ঢাকা     শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ||  অগ্রহায়ণ ৮ ১৪৩১

৩৫ বছরের ইমামতি শেষে পেলেন রাজকীয় বিদায়

নাটোর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৫৪, ১২ জুলাই ২০২৪   আপডেট: ২২:৪১, ১২ জুলাই ২০২৪
৩৫ বছরের ইমামতি শেষে পেলেন রাজকীয় বিদায়

ঘোড়ার গাড়িতে তুলে ইমামকে মাওলানা মোতালেব হোসেনকে পৌঁছে দেওয়া হয় বাড়িতে

নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার চাঁচকৈড় কাঁচারিপাড়া জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মোতালেব হোসেনকে নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে বিদায় সংবর্ধনা জানানো হয়েছে। ৩৫ বছর ইমামতি করার পর মুসল্লিদের এমন ভালবাসায় মুগ্ধ ইমাম মোতালেব হোসেন। গুরুদাসপুরে ইমামের এমন রাজকীয় বিদায় এই প্রথম বলে জানান এলাকাবাসী।

স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার (১২ জুলাই) পৌরসভার কাঁচারিপাড়া মহল্লায় সকাল থেকেই ইমামকে বিদায় দেওয়ার নানা আয়োজনে ব্যস্ত ছিলেন এলাকাবাসী। সাজানো হয় ঘোড়ার গাড়ি। দুপুরে জুম্মার নামাজের পর জামে মসজিদের ৭২ বছর বয়সী ইমামকে হাত ধরে ঘোড়ার গাড়িতে তোলেন এলাকাবাসী। গাড়িতে ওঠার আগে শেষবারের মতো উপস্থিত মুসল্লি ও এলাকাবাসীর কাছে নিজের ভুলত্রুটির জন্য ক্ষমা চান তিনি। ঘোড়ার গাড়ির সামনে-পেছনে প্রায় দুই শতাধিক মোটরসাইকেল বহর ছিলো। তারা ১০ কিলোমিটার দূরে চলনালি গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসেন ইমাম মোতালেব হোসেনকে। 

এর আগে, ইমাম মোতালেব হোসেনের হাতে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে নগদ এক লাখ টাকা তুলে দেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও গুরুদাসপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি শামসুল হক শেখ। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন- আসিফ আব্দুল্লাহ বিন কুদ্দুস শোভন, শাহজাহান আলী শেখ, আমিরুল ইসলাম সাগর, ইউসুফ আলী, আব্দুল আলীম ফকির, আব্দুল্লাহ শেখ, মতিউর রহমান শেখ প্রমুখ।

আরো পড়ুন:

মাওলানা মোতালেব হোসেন বলেন, ‘১৯৮৯ সালে এই মসজিদে ইমাম হিসাবে যোগ দেই। ৩৫ বছর ধরে ইমামতি করার সময় এই মহল্লার প্রতিটি মুসল্লি পরিবারের ভালোবাসা পেয়েছি। বিদায় বেলাতেও আমাকে এতো ভালোবাসা ও সম্মান দেওয়ায় আমি সত্যিই মুগ্ধ হয়েছি। এমন আয়োজন প্রতিটি ইমামের জন্য যেন করা হয়।’

মসজিদ কমিটির কোষাধ্যক্ষ আলমগীর শেখ বলেন, ‘গুরুদাসপুরে ইমামের এমন রাজকীয় বিদায় সংবর্ধনা এই প্রথম। যে মানুষটা গত ৩৫ বছর ধরে নামাজ-কালাম ও দ্বীনের জ্ঞান দিয়ে এসেছেন, তার বিদায় বেলা স্মরণীয় করে রাখতে আমরা চেষ্টা করেছি। প্রতিটি মসজিদে এমন আয়োজনের আহ্বান জানাই।’

মসজিদ কমিটির সভাপতি আমজাদ হোসেন বলেন, ‘ইমাম সমাজের নেতা। সেই ইমামদের প্রাপ্য সম্মান কোথাও তেমনভাবে দেওয়া হয় না। এলাকাবাসীরা উদ্যোগ নিয়ে যে আয়োজনের মধ্য দিয়ে ইমাম সাহেবকে বিদায় দিয়েছেন তা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এমন উদ্যোগ প্রতিটি এলাকার মুসল্লিরা গ্রহণ করা উচিত।’

আরিফুল/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়