ঢাকা     রোববার   ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  ভাদ্র ২৪ ১৪৩১

প্রশাসনের কড়া নজরদারি: নীলফামারীতে বন্ধ অবৈধভাবে বালু উত্তোলন 

ইয়াছিন মোহাম্মদ সিথুন, নীলফামারী  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৩৮, ১৩ জুলাই ২০২৪   আপডেট: ১০:৫৩, ১৩ জুলাই ২০২৪
প্রশাসনের কড়া নজরদারি: নীলফামারীতে বন্ধ অবৈধভাবে বালু উত্তোলন 

এক সময় তিস্তা নদীতে অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে পাথর ও বালু উত্তোলন ছিল যেন অনেকটা স্বাভাবিক কাজ। ফলে নদীর গতিপথও কিছুটা বদলে যায়। বর্ষাকালে কম বৃষ্টিতেও প্লাবিত হতো নিম্নাঞ্চল। শুধু তিস্তা নদী নয়, জেলার প্রায় প্রতিটি উপজেলায় অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে পুকুর খনন করতো। তবে প্রশাসনের কড়া নজরদারিতে এখন বদলে গেছে চিত্র। 

গত তিন থেকে সাড়ে তিন বছর আগে নীলফামারী জেলা প্রশাসন এসব অবৈধ ড্রেজার মেশিনের বিরুদ্ধে অভিযানে নামে। তবে গত তিন থেকে চার মাসে প্রশাসনের কড়া নজরদারির কারণে প্রায় পুরাপুরি বন্ধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু, পাথর উত্তোলন বা খনন কাজ। 

জেলার ছয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর সমন্বয়ে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। 

নীলফামারী জেলা প্রশাসক কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, জেলার কোথাও গত তিন মাসে ড্রেজার মেশিন তেমন ব্যবহার করা হয় নাই। এপ্রিল মাসে ৪টি অভিযানে ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এরমধ্যে কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ২টি অভিযানে ৫০ হাজার করে ১ লাখ, ডিমলা উপজেলায় একটি অভিযানে ৫০ হাজার ও ডোমার উপজেলায় একটি অভিযানে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। 

তিস্তা নদী সংলগ্ন ডালিয়া এলাকার বাসিন্দা মো. সোহাগ ইসলাম বলেন, ৪/৫ বছর আগে তিস্তা নদীতে ড্রেজার মেশিন দিয়ে পাথর ও বালু উত্তোলন করতো একটি অসাধু চক্র। নদীর এক জায়গা থেকে অনেক বড় বড় গর্ত করে পাথর উত্তোলন করতো। আর পাশে বালুর বিশাল স্তুপ করে রাখতো। বর্ষাকালে তিস্তা নদীতে পানি বেড়ে গেলে বালুর স্তুপের কারণে গতিপথ কিছুট সরে গিয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকতো। তবে প্রশাসনের কঠোর নজরদারিতে এখন আর তিস্তা নদীতে তেমন ড্রেজার মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলন হয় না। 

জলঢাকা উপজেলার খেড়কাটি এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, আমাদের এলাকায় আগে ড্রেজার মেশিন দিয়ে পুকুর খনন করতো। ড্রেজার মেশিন দিয়ে পুকুর খননে খরচ কম হতো। তবে এখন ড্রেজার মেশিন পাওয়ায় যায় না। লালমনিরহাটে আমি গত মাসে ড্রেজার মেশিন ভাড়া আনতে গেছিলাম। নীলফামারীর কথা শুনে কেউ আর মেশিন ভাড়া দেয় না। তারা বলে নীলফামারীতে ড্রেজার ভাড়া দেওয়া যাবে না। সমস্যা আছে। 

ড্রেজার মেশিন মালিক সোহেল ইসলাম বলেন, আমার ২টি ড্রেজার মেশিন ছিল। নিজেও খনন কাজ করতাম। ভাড়াও দিতাম। কিন্তু প্রশাসনের কঠোর নজরদারির কারণে এখন নিজে খনন করা তো দূরের কথা, ভাড়াও দেই না। মেশিনগুলো লালমনিরহাটে এক বালু ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে দিয়েছি।

এ বিষয়ে নীলফামারী জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ জানান, ড্রেজার মেশিনের বিরুদ্ধে জেলার ৬ উপজেলায় কঠোর নজরদারি রয়েছে। কেউ অবৈধ ড্রেজার মেশিনের ব্যবহার করলে সঙ্গে সঙ্গে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জেল, জরিমানা করা হয়। সেই সঙ্গে কেউ অবৈধভাবে নদীর বালু উত্তোলন করলে, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

/ইভা/ 


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়