সহিংসতায় অর্থের যোগানদাতাদেরও ধরা হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
রংপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন
কোটা আন্দোলনের মধ্যে সরকারি সম্পদ ধ্বংসে অর্থের যোগানদাতাদেরও চিহ্নিত করে ধরে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন। তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের নামে সরকারি সম্পদ ধ্বংসে সহিংসতাকারী, অর্থের যোগানদাতা ও সহযোগিতাকারীদের চিহ্নিত করাসহ প্রত্যেককে আইনের আওতায় এনে কঠোর বিচারের মুখোমুখি করা হবে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, সরকারি স্থাপনায় ধ্বংসযজ্ঞ চালানো দাবি আদায়ের আন্দোলন হতে পারে না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নামে যারা এ সব করেছে, তারা ছাত্র হতে পারে না।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) দুপুরে রংপুরে দুর্বৃত্তদের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনা পরিদর্শন শেষে তিনি এ সব কথা বলেন।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, ছাত্রদের বিপদে ফেলতে একটি মহল সুযোগ নিয়েছিল। ছাত্ররাও সেই ভুলে পা দেয়।
তিনি আরও বলেন, ‘১৮ বছর বয়সের নিচে ছেলেদের আন্দোলনের নামে মাঠে নামিয়ে ফায়দা লোটার চেষ্টা করে বিএনপি ও জামায়াত। ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে তারা একত্রে হয়ে এ সব তাণ্ডব চালিয়েছে। ভিডিও ক্লিপ দেখে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’ নিজ নিজ জায়গা থেকে দুষ্কৃতকারীদের ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের অফিস ভাঙচুর প্রসঙ্গে আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘আমরা বীরের জাতি। ভাবতে কষ্ট হয় রংপুরে অল্পসংখ্যক সন্ত্রাসীদের হাত থেকে দলীয় পার্টি অফিস রক্ষা করতে পারল না স্থানীয় আওয়ামী লীগ।’ এ সময় রংপুর জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের অফিস ভাঙচুর থেকে রক্ষা করতে না পারায় স্থানীয় নেতাকর্মীদের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সহিংসতাকারীরা শুধু রংপুরের থানা নয়, ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানা, মোহাম্মদপুর থানা, উত্তরা থানায় আক্রমণ চালিয়েছে। তাদের উদ্দেশ্যে ছিল দেশকে ধ্বংস করা। তবুও পুলিশ মনোবল হারায়নি। একটানা ২০ ঘণ্টা ধরে তারা ডিউটি করেছেন।’ এ সময় চলমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
দুপর ১২টায় হেলিকপ্টারযোগে ঢাকা থেকে রংপুরে আসেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। পরে সড়ক পথে ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শনে যান। প্রথমে নগরীর তাজহাট থানা পরিদর্শন করেন। পরে নবাবগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ি, ডিবি কার্যালয়, বেরোবির ভিসির বাসভবন, মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়, পরিবার পরিকল্পনা অফিস, মুক্তিযুদ্ধ সংসদ পরিদর্শন করেন। এ সময় পুলিশের মহাপরিদর্শক আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতনরা তার সঙ্গে ছিলেন।
শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশের আইজিপি প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা সভায় যোগ দেন।
মতবিনিময় সভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য নাছিমা জামান ববি, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান।
মতবিনিময়ের আগে গত ১৬ জুলাই থেকে রংপুরে যে সহিংসতা ঘটে, এর একটি ভিডিওচিত্র দেখানো হয়। সেটি পরিচালনা করেন রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান।
আমিরুল/বকুল