ঢাকা     রোববার   ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  ভাদ্র ২৪ ১৪৩১

‘ফেনীতে সাইবার অপরাধ ও ভূমি দস্যুতায় ছাড় নয়’ 

ফেনী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৫০, ১০ জুলাই ২০২৪  
‘ফেনীতে সাইবার অপরাধ ও ভূমি দস্যুতায় ছাড় নয়’ 

সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিয়ম করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম

ফেনীতে সাইবার অপরাধ, ভূমি দস্যুতা, কিশোর গ্যাং, ইভটিজিং, মাদক-সন্ত্রাস, চোরাচালানসহ বিভিন্ন অপরাধ নির্মূলের প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন নবনিযুক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম। বুধবার (১০ জুলাই) ফেনী পুলিশ লাইন্সে ড্রিল সেডে আয়োজিত সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ হুঁশিয়ারি দেন তিনি। 

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের একাধিক প্লাটফর্ম ব্যবহার করে অনেকে সাইবার অপরাধে জড়িয়ে পড়ছেন। এটি এখন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। অনলাইনে ভুয়া তথ্য ও প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রম, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা অথবা কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে বিব্রত করা হলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। 

তিনি বলেন, সাইবার অপরাধ রুখতে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সাইবার ইউনিট চালু করা হবে। সাইবার ওয়ার্ল্ডে যা ইচ্ছে তাই করবেন এই সুযোগ নেই। পুলিশের সাইবার টিম নিয়মিত বিষয়টি তদারকি করবে। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে অপরাধমূলক অভিপ্রায়ে কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে সম্মানহানি, কিংবা সরাসরি বা পরোক্ষভাবে শারীরিক বা মানসিক ক্ষতি বা ক্ষতির কারণ হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ভূমি দস্যুতার বিষয়ে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে পুলিশ সুপার বলেন, পরিবেশের ক্ষতি হবে এমন কার্যক্রম করে কেউ পার পাবে না। মাটি ও বালু খেকোদের বিরুদ্ধে জেলা পুলিশ কঠোর ভূমিকা রাখবে। অন্যায়ভাবে অন্যের বা সরকারি ভূমি দখলকারীরা যত বড় ক্ষমতাশালী নেতা হোক, ছাড় দেওয়া হবে না। এ বিষয়ে পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া আছে।

এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘এখানে এসে কিশোর গ্যাংয়ের বিষয়ে জানতে পেরেছি। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কমকর্তাদের কিশোর গ্যাংয়ের তালিকা করতে নির্দেশ দিয়েছি। তাদের নাম-পরিচয় সংগ্রহ করা হচ্ছে। সব থানাকে এ বিষয়ে অবগত করা হয়েছে।’ এ বিষয় সাংবাদিকদের সহযোগিতা চান তিনি।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কিংবা রাস্তাঘাট কোথাও মা-বোনদের উত্ত্যক্ত করলে তথ্য পাওয়ামাত্রই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে অচিরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সচেতনতামূলক কার্যক্রম নেওয়া হবে। 

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যুবক-যুবতীদের অনেতিক কার্যকলাপ বন্ধেও পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সাম্প্রতিক বেড়ে যাওয়া আত্মহত্যা প্রবণতারোধে সিভিল সার্জনসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে যুবক-যুবতীদের শারীরিক-মানসিক সুরক্ষায় সচেতনতামূলক কার্যক্রম হাতে নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, থানায় অভিযোগ করতে গিয়ে সাধারণ মানুষের হয়রানি বন্ধ ও পুলিশ সেবা বাড়াতে থানা কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া আছে। জিডি বা অভিযোগ দিলে অবশ্যই রেজিস্ট্রার খাতায় অভিযোগকারী ও তদন্ত কর্মকর্তার নাম সংরক্ষণ করা হবে। 

সাংবাদিকদের সঙ্গে পুলিশের সম্পর্ক একই সুতোয় বাঁধা উল্লেখ করে নবনিযুক্ত এ পুলিশ সুপার বলেন, ‘পুলিশ সুপার কার্যালয় বা থানায় থেকে সাংবাদিক তথ্য সহায়তার জন্য নির্দিষ্ট কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। যেকোনো বিষয়ে আমার দরজা আপনাদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।’

এ সময় তিনি মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত ফেনী গড়তে ও আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেন। 

মতবিনিময় সভায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীন মোহাম্মদ, শাহাদাৎ হোসেন, মোহাম্মদ আফতাব উদ্দিন, থোয়াই অংপ্রু মারমা, সহকারী পুলিশ সুপার তসলিম হুসাইন, ওয়ালী উল্লাহ্সহ জেলা পুলিশের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
 

সাহাব/বকুল

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়