প্রতিদিন ৩ লিটার দুধ দিচ্ছে বকনা বাছুর
শরীয়তপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
এই বকনা বাছুর থেকে প্রতিদিন মিলছে ৩ লিটার দুধ
একটা পূর্ণ বয়স্ক গাভীর বাছুর হওয়ার পর দুধ দেবে এটা স্বাভাবিক। তবে বকনা বাছুর গর্ভধারণ ছাড়াই দুধ দিচ্ছে বিষয়টি অস্বাভাবিক। এমনটা হয়েছে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায়। যেখানে ১৮ মাস বয়সী বকনা বাছুর থেকে প্রতিদিন ৩ লিটার দুধ পাওয়া যাচ্ছে। এ খবর চাউর হতেই সেই দুধ নিতে ভিড় জমাচ্ছেন দূর-দূরান্তের মানুষ। স্থানীয়রা বলছেন, অলৌকিক শক্তি বলে এমন হচ্ছে। তবে চিকিৎসক বলছেন, হরমোনের প্রভাবে এটা হচ্ছে।
দুধ দেওয়া বকনা বাছুরটি জাজিরা উপজেলার পালেরচর ইউনিয়নের কাথুরিয়া মধু মাদবর কান্দি এলাকার হুমায়ূন শরীফের। চার বছর আগে হাট থেকে তিনি দেশীয় জাতের গাভী কেনেন। গাভীটি দুইবার দুটি বাচ্চা প্রসব করে। বড় বাছুরটি তিনি বিক্রি করে দেন। এরপর গাভীটি আবারও বাচ্চা দেয়। পরে গাভীটিও বিক্রি করে দেন। বকনা বাছুরটি রয়ে যায়। সম্প্রতি সেটির গর্ভধারণ ছাড়াই বাট ফুলে যায়। এরপর থেকে নিয়মিত দুধ দোহন করছেন হুমায়ূন শরীফ। প্রথমে অল্প পরিমাণে দুধ পেলেও এখন প্রতিদিন ৩ লিটার করে দুধ পাচ্ছেন।
স্থানীয়দের ধারণা, বিষয়টি অলৌকিক এবং এ দুধ খেলে রোগসহ সব সমস্যার সমাধান মিলবে। এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনা মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়লে দলে দলে সেই দুধ নিতে মানুষ ভিড় করছেন। প্রতিদিন ভোরে শতাধিক লোকের মাঝে সেই দুধ বিতরণ করা হয়। খুশি হয়ে যে যা অর্থ দিচ্ছেন, তাই নিচ্ছেন গরুর মালিক।
হুমায়ুন শরীফের প্রতিবেশী নাজমা বেগম বলেন, ‘প্রতিদিন অনেক দূর থেকে মানুষ দুধ নিতে আসেন। তারা উপকার পেয়ে অন্যকে বলার পরে তারাও দুধ নিতে আসছেন। আমি নিজেও এ দুধ খেয়েছি। খেতে খুব মিষ্টি।’
স্থানীয় বাসিন্দা আবুল বাসার বলেন, ‘আমার বাড়ির পাশের হুমায়ূন শরীফের বাছুরের দুধ দেওয়ার বিষয়টি আমার কাছে অলৌকিক মনে হয়েছে। আমি আমার বয়সে এমন দেখিনি। আমিও সেই দুধ খেয়েছি।’
স্থানীয় বাসিন্দা আরাফাত বলেন, প্রতিনিয়ত এ বাছুরের দুধ নিতে শতাধিক মানুষ বোতল নিয়ে ভিড় করেন। বাছুরের মালিক দুধের দাম নির্ধারণ করেননি। খুশি হয়ে যে যা দিয়ে যায়, তাই তিনি নেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য শেরে বাংলা শরীফ বলেন, দলে দলে লোকজন দুধ নিতে ভিড় করছেন।
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ডা. মো. আবু বকর সিদ্দিক বলেন, জাজিরা উপজেলার যে ১৮ মাস বয়সী বকনা বাছুর দুধ দিচ্ছে, তা মূলত হরমোনাল ইনব্যালেন্সের কারণে হচ্ছে। এর আগেও কয়েক স্থানে এমন হয়েছে। এটা রোগ বা সমস্যা নয়।
আকাশ/বকুল