ঢাকা     রোববার   ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  ভাদ্র ২৪ ১৪৩১

সিরাজগঞ্জে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী কার্যালয়ে অবরুদ্ধ!

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৫৪, ১১ জুলাই ২০২৪   আপডেট: ১৪:১০, ১১ জুলাই ২০২৪
সিরাজগঞ্জে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী কার্যালয়ে অবরুদ্ধ!

হয়রানির অভিযোগে সিরাজগঞ্জের এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলামকে অবরুদ্ধ করেছিলেন ঠিকাদারগণ। পরে ক্ষমা চেয়ে অফিস থেকে বের হন তিনি।  

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) জানা যায়, বুধবার কাজের পরিদর্শনের গাফিলতি, ঠিকাদারের সাথে দুর্ব্যবহার, বিল পাসে অনীহাসহ নানা অভিযোগের কথা নির্বাহী প্রকৌশলীর সামনে উপস্থাপন করেন ঠিকাদাররা। এ সময় তাদের কথা গুরুত্ব না দিয়ে নিজের কাজে ব্যস্ততা দেখানোয় তারা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এইদিন সন্ধ্যা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এলজিইডি কার্যালয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীকে অবরুদ্ধ করে রাখেন ১৫/২০ জন ঠিকাদার। এক পর্যায়ে তিনি ক্ষমা চেয়ে সকলকে রেখেই অফিস থেকে বের হয়ে যান।  

এলজিইডির একাধিক ঠিকাদার জানান,  কাজ শুরু করতে টাকা, বিল নিতে টাকা, ব্যাংক সিকিউরিটি নিতে টাকা, ক্যালকুলেটর ধরে কাজের জামানত ফেরত নিতে টাকা দিতে হয় জেলা ও উপজেলা অফিসারদের। দীর্ঘদিন ধরে সিরাজগঞ্জ এলজিইডির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম দুর্নীতি অভিযোগ উঠলেও বদলি আর পদায়নে সীমাবদ্ধ। এর ফলে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
 
তরুণ এন্টার প্রাইজের ঠিকাদার তরুণ শেখ বলেন, আমি ৭৫ লাখ টাকার পারফরমেন্স গ্যারান্টি পাবো। দুই দিন আগে আবারও গ্যারান্টির টাকা চাইতে যাই। এসময় নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, আমার মাথা গরম আছে, আপনি আমার রুম থেকে বের হয়ে যান। 

এই ঠিকাদার আরও বলেন, আমি হার্টের রোগী, তিনি আমার সঙ্গে এমন ব্যবহার করেছেন। আমি যদি রাতে স্ট্রোক করে মরে যেতাম। তাহলে আমার পরিবারের কি উপায় হতো- এমন প্রশ্ন নির্বাহীকে করা হলে তিনি হেসে উড়িয়ে দেওয়ায় অন্যান্য ঠিকাদাররাও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। 

সোহান এন্টারপ্রাইজের মালিক শাহাদত হোসেন বুদ্দিন বলেন, আমার কাজ শেষ হওয়া সত্ত্বেও বিল নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে ঘুরছি। সিনিয়র প্রকৌশলী আহরাম স্যারকে ডেকে নিয়ে বলি, স্যার বিষয়টা দেখেন। উনি ওই সিনিয়র প্রকৌশলীর সঙ্গেও খারাপ ব্যবহার করেন। এরপর আমাকে ধমক দিয়ে বলেন, আপনি আমার রুম থেকে বেরিয়ে যান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেকজন ঠিকাদার বলেন, উনি আমার বিল আমাকে না জানিয়েই তুলেছেন। আমরা শুনেছি এই নির্বাহী প্রকৌশলী অতীতে কোথাও ৭ থেকে ৮ মাসের বেশি চাকরি করতে পারেন নাই।

কবির তালুকদার নামের আরেক ঠিকাদার বলেন, আমি একটা কাজ পেয়েছিলাম, আমি টাকা দিতে পারি নাই, এজন্য কাজ দেয় নাই। তিনি একক ক্ষমতায় রি-টেন্ডার করেছেন। 

অবরুদ্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম বলেন, আপনাদের কাছে সব কিছুর ব্যাখা দিতে পারবো না। কাজ করলে কিছু ভুলত্রুটি হবে। যতটুকু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে এজন্য ক্ষমা চেয়েছি। আপনারা গণমাধ্যম কর্মী, আপনারা বেশি প্যাঁচায়েন না- বলেই রুম থেকে বের হয়ে যান নির্বাহী প্রকৌশলী।

অদিত্য/টিপু


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়