ঢাকা     রোববার   ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  ভাদ্র ২৪ ১৪৩১

মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো কোটাই এখন আর নেই: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

বগুড়া প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৪২, ২৫ জুলাই ২০২৪   আপডেট: ২২:০৭, ২৫ জুলাই ২০২৪
মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো কোটাই এখন আর নেই: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

কোটা নিয়ে সর্বোচ্চ আদালতের দেওয়া রায়ের কথা উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো কোটাই এখন আর নেই। ৯৮ শতাংশই মেধাবীদের।’

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) বিকেলে বগুড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক মতবিনিময় সভা শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। 

এর আগে মন্ত্রী কোটা সংস্কার আন্দোলনে বগুড়ায় ঘটে যাওয়া সহিংস ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত সরকারি স্থাপনা এবং আওয়ামী লীগের অফিস পরিদর্শন করেন।

প্রেস ব্রিফিংয়ের সময় মন্ত্রী বলেন, ‘রায়ে ৯৩ শতাংশ মেধা, ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা, ১ শতাংশ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ করা হয়েছে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হলো আমরা যারা মুক্তিযোদ্ধা, আমাদের ছেলে-মেয়ের বয়স কিন্তু ৩০ বছর পার হয়ে গেছে। কাজেই মুক্তিযোদ্ধা কোটা কিন্তু আর নেই। মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো কোটাই এখন আর নেই। তাই ৯৮ শতাংশই কিন্তু এখন মেধার।’

তিনি বলেন, ‘রায় ঘোষণার পর আমরা মনে করেছিলাম কোটা আন্দোলনকারীরা বলবে আমরা সন্তুষ্ট, আমরা আন্দোলন ফিরিয়ে নিয়ে গেলাম। রায়ের পর তারা ধন্যবাদ দেবে মহামান্য বিচারপতিকে, সরকারকে। কিন্তু আপনারা দেখেছেন ইতোমধ্যে অনেক জল গড়িয়েছে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘যারা বাংলাদেশ রাষ্ট্র চায়নি, যারা জঙ্গি উত্থান ঘটিয়েছিল, যারা একাত্তরে এ দেশ চায়নি সেই দলগুলো, যারা সব সময় বাংলাদেশকে একটি নৈরাজ্য দেশে পরিণত করতে চেয়েছিলো, সবগুলো দল একত্রে হয়ে এই কোটা আন্দোলনে ভর করে ধ্বংসলীলা চালিয়েছে। বগুড়াও বাদ যায়নি। বগুড়াতেও আমরা দেখলাম। মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভাঙা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধারা তো নামেনি, তারা কিছু বলেনি। এরপরেও তাদের কমপ্লেক্স ধ্বংসের চেষ্টা করা হয়েছে। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালির ম্যুরালের ওপর তাদের রাগ ক্ষোভ। যারা এই দেশ চায়নি, যারা স্বাধীনতা চায়নি তাদের এই রাগ ক্ষোভ থাকার কথা আমরা সেটাই লক্ষ্য করেছি।’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ অফিস, জাসদ অফিস, থানা ভবন, ভূমি অফিস, জাজেস কমপ্লেক্সে ভাংচুর দেখলাম। নরসিংদীতে আরেক কাণ্ড দেখলাম। যেখানে আমরা জঙ্গিদের ধরে রেখেছিলাম। যারা জঙ্গি উত্থান ঘটাতে চেয়েছিল, কারাগার ভেঙে সেই জঙ্গিদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ সময় বলেন, ‘আমি আপনাদের মাধ্যমে ছাত্র ভাইদের জানাতে চাই, যেহেতু আপনাদের দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। আপনাদের বাকী দাবিগুলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন তিনি পর্যায়ক্রমে এগুলোর বিবেচনা করবেন, ব্যবস্থা নেবেন। আপনারা জানেন, ইতোমধ্যে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে। কমিশন এই সমস্ত ধ্বংসলীলা ঘটছে এগুলো তদন্ত করবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সারাদেশে চালানো ধ্বংসলীলায় আমাদের তিনজন পুলিশ এবং একজন আনসার শাহাদৎবরণ করেছেন। শুধু যে রংপুরে একজন ছাত্র শাহাদৎবরণ করেছেন তাই নয়, সারাদেশে আমাদের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী শাহাদৎবরণ করেছেন। ছাত্রলীগ নেতাকর্মী শাহাদৎবরণ করেছেন। যেখানেই আওয়ামী লীগ, যেখানেই ছাত্রলীগ সেখানেই তারা অ্যাটাক করেছেন। এটাই ছিলো তাদের পরিকল্পনা।’

কারফিউ এবং সেনাবাহিনীর মাঠে থাকার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘যখন দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, থানা, কারাগার ভাঙচুর এবং পোড়ানো হচ্ছিলো, তখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, আনসার এদের সহযোগিতা করার জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। আমরা সান্ধ্য আইন জারি করেছি। দেশ ধীরে ধীরে নর্মালাইজ হচ্ছে। শিগগিরই আমরা নরমাল লাইফে ফিরে যেতে পারব। আর সেজন্য আপনাদের সহযোগিতা চাই।’

এনাম/সনি


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়