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়