ঢাকা     রোববার   ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  ভাদ্র ২৪ ১৪৩১

ধামরাইয়ে বিধিভেঙ্গে চেয়ারম্যান প্রার্থীর মিছিল-মোটরসাইকেল শোডাউন!

সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৫৪, ১৪ জুলাই ২০২৪  
ধামরাইয়ে বিধিভেঙ্গে চেয়ারম্যান প্রার্থীর মিছিল-মোটরসাইকেল শোডাউন!

ঢাকার ধামরাইয়ে সানোড়া ইউনিয়নের উপনির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. নুরুজ্জামান বিপ্লবের বিরুদ্ধে বিধি লঙ্ঘন করে একাধিক শোডাউন করার অভিযোগ উঠেছে।

এ ইউনিয়ন পরিষদের উপনির্বাচন আগামী ২৭ জুলাই। গত ১১ জুলাই প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়। এতে চশমা প্রতীক পান মো. নুরুজ্জামান বিপ্লব। এরপর থেকে একাধিকবার তিনি নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেন বলে অভিযোগ।

সানোড়া ইউনিয়নের মহিষাসী গ্রামের বাসিন্দা মো. নুরুজ্জামান বিপ্লব একজন শিক্ষক । ভোটে অংশ নিতে তিনি মধুডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের পদ ছাড়েন।

প্রতিপক্ষরা বলেন, তিনি কুশুরা আব্বাস আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক এনামুল হক আইয়ুবের অনুসারী।

নির্বাচনী আচরণ বিধি অনুযায়ী, ‘কোন প্রার্থী ট্রাক, বাস, মোটর সাইকেল, নৌযান, ট্রেন কিংবা অন্য কোনো যান্ত্রিক যানবাহন সহকারে মিছিল বা অন্য কোনো প্রকারের মিছিল বাহির করিতে পারিবে না কিংবা কোনোরূপ শোডাউন করিতে পারিবে না।’

তবে নির্বাচনী প্রচারের শুরুর দিনেই গত ১২ জুলাই প্রতীকের চিহ্নসহ ব্যানার নিয়ে কালামপুর-কাওয়ালীপাড়া সড়কে মিছিল করেন এ প্রার্থীর সমর্থকরা। এ সময় নেতাকর্মীরা তার পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দেয়। ১৩ জুলাই বিপ্লবের চশমা প্রতীকের পক্ষে মোটর সাইকেল শোডাউন করা হয়। হেলমেট ছাড়াই প্রায় অর্ধ শতাধিক মোটর সাইকেল এই শোডাউনে যোগ দেয়। শোডাউন থেকে এই প্রার্থীর পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়।

আচরণবিধি অনুযায়ী, ‘সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও কোনো সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারী নির্বাচন পূর্ব সময়ে নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণা বা নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।’

অভিযোগ রয়েছে, ম্যানেজিং কমিটিতে থাকায় নিয়মিত কুশুরা আব্বাস আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রচারণায় রাখেন তিনি। গত ১২ জুলাই ইউনিয়নের বাসনা গ্রামে একটি নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন এ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. হান্নান হোসেন। এ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুর রহমান বলেন, ‘ওই ইউনিয়নের তো ওরা, তাই হয়তো গিয়ে থাকতে পারে।’

বিধি লঙ্ঘনের একাধিক অভিযোগের বিষয়ে প্রার্থী মো. নুরুজ্জামান বিপ্লব বলেন, ‘কেউ মিছিল করতে পারে। তবে তা আমার জানা নেই। আমার কনসার্ন নিয়ে করা হলে আমি নিজে জানতাম, আমি বলতাম। অনেকেই আমাকে বলেছে, আমি ওই সময় রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে ছিলাম। আর শিক্ষক সঙ্গে ছিল বলতে, হান্নান মাস্টার খন্ডকালীন শিক্ষক। তিনি সরকারি বেতনভুক্ত নন।’

ধামরাই উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও সানোড়া ইউনিয়ন পরিষদের উপনির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মো. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘সকালে তথ্যটি পেয়েছি। তাকে বলেছি। এসি ল্যান্ড মহোদয় আজ মাঠে গেছেন। আমরাও সজাগ রয়েছি। বিধি লঙ্ঘন হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সম্প্রতি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিতে সানোড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খালেদ মাসুদ খান লাল্টু পদত্যাগ করেন। এতে সানোড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদ ফাঁকা হয়।

প্রসঙ্গত, গত ২৭ জুন এ ইউনিয়ন পরিষদের উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। এ অনুযায়ী মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিন ছিল ৪ জুলাই। মনোনয়ন যাচাই-বাছাই হয় ৫ জুলাই। ১১ জুলাই প্রতীক বরাদ্দ করা হয়। আগামী ২৭ জুলাই ভোটগ্রহণ।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, দলীয় প্রতীকহীন এ উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাত প্রার্থী। তারা হলেন- মো. নুরুজ্জামান, মো. জামিল হোসেন, মো. আল মামুন, আল মামুন আজাদ, মো. মিজানুর রহমান, মো. সালেহ ইসলাম ও মো. আব্দুল মালেক।

সাব্বির/টিপু


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়